দেশে ক্রীড়া ফেডারেশনের সংখ্যা ৫৫টি। ক্রিকেট এবং ফুটবল ছাড়া বাকি কয়েকটি ফেডারেশনে খেলা হয় প্রায় সারা বছর। যদিও ক্রিকেট ছাড়া বাকি ফেডারেশনগুলোতে খেলা হয় না গত এক মাস। জাতীয় ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছে। আগামী মাসে ফুটবল লিগ মাঠে গড়ানোর কথা। কিন্তু দুটি ক্লাব নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। অন্য ফেডারেশনগুলোতে খেলা নেই। শুধু ফুটবল, ক্রিকেট নয় অন্য ফেডারেশনগুলোর অসঙ্গতি নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ঘণ্টা দেড়েকের মতবিনিময় সভায় ক্রীড়া সাংবাদিকদের মতামত, পর্যবেক্ষণ ও অভিযোগ শুনে সবার শেষে বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আপনাদের গঠনমূলক মন্তব্য আমরা পর্যালোচনা করব। ক্রীড়াঙ্গনে আপনারা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছেন। আপনাদের পর্যবেক্ষণকে আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি। এ জন্য সার্চ কমিটিতে দুজন এবং জেলা পর্যায়েও ক্রীড়া সাংবাদিক প্রতিনিধি রেখেছি। সার্চ কমিটি ফেডারেশনগুলো পর্যালোচনা করে আমাদের প্রতিবেদন দেবে। আমরা এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ শুধু তাই নয়, ক্রীড়া উপদেষ্টা ক্রীড়া সাংবাদিকদের কাছে আরও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতিপূর্বে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন। আশা করি সামনেও করবেন। শুধু খেলোয়াড় কী করলেন, কী খেলেন এর বাইরেও খেলার অনিয়ম-অসঙ্গতি অনুসন্ধান প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে আনবেন। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
জেলা-বিভাগের কমিটিগুলোতে সাংবাদিকদের সদস্য হিসেবে রাখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। গতকালের মতবিনিময় সভায় ক্রীড়াবিদরা বিষয়টির সমালোচনা না করে পরামর্শ দিয়েছেন, ক্রীড়া সাংবাদিকদের শুধু ক্রীড়া সাংবাদিকতাতেই রাখতে। যুক্তি দেখিয়েছেন, এতে স্বার্থের সংঘাত তৈরি হবে। আসিফ মাহমুদ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শ্রম মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে রয়েছেন। সাংবাদিকদের অনেকেই সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামোর আওতায় নেই। বিষয়টি তুলে ধরেছেন। অনুষ্ঠান শেষে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে দুই সাংবাদিক অনুরোধ করেন, কোনো রকম প্রটোকল ছাড়াই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও কমলাপুর স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করতে। তখন তিনি উত্তর দেন, ‘আমি বাইরের কোনো মানুষ নই। এ সমাজেরই একজন। স্টেডিয়াম এলাকায় এর আগেও গিয়েছি। এখনো আসছি। আমি খবর না দিয়ে আকস্মিক পরিদর্শন পছন্দ করি। এতে প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায়।’
গতকালের মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা প্রায় ঘণ্টাখানেক দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেন। এ ছাড়াও যে কোনো মতামত ও পরামর্শ ইমেইলে পাঠানোর অনুরোধ করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। বাংলাদেশ নারী ক্রীড়া ফেডারেশনের দুর্নীতি ও স্টেডিয়ামগুলো প্রকৃত ভাড়া এক দিনের মধ্যে তুলে ধরার জন্য ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা।