নেপালের বিপক্ষে জাতীয় দলের জয় পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ বাংলাদেশের যুবারা নেপালের মাটিতে নেপালকে বিধ্বস্ত করে অনূর্ধŸ-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছে। ৪-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকদের। ফুটবলে এমন সাফল্য যুবারা প্রশংসায় ভাসছে। দেশব্যাপী মিরাজুলদেরই জয়গান। এমনই অবস্থায় জাতীয় দল গতকাল ফিফা স্বীকৃত প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভুটানের বিপক্ষে। সন্দেহ নেই ছোটরা শিরোপা জেতায় বড়দের চাপটা বেড়ে গেছে। তপু বর্মণরা চাপ নিয়েই খেলেছেন এ নিয়ে সংশয় নেই। কেননা ছোটরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ভুটানের কাছে যদি হেরে যায় তাহলে সমালোচনার ঝড় উঠবে। যাক চাপ নিয়ে খেললেও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লাল-সবুজের দল। প্রথমার্ধে ৭ মিনিটে শেখ মোরসালিনের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
মাঠে বা পরিসংখ্যানে বাংলাদেশই ফেবারিট। ১৪ ম্যাচে ১১ জয়, ১ হার ও দুটি ড্র করেছে ভুটানের বিপক্ষে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ১-৩ গোলে হেরে যায় ভুটানের কাছে। থিম্পুর মাঠেই লজ্জায় ডুবেছিল লাল-সবুজের দল। এ মাঠে কী ঘটে খেলা শুরুর আগে চিন্তায় ছিলেন রাকিবরা। হার দিয়ে শুরু হলে তাহলে তো রক্ষা নেই। নানা চাপ নিয়েই খেলতে হয়েছে। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বলেছেন, ফল যায় হোক আমি ছেলেদের পারফরম্যান্স যাচায় করতে চাই। তা ছাড়া জাতীয় দল অনেক দিন ধরে মাঠের বাইরে।
কোচের চিন্তা যায় হোক না কেন। ফুটবলারদের ভাবনায় ছিল শুধু জয়। গতকাল ও রবিবার দুটো ম্যাচই জিততে হবে। হারলে সমালোচনার ধাক্কা সামাল দেওয়াটা মুশকিল হয়ে পড়বে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভুটানিরা দুই ধাপ এগিয়ে থাকলেও তা কোনো ফ্যাক্টর নয়। মোরসালিনদের প্রীতি হলেও প্রতিজ্ঞা ছিল ম্যাচ জিততেই হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে।
পেশাদার লিগ শেষের পর ফুটবলাররা অলস সময় পার করেছেন। তারপর ভুটান এমন কোনো আহামরি দল না যে, তাদের হারাতে আলাদা প্রস্তুতি নিতে হবে। কথাটি সত্য কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলাররা মাঠে নামলেই তো এলেমেলো হয়ে যায়। সাদ, জামাল, মোরসালিন, রাকিব, সোহেল রানা, হৃদয়রা যদি সেরাটা দিতে পারেন তাহলে তো ঘরের মাঠেই ভুটানের দাঁড়ানোর কথা না। বড় না হোক জয় তো মামুলি ব্যাপার। বাংলাদেশ জিতেছে ঠিকই তাদের খেলার মধ্যে কোনো সৌন্দযের ছাপ ছিল না। বরং ভুটান তুলনামূলক গুছিয়ে খেলেছে। বারবার বাংলাদেশের দুর্গে বল নিয়ে গেলেও জালে পাঠাতে পারেনি। ভাগ্যের জোরে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। তারপরও কোচ কাবরেরা খুশি, বলেছেন ফুটবলের জয়টাই আসল। উল্লেখ্য মোরসালিন বাংলাদেশের যেসব ম্যাচে গোল পেয়েছেন তাতে হারের রেকর্ড নেই।
দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকায় পারফরম্যান্সের ওপর যে প্রভাব পড়েছে গতকাল বাংলাদেশের ম্যাচের তার প্রমাণ মিলেছে। কেমন জানি খাপ ছাড়া ছিল পুরো দল। শুরু দিকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মোরসালিন গোল করলেও পরে বাংলাদেশকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। ব্যবধান বাড়াতে এমন কোনো ভয়ংকর আক্রমণও করতে দেখা যায়নি। রক্ষণভাগও ছিল নড়বড়ে। ভাগ্য ভালো অভিজ্ঞতার অভাবে ভুটানের ফুটবলাররা গোল করতে পারেননি। আরেকটি ব্যাপার না বললেই নয়, জামাল ভূঁইয়ার পারফরম্যান্স পড়তির দিকে। এবার তাকে ঘরোয়া ফুটবলে কোনো দলই নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি। সে ক্ষেত্রে জাতীয় দলে কেন নেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে রহস্য থেকে যাচ্ছে। তার জায়গায় অন্য কাউকে কি নেওয়া যায় না।