ইসলামাবাদে চার দিনের ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে পাকিস্তান ‘এ’। টাইগার ‘এ’ দলের পক্ষে খেলছেন মহামুদুল হাসান জয়, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক। তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলবেন। আবার স্বাগতিকদেরও সাতজন খেলছেন। যাদের দুজন পেসার নাসিম শাহ ও মীর হামজা আবার রয়েছেন রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট স্কোয়াডে। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে নাজমুল হোসেন শান্তদের বিধ্বস্ত করতে স্বাগতিকরা নিয়েছে ছয়জন পেসার। নাসিম ও হামজার পাশাপাশি রয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি, খুররম শাহজাদ, মোহাম্মদ আলি ও আবরার আহমেদ। সবাই গতিশীল ও সুইং বোলার। এদের গতি, বাউন্স ও সুইংয়ের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জেই পড়তে হবে মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিক, মুমিনুল, সাকিব আল হাসান, সাদমান ইসলামদের। ২১-২৫ আগস্ট পাকিস্তানি পেস অ্যাটাক সামলানোই এখন নাজমুল বাহিনীর মূল সমস্যা।
রাওয়ালপিন্ডিতে বরাবরই রান হয়। সর্বোচ্চ স্কোর ৬৫৭, ইংল্যান্ডের, ২০২২ সালে। সেঞ্চুরি ছিল ৪টি। আশ্চর্য হলেও সত্যি, একই টেস্টে পাকিস্তান করেছিল ৬০০ রান। সেঞ্চুরি ছিল ৩টি। সাত সেঞ্চুরির টেস্ট জিতেছিল ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ যে পাঁচবার পাকিস্তানে টেস্ট খেলেছে, তার একটি ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে। ২০২০ সালের টেস্ট টাইগাররা হেরেছিল ইনিংস ৪৪ রানে। পাকিস্তানের মাটিতে ওটাই টাইগারদের সর্বশেষ টেস্ট। সেবার অধিনায়ক ছিলেন মুমিনুল। এখন নাজমুল শান্ত। তবে স্কোয়াডে আছেন মুমিনুল। চার বছর আগের একাদশের পাঁচজন আছে এবার। তারা হলেন- মুমিনুল, শান্ত, সাকিব, মুশফিক ও তাইজুল। বাকি সবাই নতুন। সেবার টাইগারদের বিপক্ষে পাকিস্তানের বোলিং বিভাগের দুই স্ট্রাইক পেসার শাহীন আফ্রিদি ও নাসিম দুজনেই ছিলেন। নাসিম ৫টি এবং আফ্রিদি ৭ উইকেট শিকার করেছিলেন। নাসিম তো দ্বিতীয় ইনিংসে হ্যাটট্রিকও করেছিলেন। গতি, ইয়র্কারে ৪০.৪ ওভারে নাজমুল শান্ত, ৪০.৫ ওভারে তাইজুল এবং ৪০.৫ ওভারে আউট করে ম্যাচ থেকে বাংলাদেশকে ছিটকে দেয়। ৩ উইকেটে ১২৪ রান থেকে ৫ উইকেটে ১২৪। এর পর অলআউট ১৬৮ রানে। প্রথম ইনিংসের স্কোর ছিল ২৩৩। পাকিস্তান করেছিল ৪৪৫ রান। তিন টাইগার পেসার নিয়েছিল ৭ উইকেট। এবার ওরা নেই। সবাই নতুন। তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, সৈয়দ খালেদরা আছেন এবার।
পাঁচ টাইগার পেসারও প্রস্তুত। গতির ঝড় তুলতে ওরাও তৈরি। নাহিদ নিয়মিত ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল করেন। তাসকিন, হাসানরা ১৩৮-১৪০, শরীফুল খালেদ ১৩৫-১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করেন। পাকিস্তানের নাসিম ১৪৫-১৫০, আফ্রিদি ১৪০-১৪৫, হামজা, খুররমরা ১৪০ কিলোতে বল করেন। ওদের মূল অস্ত্র রিভার্স সুইং। এ ছাড়া গতি ও বাউন্সও মারাত্মক। এসব সামলাতে হবে টাইগার ব্যাটারদের। বাংলাদেশের ব্যাটাররা আবার ভীষণ দুর্বল গতি, বাউন্স ও সুইংয়ের বিপক্ষে।
পাকিস্তানের স্বাগতিক ভেন্যু রাওয়ালপিন্ডি। যে ১৩টি টেস্ট খেলেছে, জয় কিন্তু মাত্র ৫। হার ৪ এবং ড্র চার। ব্যাটাররা রান করেন ফ্ল্যাট উইকেট বলে। কিন্তু গতি ও বাউন্স বেশি। পেসারদের বিপক্ষে খেলে ড্র কিংবা জয় অসম্ভব নয়। কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে হবে নাজমুল, সাকিব, জয়, মুশফিক, মুমিনুলদের। তাহলেই অসম্ভবকে জয় করতে পারবেন নাজমুলরা। যেমনটা ২০১৩ সালে খুলনায় হারের শঙ্কায়, থেকেও ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ড্রয়ের কারিগর ছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। উদ্বোধনী জুটিতে ৩ শতাধিক রান করেছিলেন দুই ওপেনার। তামিম ডাবল সেঞ্চুরি ও ইমরুল সেঞ্চুরি করেছিলেন। রাওয়ালপিন্ডিতে তেমন একটা জুটি গড়তে হবে পাকিস্তানি পেস অ্যাটাকের বিপক্ষে। তাহলেই স্বপ্ন পূরণ হবে তাসকিনদের। কেননা, টাইগাররা দেশ ছেড়েছে টেস্ট জয়ের স্বপ্ন নিয়ে।