শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাকা-চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার বিপ্লব

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার বিপ্লব

কয়েক বছর আগেও মিরপুরবাসীর কাছে বনানী-এয়ারপোর্ট-উত্তরা যাওয়া ছিল এক দুঃস্বপ্নের নাম। মিরপুর থেকে ফার্মগেট-বিজয় সরণি-মহাখালী হয়ে বনানী এয়ারপোর্ট যেতে কমপক্ষে দুই-তিন ঘণ্টা লাগত। কিন্তু সেই বনানী-এয়ারপোর্ট-উত্তরাই এখন মিরপুরবাসীর সবচেয়ে কম ভোগান্তির দূরত্ব। পরিস্থিতির এই আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে ক্যান্টনমেন্টের ওপর দিয়ে এয়ারপোর্ট রোড ও মিরপুরকে সংযুক্ত করা জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার। এই ফ্লাইওভারের কারণে নগরীর মধ্যাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের যাতায়াত নিশ্চিত হয়েছে।  বিশ্বরোডের যানজট থেকে নগরবাসীকে মুক্তি এনে দিয়েছে কুড়িল ফ্লাইওভার।  বনানীতে ট্রেনের সিগন্যালে দীর্ঘ ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিয়েছে বনানী ওভারপাস। একইভাবে সায়েদাবাদ  টার্মিনাল ও যাত্রাবাড়ীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা  লেগে থাকা জ্যাম এখন নিমিষেই পার করে দিচ্ছে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার। ফার্মগেট-বিজয় সরণি থেকে কাওরানবাজার বা মহাখালী না গিয়ে তেজগাও-সাতরাস্তা যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল বিজয় সরণি-তেজগাঁও উড়ালসড়ক। মৌচাক ও মগবাজারের চিরচেনা রিকশা-বাসের জট থেকেও মুক্তি দিয়েছে মৌচার-মগবাজার ফ্লাইওভার।

গত এক দশকে ঢাকার বুকে গড়ে ওঠা এই সাত ফ্লাইওভার পুরো রাজধানীর যানজন নিরসন করতে না পারলেও কিছু স্পটের অসহনীয় জট থেকে নগরবাসীকে দিয়েছিল মুক্তি।

একইভাবে চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা থেকে কালুরঘাট। এ সড়কের জিইসি মোড়, দুই নং গেইট, লালখান বাজার, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট জংশনের নিত্য  চিত্র ছিল অসহনীয় যানজট। কিন্তু বহদ্দারহাট-মুরাদপুর এম এ মান্নান ফ্লাইওভার এবং লালখান বাজার-মুরাদপুর আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার নির্মাণ হওয়ার পর বদলে গেছে চিরাচরিত এ চিত্র। অভিন্ন অবস্থা কদমতলী ও দেওয়ান এলাকার। এখানেও দুটি ফ্লাইওভার নিরসন করেছে যানজটের দুর্বিষহ চিত্র। এভাবে পরিবর্তন হয়েছে চট্টগ্রাম নগরের যানজট চিত্র। কমছে ভোগান্তি, সাশ্রয়  হচ্ছে অর্থ, বাঁচছে মানুষের কর্ম ঘণ্টা। চারটি ফ্লাইওভার চট্টগ্রাম নগরের যাতায়াতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, ফ্লাইওভারগুলোর কারণে নগরে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ ও দ্রুত হয়েছে।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাছান বিন শামস বলেন, ফ্লাইওভারগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে নগরে যানজট অনেকাংশে কমেছে। ইতিমধ্যেই নগরবাসী এর সুফল পেতে শুরু করেছে। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হলে নগরে আর কোনো যানজট থাকবে না বলে আমরা মনে করি।

ঢাকায় হবে নতুন ফ্লাইওভার : জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের জনপ্রিয়তার কারণে অত্যধিক চাপ পড়া কালশী রোডের যানজট থেকে মুক্তি দিতে ইসিবি চত্বর থেকে কালশী মোড় হয়ে ডানে বামে মুখ থাকা নতুন একটি ফ্লাইওভার তৈরির কাজ চলছে। এয়ারপোর্ট রুটকে যানজটমুক্ত করতে পৃথক লেন নির্মাণের জন্য বনানী সেতু ভবন থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত আরও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের কথা ভাবা হচ্ছে। বিদ্যমান ফ্লাইওভারের পূর্বপাশ দিয়ে নতুন এ ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। নতুন চমক হিসেবে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে ঢাকা-মাওয়া সড়কের ঝিলমিল পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার নির্মাণ হবে।

সর্বশেষ খবর