৩০ নভেম্বর, ২০২০ ১০:০৮

তবে কি এটাই ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যার সম্ভাব্য মোটিভ?

অনলাইন ডেস্ক

তবে কি এটাই ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যার সম্ভাব্য মোটিভ?

মোহসেন ফাখরিজাদেহ

শুক্রবার ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছে গুপ্ত হামলায় নিহত হন দেশটির পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ। হত্যাকাণ্ড ঘটনাতে প্রথমে বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি দিয়ে কৌশলে থামানো হয় মোহসেন ফাখরিজাদের গাড়ি। এরপর দ্রুত আরেকটি গাড়ি থেকে এক দল বন্দুকধারী বেরিয়ে এসে গুলি ছুড়ে ওই বিজ্ঞানীর মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং পালিয়ে যায়।

কিন্তু কী কী উদ্দেশ্য রয়েছে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে?

ইরানের বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যাকাণ্ডের পেছনে সম্ভাব্য দুটো মোটিভ বা উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে।

প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন সরকারের সাথে ইরানের সম্পর্ক ভালো হওয়ার যেকোনও সম্ভাবনা নষ্ট করা।

দ্বিতীয়ত, ইরানকে বদলা নিতে উস্কানি দেওয়া।

মোহসেন ফাখরিজাদের হত্যাকাণ্ডের পর তার প্রথম বক্তব্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মন্তব্য করেন, “শত্রুরা গত কয় সপ্তাহ ধরে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে।”

তিনি বলেন, “তারা বুঝতে পারছে, বিশ্বের পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে এবং হাতের বাকি সময়টায় তারা এই অঞ্চলে একটি অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে।”

সন্দেহ নেই যে “শত্রু” বলতে রুহানি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সরকার, ইসরায়েল এবং সৌদি আরবকে বুঝিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে পরিবর্তনের যে জোয়ার শুরু হয়েছে তা নিয়ে ইসরায়েল এবং সৌদি আরব উদ্বিগ্ন। জো বাইডেন ক্ষমতা নেওয়ার পর তার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এই দুই দেশ চিন্তিত।

তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাইডেন পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে তিনি ইরানের সাথে করা পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে যেতে চান। ২০১৫ সালে বারাক ওবামা সরকার এই চুক্তির প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফাভাবে চুক্তি থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেন।

ইসরায়েলি এবং পশ্চিমা অনেক মিডিয়ায় গত রবিবার সৌদি আরবের নিওম শহরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে এক গোপন বৈঠকের খবর প্রচারিত হয় এবং বলা হয় ইরান নিয়ে তাদের দুই দেশের উদ্বেগ নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়।

বিভিন্ন রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, নিওমে ওই বৈঠকে ইসরায়েলের সাথে এখনই কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে নেতানিয়াহু যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রাজি করাতে পারেননি। অবশ্য সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন কোনও বৈঠক হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বৈঠকের পরদিনই সোমবার যখন ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা জেদ্দায় একটি তেলের স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যেটিকে সৌদি আরব হয়তো বদলা নেওয়ার একটি সুযোগ হিসাবে দেখছে।

ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইরানের কট্টরপন্থী মিডিয়ায় ঢাক-ঢোল বাজিয়ে প্রচার করা হয়, “হুথিরা কুদস-২ (ইরানে তৈরি) দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।” ইরানের সরকার সমর্থক সংবাদ সংস্থা মেহের লেখে, “এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। সৌদি-ইসরায়েল বৈঠকের পর ওই দুই দেশকে একটি সতর্ক বার্তা দেওয়া হল যে ইরানের বিরুদ্ধে যেন কিছু করার আগে তারা যেন দশবার ভাবে।”

ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে সৌদির ক্ষোভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: বিবিসি

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর