রবিউল ইসলামকে ঘিরে আশা ছিল বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের। বলা হয়েছিল, প্যারিস অলিম্পিক গেমসে পদক না জিতলেও রবিউল সম্মানজনক স্থানে থাকবে। যা থেকে দেশের শুটাররা উজ্জীবিত হবেন। না, সেই আশার গুড়ে বালি। শুরুতেই থেমে গেল তার যাত্রা। গতকাল প্যারিসের সাতেউরো শুটিং কমপ্লেক্সে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৪৯ জন শুটার বাছাইপর্বে অংশ নেন। সেখানে ৪৩তম অবস্থানে থেকে বিদায় নেন রবিউল। পদক জিততে আর তাকে গুলি ছুড়তে হবে না। বাছাইপর্বেই অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন।
বাংলাদেশের এ শুটার বাছাইপর্ব পেরোতে পারবেন না, তা নিয়ে অনেকে নিশ্চিত ছিলেন। কেননা এ পর্বে শুধু সেরা আট শুটার ফাইনাল রাউন্ডে খেলবেন। দেশে যত কৃতিত্বের পরিচয় দেন না কেন, ৪৯ জনের মধ্যে শীর্ষ আটে জায়গা করার মতো রবিউলের যোগ্যতা ছিল না। তবু ভালো, অন্তত শেষ স্থান দখল করেননি। ছয়জনের আগে থাকাটাও বাংলাদেশর প্রেক্ষাপটে কম গৌরবের নয়।
বাছাইপর্বে শুটাররা ৬০ শট নেন। প্রতি রাউন্ডে ১০টি করে শট। প্রতি শটে সর্বোচ্চ স্কোর ১০.৯। ৬০ শটে সর্বমোট স্কোর ৬৫৪। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন চীনের শেন লিয়াও ৬৩১.৭ স্কোর গড়ে। দেশে রবিউলের সেরা স্কোর ৬২৮ হলেও গতকাল করেছেন ৬২৪ প্লাস। ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে ৫০ জনের মধ্যে ২৫তম হয়েছিলেন আবদুল্লাহ হেল বাকী। অলিম্পিকে বাংলাদেশের শুটিংয়ে যা সর্বোচ্চ স্কোর।
অলিম্পিক শুটিংয়ে বাংলাদেশের বেহাল দশা নতুন নয়। প্রতিবারই একই দৃশ্যের দেখা মেলে। এ থেকে কীভাবে বের হওয়া যায় তা কি কখনো ফেডারেশন খতিয়ে দেখেছে? বিদেশি কোচ আনা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু গুলি ছুড়তে যে কৌশলের প্রয়োজন পড়ে তা কেন ঠিক করতে পারেন না শুটাররা। শুটিংয়েও টেকনিক রয়েছে। কিন্তু এখানে চোখের দৃষ্টিটাই মুখ্য। কেউ কেউ তিরস্কারের সুরে বলেন, অলিম্পিকে বাংলাদেশের শুটাররা বোধ হয় চোখ বন্ধ করেই গুলি ছোড়েন। অনেকটা যদি লাইগা যায়ের মতো?
অলিম্পিকের মতো এশিয়ান গেমসেও শুটিংয়ে বাংলাদেশ কখনো পদক জিততে পারেনি। অথচ ফেডারেশন কর্মকর্তাদের মুখে শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন। ১৯৯০ ও ২০০২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতলেও এর পর শুধু ব্যর্থতা।