পাকিস্তান সফরে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি ম্যাচের জন্য ১৬ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। ডান হাতি পেসার তাসকিন আহমেদ সাদা পোশাক ও লাল বলে খেলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। সেজন্য তাসকিনকে নিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি। ডান হাতি পেসার তাসকিনকে স্কোয়াডে রাখার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। টেস্ট সিরিজ খেলতে গতকাল পাকিস্তানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। সিরিজ নিয়ে কোনো কথা বলেননি টাইগার অধিনায়ক। সফর নিয়ে কথা বলেন তাসকিন ও প্রধান নির্বাচক লিপু। পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাসকিন, ‘দেশকে যেন বড় (টেস্ট) সংস্করণে ম্যাচ জেতাতে পারি এটাই। আল্লাহ ভরসা। ইনশাল্লাহ আপনারাও দোয়া করেন। সবকিছু পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের পারফরম্যান্সও যেন ভালো হয়। সবাইকে যেন একটু খুশি করতে পারি, ইনশাল্লাহ দোয়া করবেন।’ পাকিস্তান সফরে নাজমুলরা দুটি টেস্টের একটি খেলবেন রাওয়ালপিন্ডি ২১-২৫ আগস্ট এবং দ্বিতীয় টেস্ট করাচি ৩০ আগস্ট-৩ সেপ্টেম্বর।
এবার নিয়ে পাকিস্তানে চতুর্থবার টেস্ট সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে অবশ্য পঞ্চমবার যাচ্ছে। ২০০১ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছিল পাকিস্তানের মুলতানে। এরপর ২০০৩ সালে তিন টেস্ট, ২০১১-১২ মৌসুমে দুই টেস্ট এবং ২০১৯-২০ মৌসুমে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজ খেলেছে পাকিস্তানে। এবারই প্রথম স্বপ্ন দেখছে টাইগাররা। যদিও ব্যাটাররা খুব একটা ফর্মে নেই। যতটা রয়েছেন বোলাররা। তাসকিনসহ পাঁচ পেসার রয়েছেন স্কোয়াডে। বাঁ হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। কিন্তু পাকিস্তানের উইকেট সাধারণত ফ্ল্যাট হয়। সেখানে পেসারদের উইকেট পেতে ঘাম ঝরাতে হয়। গতির ঝড় তুলতে হয়। নাহিদ রানা নিয়মিত ১৪৫-১৪৬ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেন। তাসকিন, হাসান মাহমুদরা ১৩৮-১৪০ গতিতে বোলিং করেন। খালেদ ও শরিফুল মূলত সুইং বোলার। তাসকিন অবশ্য রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্ট খেলবেন না। একটি চার দিনের ম্যাচ খেলে নিজেকে প্রস্তুত করে নেবেন। স্পিনার সাকিব, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। ব্যাটিংয়ে নেতৃত্ব দেবেন নাজমুল শান্ত, লিটন দাস, সাদমান ইসলাম, মাহামুদুল হাসান জয়, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক জয় ও সাকিব।
এ বছর আটটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান ছাড়া ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিবকে সব টেস্টে খেলতে দেখা যাবে এবং সব সিরিজের প্রস্তুতিতে পাওয়া যাবে বলেন প্রধান নির্বাচক, ‘আমাদের সামনে যে আটটি টেস্ট আছে, ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিয়ে শেষ হবে। সবকটিতে সাকিব খেলার জন্য থাকবেন এবং তিনি নিয়মিতভাবে অনুশীলন সেশনে আসবেন। প্রত্যেক ক্রিকেটার ও সবারই নিরাপত্তার বিষয় থাকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে সেটা তো দেশকেই নিশ্চিত করতে হবে।’ সাকিব কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলবেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন বাকি সিরিজ তিনটি খেলবেন কি না। কিন্তু আওয়ামী সরকারের পট পরিবর্তনের পর সাকিবের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যায়। এরপর অবস্থান পাল্টে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। টি-২০ বিশ্বকাপের পর বিভিন্ন টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলায় ব্যস্ত থাকায় সাকিব গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা সিরিজে টেস্ট খেলেননি। সাকিবকে নেওয়া হয়েছে মেধার জন্য।
এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক, ‘তাকে দলে নেওয়া হয়েছে খেলার মেধার ভিত্তিতে। তার মেধার জায়গাটাকেই আমরা সমুন্নত রেখেছি। প্রত্যেক ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই এটা হয়। সেটা বিবেচনা করেই তিনি দলে আছেন। আগামীতেও যদি আমরা নির্বাচক কমিটিতে থাকি, মেধাকেই গুরুত্ব¡ দেব।’ প্রধান নির্বাচকের বক্তব্যে পরিষ্কার, ৩৭ বছর বয়সি অলরাউন্ডারকে দলে নেওয়া হচ্ছে মেধাবী বলে। টেস্ট সিরিজ খেলতে গতকাল ঢাকা ছেড়েছেন নাজমুলরা। অবশ্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে পাকিস্তানে রয়েছেন মুশফিক, মুমিনুল, জয়রা। সেখানে দুটি চার দিনের ম্যাচ খেলে নিজেদের প্রস্তুত করে নেবেন মুশফিকরা।