নাজমুল বাহিনী রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জিতেছে দুর্দান্ত টিম পারফরম্যান্সে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই পাকিস্তানকে দরমুশ করে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে। এ জয়কে অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সোনালি কালিতে লেখা জ্বলজ্বলে একটি দিন। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা বলছেন, বাংলাদেশের কাছে হার দেশটির টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের কালো দিন। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা যাই বলুন, নাজমুল বাহিনীর পারফরম্যান্স ছিল শতভাগের ওপর আত্মবিশ্বাসে ভরা। বিসিবির নতুন পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় আত্মবিশ্বাসী জয় বলেছেন। তিনি বলেন, ‘অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানকে চেপে ধরে যেভাবে ক্রিকেট খেলে জিতেছে, অসাধারণ। ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে অনেক।’
টাইগারদের ধসিয়ে দিতে রাওয়ালপিন্ডির উইকেটে ঘাস রাখা হয়েছিল। পাকিস্তান খেলায় চার পেসার এবং বাংলাদেশ তিন পেসার। শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও নাহিদ রানা একেবারেই নতুন। তাকে খেলানো হয় গতির জন্য। ১৪৯.৬ গতিতে বোলিং করে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন তিনি। নাহিদের বলে গতি দেখে মুগ্ধ নাজমুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘নাহিদ রানা একেবারে অনভিজ্ঞ পেসার। তার শেখার এখনো অনেক বাকি। সে প্রতিনিয়ত শিখবে। তবে আমি মুগ্ধ তার গতি দেখে। টেস্টে দুই দলের পেসারদের মধ্যে নাহিদ সবচেয়ে জোরে বল করেছেন। আমার ভালো লেগেছে এটা।’ ৩০ আগস্ট-৩ সেপ্টেম্বর শুরু দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে কি থাকবেন দুই ইনিংস মিলিয়ে ১ উইকেট নেওয়া নাহিদ? তাসকিনের ফেরা নিয়ে নাজমুল আবেদীন বলেন, ‘তাসকিন নিঃসন্দেহে অসাধারণ একজন ফাস্ট বোলার। সে অভিজ্ঞ। পরের টেস্টের একাদশ কেমন হবে, সেটা নির্ভর করবে উইকেট কেমন হবে তার ওপর ভিত্তি করে।’
ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো জয়ে মুশফিকুর রহিম খেলেন ১৯১ রানের নান্দনিক ইনিংস। ২২ চার ও এক ছক্কায় সাজানো ৩৪১ বলের ইনিংসটি দেখে মুশফিকের গুরু নাজমুল বলেন, ‘এ বয়সেও মুশফিকের রানের ক্ষুধা দেখে আমি মুগ্ধ। রানের জন্য এত ক্ষুধা, ভাবাই যায় না। এ জন্য তার পরিশ্রমকে সম্মান জানাতে হবে। এখনো কঠোর পরিশ্রম করে মুশফিক। এটাই তার সবচেয়ে বড় গুণ।’ সাকিব আল হাসান খেলেছেন খুনের মামলা নিয়ে। এমন মানসিক চাপ নিয়ে যে কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে খেলা কঠিন। অথচ মাঠের সাকিবের মাঝে সেই চাপ দেখা যায়নি। বরং চাপমুক্ত আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলেছেন সাকিব। ফাহিম বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে সাকিব তত ভালো করেনি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে বোালিংয়ে সাকিবকে অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। আমার মনে হয়েছে ছন্দে থাকা পুরনো সাকিবকে দেখছি। দারুণ টার্ন, আরমার- সবই ছিল দুর্দান্ত। এমন সাকিবকেই তো আমরা চাই।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪ টেস্ট খেলে অবশেষে জিতেছে বাংলাদেশ। সেটা আবার পাকিস্তানের মাটিতে রাওয়ালপিন্ডিতে। ১০ উইকেটের জয়টি টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়।