সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
কোনটা সেরা

ডিএসএলআর নাকি মিররলেস?

ডিএসএলআর নাকি মিররলেস?

কয়েক বছর আগেও ডিজিটাল সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স ক্যামেরা বা ডিএসএলআরের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি ছিল। কিন্তু সেই জায়গা এখন দখল করছে মিররলেস ক্যামেরা।  মিররলেস ক্যামেরাগুলোতে ভালো কিছু সুবিধাও পাওয়া যায়।

 

ডিজিটাল দুনিয়ায় ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফি কেবল শখের বশে নয়, অনেকের ক্ষেত্রে এসব আয়ের উৎস। কিছুকাল আগেও ছবি তোলার জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা ছিল অন্যতম হাতিয়ার। তবে এখন ডিজিটাল ক্যামেরার চাহিদা কমে গেছে, সে স্থানটি দখল করে নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির মিররলেস ক্যামেরা। সম্প্রতি ক্যামেরার বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে যাচ্ছে মিররলেস ক্যামেরা। এ ক্যামেরা এতই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে যে, চলচ্চিত্র নির্মাণেও এই ক্যামেরা ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

মিররলেস ক্যামেরা কী?

এক কথায় বললে, যে ক্যামেরায় ‘মিরর’ নেই তাকে বলা হয়ে মিররলেস ক্যামেরা। ডিএসএলআর ক্যামেরায় ত্রিভুজ আকৃতির মিরর রয়েছে, যাতে তোলা ছবি প্রথম দেখা যায়। কিন্তু মিররলেস ক্যামেরায় সরাসরি স্ক্রিনে দেখা যায়। এতে লেন্স পরিবর্তন করা যায়। এতে মিরর নেই, তবে মিরর থাকলেও এর স্থান এমনভাবে পরিবর্তিত হবে যেন তা চারপাশের আলো প্রবেশের পথে বাধা সৃষ্টি না করে। এই প্রযুক্তিতে অধিক পরিমাণ আলো ধারণ করা সম্ভব, এটা প্রতিফলন হয় না।

 

ডিজিটাল ও মিররলেসের পার্থক্য

যদিও পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরা বহনে সুবিধা। কিন্তু তাতে ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ভালো রেজুলেশনের ছবি পাওয়া যায় না। অন্যদিকে ডিএসএলআর ক্যামেরায় প্রয়োজন হয় অনেক লেন্সের। এ ঝক্কি থেকে রেহাই মেলে সঙ্গে মিররলেস ক্যামেরা থাকলে। ডিএসএলআর ক্যামেরার সঙ্গে মিররলেস ক্যামেরার মূল পার্থক্য হচ্ছে- মিররলেস ক্যামেরা ডিএসএলআর-এর চেয়ে ওজনে বেশ হালকা, এটি আরও কার্যকর এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন। মিররলেসে যুক্ত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। ফলে এতে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও হয়ে উঠছে আরও প্রাণবন্ত। ডিএসএলআর’র চেয়ে মিররলেসের ভিডিও কোয়ালিটিও অনেক ভালো। একই কনফিগারেশন, তবে দামের দিক থেকে ডিএসএলআরের চেয়ে মিররলেস সাশ্রয়ী।

 

কেমন দাম?

বাজারে এখন মিলছে নানা ব্র্যান্ডের মিররলেস ক্যামেরা। একই কনফিগারের যে ডিএসএলআর ক্যামেরা কেনা যাবে ১ লাখ ৩০/৩৫ হাজার টাকায়, মিররলেস হলে সেটি কেনা যাবে ১ লাখ টাকার মধ্যে। মিররলেস ক্যামেরা ছোট ও হালকা হওয়ায় সহজে বহনযোগ্য, এটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এবং সাশ্রয়ী। পরিসংখ্যান বলছে, বাজারে প্রফেশনাল ব্র্যান্ড নিউ ক্যামেরার ৭০ শতাংশই এখন মিররলেসের দখলে। আর ৩০ ভাগ দখলে আছে ডিএসএলআর ক্যামেরার।

 

মিররলেস ক্যামেরা কিনতে

সেরা মিররলেস ক্যামেরা মানে সেরা স্পেসিফিকেশনসহ ক্যামেরা। প্রয়োজনীয় মিররলেস ক্যামেরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে সেন্সরের আকার। কয়েকটি সহজলভ্য আকারের সেন্সর হলো- মাইক্রো ফোর থার্ডস, এপিএস-সি, ফুল ফ্রেম ও মিডিয়াম ফরম্যাট। স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিও উভয় শুটের জন্য এ তালিকার প্রতিটি ক্যামেরাই দক্ষ। তবে কয়েকটিতে সর্বোৎকৃষ্ট ফুটেজের জন্য ইন-বডি স্ট্যাবিলাইজেশন, কালার গ্রেডিংয়ের জন্য পেশাদার ‘লগ’ মোড এবং উচ্চ ফ্রেম রেট বা ক্যাপচার কোয়ালিটি রয়েছে। দারুণ এসব বৈশিষ্ট্য ভিডিও, ব্লগিং কিংবা সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেবে। তবে সাধ এবং সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে আপনাকে বেছে নিতে হবে প্রয়োজনের সেরা মিররলেস ক্যামেরাটি।

 

জনপ্রিয় মিররলেস ক্যামেরা

মিররলেস ক্যামেরায় লেন্স পরিবর্তন এবং দ্রুত অসংখ্য শট ধারণ করা যায়। স্বয়ংক্রিয় সেটিংসের পাশাপাশি ৪-৮ কে রেজুলেশনের অসাধারণ দৃশ্য ধারণে পারদর্শী হালের ফ্যাশন মিররলেস ক্যামেরা।

 

অলিম্পাস ওএম-ডি ই-এমটেন : ই-এম১০ সিরিজের নতুন আইভি সংস্করণে যুক্ত হয়েছে নতুন বৈশিষ্ট্য। এতে রয়েছে মাইক্রো ফোর থার্ড ২০ এমপি সেন্সর, তিন ইঞ্চি টাচ স্ক্রিন, ২০.৩ মেগাপিক্সেল, বাঁকানো যায় এমন মনিটর। ৪কে ইউএইচডি ভিডিও ধারণে সক্ষম এমন ক্যামেরা খুঁজছেন, তাঁদের জন্য এটি আদর্শ। অলিম্পাস ২০ এমপি সেন্সরসহ এতে সর্বাধুনিক পিন্ট-সাইজড ক্যামেরা।

 

ফুজিফিল্ম এক্স-টিফোর : প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের উপযোগী ক্যামেরা ফুজিফিল্ম এক্স-টি৪। এএসপি-সি সেন্সর, ২৬.১ মেগাপিক্সেল, ইভিএফ মনিটর, ৪কে ইউএইচডি ভিডিও ধারণে সক্ষম ক্যামেরাটির ধারাবাহিক শুটিং গতি ১১এফপিএস।

 

সনি এওয়ান : এতে রয়েছে ফুল ফ্রেম সেন্সর, ৫০.১ মেগাপিক্সেল, সর্বোচ্চ ৮কে ভিডিও রেজুলেশন, সনি এফই লেন্স মাউন্ট এবং ধারাবাহিক শুটিং গতি ৩০এফপিএস।

 

প্যানাসনিক লুমিক্স এস৪ ও জিহানড্রেড : প্যানাসনিক লুমিক্স এস৪-এ রয়েছে ফুল ফ্রেম সিএমওএস সেন্সর, তিন ইঞ্চি টাচ স্ক্রিন, ২৪.২ মেগাপিক্সেল, এল মাউন্ট লেন্স, ধারাবাহিক শুটিং গতির ৭ এফপিএস, ৪কে ভিডিও সমর্থন। ৬কে ফটো মোডের মিররলেস ক্যামেরাটি হালকা এবং কমপ্যাক্ট হওয়ায় এটি দারুণ জনপ্রিয়। 

 

ক্যানন ইওএস আর৫ : প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের উপযোগী সর্বোচ্চ ৮কে ভিডিও রেজুলেশনের ক্যামেরা ক্যানন ইওএস আর৫। এতে রয়েছে ফুল ফ্রেম সেন্সর, ক্যানন আরএফ লেন্স মাউন্ট, ৪৫ মেগাপিক্সেল, ৩.১৫ টাচস্ক্রিন, ধারাবাহিক শুটিং গতি ১২ এফপিএস (মেকানিক্যাল সাটার) এবং ২০ এফপিএস (ইলেকট্রনিক)।

তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর