বিপিএলের ১১তম আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট চূড়ান্ত। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো দল গুছিয়ে নিয়েছে। আসরের সাত দল এখন অপেক্ষায় মাঠে নামার। বিসিবি চূড়ান্ত করেছে বিপিএলের তারিখ। ৩০ ডিসেম্বর শুরু এবং ফাইনাল ৭ ফেব্রুয়ারি। বিপিএলের সবকিছুই যখন চূড়ান্ত, তখন দেশের সেরা টি-২০ টুর্নামেন্টটি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে দুর্নীতির তালিকায় বিপিএলের নাম রয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গত দুই বছরে বিপিএলে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অথচ এমন অভিযোগে কাউকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত অনেকে খেলাও চালিয়ে গেছেন, যাচ্ছেন। অবশ্য বিপিএলে দুর্নীতি কিংবা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ এবারই প্রথম নয়। প্রথম আসর থেকেই এমন অভিযোগ রয়েছে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।
এক সময় আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটে কাজ করতেন স্টিভ রিচার্ডসন। সাত বছর কাজ করার পর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। আইসিসির সাবেক কর্মকর্তা টেলিগ্রাফের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন টি-২০ লিগ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, বিশ্বের অনেক টি-২০ লিগ ও লিজেন্ড লিগ আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা অনুসরণ করে না। টি-২০ লিগের আয়োজক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের দুর্নীতি নিয়ে আইসিসিও চিন্তিত। রিচার্ডসনের সঙ্গে কথা বলার পর টেলিগ্রাফ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘কীভাবে ক্রিকেট নিজেকেই খেয়েছে’ শিরোনামে। সংবাদমাধ্যমটির বিশেষ প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ অনুষ্ঠিত হয়, এরা আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেনি। বিপিএলও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আইসিসির তালিকাভুক্ত হয়নি। দুর্নীতির এই কাজটি নিজেরাই করে থাকে। বিপিএল নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ দুই বছরের বিপিএলে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু একজনও নিষিদ্ধ হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তরা প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত বছরের পর বছর খেলায়ও থেকে যান।’ এর কারণও ব্যাখ্যা করা হয় প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, ‘অভিযোগ জানাতে খেলোয়াড়ের অনেকেই ভয় পান। কারণ হিসেবে পারিশ্রমিক না পাওয়ার ভয় এবং নিজেদের নিরাপদ বোধ না করা। তবে সরাসরি ম্যাচ ফিক্সিং স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেলে তখন খেলোয়াড়রা আয়োজককে জানায়।’ প্রতিবেদনে কোনো ক্রিকেটারের নাম উল্লেখ করেনি দ্য টেলিগ্রাফ।
স্টিভ রিচার্ডসন বর্তমানে স্পোর্টস ইন্টেগ্রিটি কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর দুর্নীতি দমনের জন্য বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলোকে কাজ করা উচিত বলেন আইসিসির সাবেক কর্মকর্তা, ‘দুর্নীতিবাজরা সব সময় সব জায়গায় তৎপর থাকেন এবং চেষ্টা করেন কাজ হাসিল করতে। তবে বিশ্বের সব লিগেই যে দুর্নীতিবাজরা কাজ করছেন, তেমন নয়। অবশ্য এদের অনেকেই আছেন ভালো মনের মানুষ, যারা জানেনই না, কোন উদ্দেশ্যে কাজ করছেন।’