শিরোনাম
বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সত্যিকার উড়ন্ত গাড়ি

রকমারি ডেস্ক

সত্যিকার উড়ন্ত গাড়ি

দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে মানুষ চেষ্টা করছে উড়ন্ত গাড়ি প্রস্তুত করতে। তাতে ধরা দিয়েছে সফলতাও। এখন চলছে পৃথিবীব্যাপী বাণিজ্যিকভাবে তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা।  ইতিমধ্যে দুবাই, ইসরায়েলের আকাশে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে নতুন এই উদ্ভাবন...

চকচকে গাড়ি, মাটি স্পর্শ না করে হাওয়ায় ভেসে ছুটে চলেছে রাস্তা ধরে। প্রয়োজনে দিব্যি নেমে পড়ছে রাস্তার কাছে। সেখানেও সমান গতিতে ছুটে যাচ্ছে গাড়ি। শুনতে অতি কাল্পনিক কোনো যন্ত্রের কথা মনে হলেও সত্যিই এমন গাড়ি এখন বর্তমান। এমন গাড়ি প্রথম তৈরি করা হয়েছিল এখন থেকে প্রায় ষাট বছর আগে। সেটি ছিল উভয়চর গাড়ি। পাখা মেলে আকাশে উড়ে যাওয়ার মতো গাড়ি, পানিতে স্পিডবোটের মতো ভেসে বেড়ানোর গাড়ি, এমনকি সাবমেরিনের মতো গভীর জলে ডুব দেওয়ার মতো গাড়ি তৈরির চেষ্টার কথাও শোনা যায়। তবে সবাই যে তাদের কাজ সফলতার সঙ্গে শেষ করতে পেরেছেন, এমনটা নয়। কিছু আবার মুখ থুবড়েও পড়েছে। কিন্তু থেমে থাকেনি মানুষ। ব্যর্থতার পথ ধরেই এসেছে সফলতা।

২০২১ সালের পৃথিবীতে এসে উড়ন্ত কার এখন সবার চোখের সামনে। গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে অভিনবত্ব আনতে পোর্শের জুড়ি নেই। থেকেই উড়ন্ত গাড়ি নিয়ে কাজ করে সাফল্যও পেয়েছে। শুধু পোর্শে নয়। আরও কয়েকটি গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান উড়ন্ত গাড়ি নিয়ে কাজ করছে। একবার ভাবুন তো, ঢাকার রাস্তায় জ্যামজটে যদি দেখেন আপনার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে চলেছে গাড়ি। পৌঁছে যাচ্ছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। অবাক শোনালেও এটিকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছে পোর্সের মতো আরও কিছু গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। গাড়ি এবং উড়োজাহাজের সমন্বিত এই রূপ বদলে দিতে পারে সারা পৃথিবীর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। এরই মধ্যে গাড়ি-নির্মাণ শিল্পের বাঘা বাঘা সব প্রতিষ্ঠান নিজেদের নিয়োজিত করেছে এ কাজে। চলছে প্রতিযোগিতা, কার আগে কে এই অসাধ্য সাধন করে তাক লাগিয়ে দিতে পারে পুরো পৃথিবীকে। এয়ারবাস কোম্পানি ব্যাটারিচালিত এবং মাত্র একটি সিটের উড়ন্ত গাড়ি নিয়েই তাদের প্রজেক্ট শুরু করেছে। রানওয়ে ছাড়াই এটি উড়তে পারবে। ওড়ার সময় এর ডানা খুলে যাবে আর রাস্তায় ড্রাইভিং করার সময় সাধারণ গাড়ির মতোই একে দেখাবে।

উড়ন্ত গাড়ির দ্বিতীয় প্রজেক্টটি হলো দুবাইয়ে, আরব আমিরাতের ট্রাফিক জ্যাম থেকে বাঁচতে এয়ার ট্যাক্সি হিসেবে কাজ করবে এই ভলোকপ্টারগুলো। দুই সিটের এই উড়ন্ত গাড়িগুলো দুই সিটের এবং সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই দুবাই শহরের যে কোনো মাথায় চলে যাওয়া যাবে এই ডানাওয়ালা ভলোকপ্টারগুলো দিয়ে।

কিন্তু সত্যি সত্যি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির উড়ন্ত গাড়ি তৈরি হয়েছে ইসরায়েলে। আরবান অ্যারোনটিকস ফ্যানক্রাফটের তৈরি এই উড়ন্ত গাড়িগুলোর কোনো ডানা নেই, এমনকি হেলিকপ্টারের মতো কোনো রোটরও নেই। উল্লম্বভাবে ওঠা-নামা করাসহ অত্যন্ত শক্তিশালী ইঞ্জিনের সাহায্যে ১৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টার চেয়েও বেশি দ্রুত গতিতে চলাচল করা যাবে এই ভবিষ্যতের বাহনে। তিন চাকা আর চার প্রোপেলার সমন্বয়ে তৈরি উড়ন্ত গাড়ির প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রনিক ফার্ম এনইসি। ভবিষ্যৎ বিপ্লবের সূচনা করতে যাওয়া এই গাড়িটি টোকিও থেকে ২২ মাইল দূরে আবিকো শহরের একটি বিশেষ মাঠে পরীক্ষামূলকভাবে সফল উড্ডয়ন করে। তাই সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন মানুষ উড়ন্ত গাড়ির কল্যাণে যানজট মুক্ত পৃথিবী গড়তে পারবে। সময়কে নিয়ে আসতে পারবে হাতের মুঠোয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর