ঋষভ পান্তকে রেকর্ড ২৭ কোটি টাকায় কিনে যখন লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক করেছিলেন সঞ্জীব গোয়েন্কা, তখন তিনি ভাবেননি কয়েক মাস পরে ছবিটা এ রকম হবে। দলের মালিক তখন সগর্বে জানিয়েছিলেন, এ বারের আইপিলের সেরা ক্রিকেটার হবেন পান্ত।
সেরা তো দূর, আইপিএলে নিজের সবচেয়ে খারাপ ফর্মে রয়েছেন পান্ত। আরও একটি ম্যাচে ব্যর্থ তিনি। ব্যাটার পন্থের ফর্ম চাপে রেখেছে অধিনায়ক পান্তকেও। কোনও পরিকল্পনাই নেই তার। ফলে খেই হারিয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসও। হারের হ্যাটট্রিক হয়েছে তাদের। পাঞ্জাব কিংসের কাছে ৩৭ রানে হারের পর প্লে-অফ থেকে আরও দূরে সরেছে গোয়েন্কার লক্ষ্ণৌ। আর এই ম্যাচেও পান্ত বড় কিছু করতে পারেননি।
পান্ত কতটা খারাপ ফর্মে এ বার রয়েছেন তা কয়েকটি পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট। ১১টি ম্যাচে ১২৮ রান করেছেন তিনি। ১২.৮০ গড় ও ৯৯.২২ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন পান্ত। এই ১২৮ রানের মধ্যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ৬৩ রান করেছেন তিনি। নইলে ছবিটা আরও খারাপ হত।
কমলা টুপির তালিকায় ৬০ নম্বরে রয়েছেন পান্ত। প্রথম ৬০ জনের মধ্যে তিনিই একমাত্র যার স্ট্রাইক রেট ১০০-র নীচে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কতটা খারাপ ফর্মে রয়েছেন তিনি। শুরুর দিকে মিচেল মার্শ, এডেন মার্করাম, নিকোলাস পুরানদের দাপটে লখনউ জিতছিল। ফলে পন্থের অভাব বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁরাও ফর্ম হারিয়েছেন। তার ফলে মুখের হাসি আরও কমেছে গোয়েন্কার।
রবিবার (৪ মে) ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে পাঞ্জাব তোলে ২৩৬ রান ৫ উইকেট হারিয়ে। ওপেনার প্রভসিমরন সিং মাত্র ৪৮ বলে ৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন জশ ইংলিস (৩০), অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার (৪৫), শশাঙ্ক সিং (৩৩*) ও মারকাস স্টয়নিস (১৫*)।
পাঞ্জাবের ঘরের মাঠে ২৩৭ রান তাড়া করা সহজ ছিল না। তার উপর তিন ওভারের মধ্যেই মিচেল মার্শ (০) ও এইডেন মার্করামকে (১৩) হারায় লক্ষ্ণৌ। এরপর সাজঘরে ফেরেন বিপজ্জনক ব্যাটার নিকোলাস পুরানক (৬)। ফলে চাপ আরও বাড়ে পান্ত'র। এই ম্যাচে অবশ্য নিজেকে লুকিয়ে রাখেননি পান্ত। চার নম্বরে নেমেছেন। ১৭ বলে করেছেন ১৮ রান। সেই ১৮ রানের মধ্যে ১৪ রান বাউন্ডারি থেকে। এর থেকেই স্পষ্ট, দৌড়ে রান করতে পারছেন না পান্ত। মাঠের ফাঁকা জায়গা ব্যবহার করতে পারছেন না। চেষ্টা করছেন জোরে শট মারতে। বাউন্ডারিতে বল ফেলতে। আর সেটা করতে গিয়েই টাইমিং হচ্ছে না।
মাতুল্লা ওমরজাইয়ের যে বলে তিনি আউট হলেন তা তিনি মেরেছিলেন লং অনের দিকে। ব্যাট তাঁর হাত থেকে ছিটকে গেল। ব্যাট গেল মিড অনের দিকে। বল গেল কভারের দিকে। শশাঙ্ক সিংহ সহজেই সেই ক্যাচ ধরলেন। আরও একটি ম্যাচে মাথা নিচু করে ফিরলেন পন্থ।
ওমরজাই এরপর ফেরান ডেভিড মিলারকেও (১১)। তখন লক্ষ্ণৌর স্কোর ছিল ৭৩/৫। শেষ দিকে আয়ুষ বাদোনি (৭৪) ও আবদুল সামাদ (৪৫) মিলে ৮১ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু তা কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পারে। লক্ষ্ণৌ শেষ পর্যন্ত থামে ১৯৯ রানে, ৭ উইকেট হারিয়ে।
এই হারে ৫ ম্যাচে এটি লক্ষ্ণৌর চতুর্থ পরাজয়। পয়েন্ট টেবিলে তারা এখন সপ্তম স্থানে। প্লে-অফের চতুর্থ স্থানের চেয়ে তারা ৪ পয়েন্ট পেছনে, হাতে মাত্র ৩টি ম্যাচ।
অন্যদিকে পাঞ্জাব কিংস টেবিলের দুই নম্বরে উঠে গেছে, ৭ ম্যাচে এটি তাদের সপ্তম জয়। শীর্ষে আছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম