আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্রীড়াঙ্গনে টালমাটাল অবস্থা। অধিকাংশ ফেডারেশনে শীর্ষ পদে দলীয় কর্মকর্তারা বসে আছেন। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। হুট করে রদবদল করাও সম্ভব নয়। এমনিতেই কঠিন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁঁইয়া। আসিফই বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক হয়েছেন। বয়স কম হলেও ক্রীড়ামোদিদের আস্থা- তিনিই পারবেন নিয়মতান্ত্রিক ও দুর্নীতিমুক্ত ক্রীড়াঙ্গন প্রতিষ্ঠা করতে। দীর্ঘদিনে এ অঙ্গনে যে জঞ্জালের পাহাড় তৈরি হয়েছে তা পরিষ্কার করতে একটু তো সময় নেবে। অনেকেই তো দায়িত্ব পালন করেছেন। উন্নয়নের বদলে খেলাধুলার অবনতিই ঘটেছে। তরুণ আসিফ ক্রীড়ঙ্গনে কী উপহার দেবেন তা সময়ই বলে দেবে। ক্রীড়া উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন বেশিদিন হয়নি। অথচ এর মধ্যে তার কাছে কত যে অভিযোগ জমা হয়েছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। প্রতিদিনই এই ফেডারেশন, ওই ফেডারেশন ভাঙতে হবে বা ওই লোকের পদত্যাগ চাই, তা নিয়ে মিছিল-মানববন্ধন হচ্ছে। কিন্তু আসিফ চলছেন খুবই সতর্ক হয়ে। আগে যাই হোক, এখন যা করতে হবে তা তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, তিনি সে পথেই হাঁটছেন। এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যাতে কেউ বলতে পারেন একদলকে বাদ দিয়ে আরেক দলের লোকেরা ফেডারেশনে বসল, তাহলে আর লাভ হলো কী?
দায়িত্ব নিয়ে প্রথমদিন দপ্তরে বসেই ক্রীড়া উপদেষ্টা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। গতকাল নিজেই সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। আসিফ ঘোষণা দিয়েছেন, স্পোর্টস ইনস্টিটিউট তৈরির। ক্রীড়াবিদদের মানোন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করতে যা খুবই জরুরি। তিনি বলেন, খেলোয়াড়দের বিজ্ঞানসম্মত সুযোগসুবিধিা ক্রীড়াক্ষেত্রে সামগ্রিক সফলতা অর্জন, ক্রীড়াবিদদের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্রীড়াকৌশল ও নেতৃত্ব গুণের উন্নয়নের লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজেই স্বীকার করেছেন, সামনে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ নারী টি-২০ বিশ্বকাপ। অক্টোবরের প্রথমদিকেই এ আসর মাঠে গড়ানোর কথা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা বাংলাদেশে হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আইসিসি ইতোমধ্যে নতুন আয়োজকের সন্ধানে নেমেছে। আসিফ বলেন, এটা এখন শুধু ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সীমাদ্ধ নেই। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চলে গেছে। আমরা সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, শুধু ফেডারেশন রদবদল নয়। আমরা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচার করব। তা হবে তদন্তের মাধ্যমে। আমি কথা দিচ্ছি এর বাইরে কাউকে অযথা হয়রানি করা হবে না।