বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর সৃষ্ট পথে বিচ্ছুরিত আলোর মন্তাজ

অনুপম হায়াৎ, চলচ্চিত্র গবেষক ও শিক্ষক

বঙ্গবন্ধুর সৃষ্ট পথে বিচ্ছুরিত আলোর মন্তাজ

নানা কারণেই এ সময়ে চলচ্চিত্র সংকটের আবর্তে পড়েছে প্রযোজনা, নির্মাণ, পরিবেশনা ও প্রদর্শন ক্ষেত্রে। সিনেমা হলের সংখ্যা কমে গেছে...

 

এই প্রবন্ধের সূত্রপাত করতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে। ২০১৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকায় প্রদত্ত বাণীতে তিনি লিখেছেন :

“চলচ্চিত্রের অন্তর্নিহিত ও অপরিমেয় শক্তির কথা অনুধাবন করেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল তদানীন্তন প্রাদেশিক আইন পরিষদে ‘চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল’ উত্থাপন করেন এবং ওই দিনই বিলটি আইনে পরিণত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রাণকেন্দ্র এফডিসি। শুরু হয় বাংলা চলচ্চিত্রের বিকাশ ও উন্নয়নের নবযাত্রা”।

বঙ্গবন্ধুর সৃষ্ট সেই প্রতিষ্ঠানের বিকাশ ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় গত ৬০ বছর ধরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প। এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে তিন সহস্রাধিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চিত্র, হাজার হাজার স্বল্পদৈর্ঘ্য চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র, তথ্যচিত্র, প্রচার ও বিজ্ঞাপনচিত্র। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেয়েছে পুরস্কার-সম্মাননা-স্বীকৃতি। এই শিল্পে বিনিয়োগ হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। শত শত মেধাবী প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই শিল্প ও কলা মাধ্যমে শ্রম ও মেধার বিকাশ ঘটিয়েছেন। চলচ্চিত্র পেয়েছে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক স্বীকৃতি ও সম্মান। চলচ্চিত্র বিষয়টি পঠন-পাঠনের তালিকাভুক্ত হয়েছে পেশাগত প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে।

এফডিসির যাত্রালগ্নে নন্দিত কুসুম (১৯৫৭-১৯৬৬)

বঙ্গবন্ধু এফডিসি প্রতিষ্ঠা করে বেশিদিন মন্ত্রিত্বে ছিলেন না। তবে তাঁর আমলেই শুরু হয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’র (১৯৫৫) অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশের গ্রামজীবন-সমাজ-সংস্কৃতি নির্ভর ফতেহ লোহানী পরিচালিত নাজীর আহমেদের কাহিনি-সংলাপ ও নেপথ্য সহায়তায় ‘আসিয়া’ চলচ্চিত্রের কাজ। সেই সঙ্গে ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের অনুসরণে এ জে কারদারের ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ এবং আরও ৩/৪টি জীবনবাদী চলচ্চিত্রের কাজ। ওই সময় বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষা আন্দোলন নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারির কারণে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এফডিসির সহায়তায় নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো ১৯৫৯ সাল থেকে মুক্তি পেতে থাকে এবং একেকটি চিত্র বিষয়বস্তুর বৈশিষ্ট্য ও নির্মাণ আঙ্গিকগত শৈল্পিক উৎকর্ষের স্বাক্ষর রাখে। ‘আসিয়া’ (১৯৫৭-৬০) পায় শ্রেষ্ঠ বাংলা চিত্র হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার আর ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ (১৯৫৯) পায় মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার।

নবীন প্রতিষ্ঠান, নবীন নির্মাতা-শিল্পী-কুশলীদের আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র এই দশকের সৃষ্টি স্বাক্ষর রাখে। যেমন এহতেশামের ‘এদেশ তোমার আমার’ (১৯৫৯), মহীউদ্দিনের ‘মাটির পাহাড়’ (১৯৫৯), ফতেহ লোহানীর ‘আকাশ আর মাটি’ (১৯৫৯), সালাউদ্দিনের ‘যে নদী মরুপথে’ (১৯৬১), ‘সূর্য¯œান’ (১৯৬২), ‘ধারাপাত’ (১৯৬৪), জহির রায়হানের ‘কখনো আসেনি’ (১৯৬১), ‘কাচের দেয়াল’ (১৯৬৩), ‘বেহুলা’ (১৯৬৬), জিল্লুর রহিমের ‘এই তো জীবন’ (১৯৬৪), সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’ (১৯৬৫) প্রভৃতি।

সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ (১৯৬৪) প্রথম বাংলা চিত্র হিসেবে জার্মানির ফ্রাংকফুর্টে অনুষ্ঠিত এশীয় চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পায়। জহির রায়হান রঙিন ‘সংগম’ (১৯৬৫) বানিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন। অন্যদিকে উর্দুভাষায় বাজারী চলচ্চিত্রের তোপের মুখে সালাউদ্দিন লোকগাথা ভিত্তিক ‘রূপবান’ (১৯৬৫) বানিয়ে বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রকে উদ্ধার করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন।

এদিকে ভাষা আন্দোলনের পর সামরিক ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসন শোষণের বিরুদ্ধে প্রবল ছাত্র ও জনমত গড়ে ওঠে। চলচ্চিত্র তথা সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও এর ছাপ পড়ে। জহির রায়হান ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ (১৯৬৫) নামে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেন। বাংলা ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য লিফলেট বিলি করা হয় গোপনে। শুদ্ধ চলচ্চিত্র চর্চার জন্য ষাটের দশকের শুরুতে গঠিত হয় চলচ্চিত্র সংসদ : ফিল্ম ক্লাব, ঢাকা ফিল্ম সোসাইটি, স্টুডেন্টস ফিল্ম ক্লাব ও পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংসদ। এসবই ইতিহাসের সোনালি অধ্যায়।

ইতিহাস, গণআন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ (১৯৬৭-১৯৭৬)

ষাটের দশক বিশ্বব্যাপী যেমন রাজনৈতিক উত্তালের সময় তেমন বাংলাদেশেও। ল্যাটিন আমেরিকায় রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে চলচ্চিত্রের নোভো আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদী তৃতীয় চলচ্চিত্র ধারার জন্ম হয়েছে। বাংলাদেশেও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত শক্তিশালী হয়েছে এবং জাতীয়তাবাদী ধারাটিও ক্রমেই শক্তিশালী হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছেন ৬ দফা। এমন পরিবেশে চলচ্চিত্রে লোকগাথার অলীক অবাস্তবতার পাশাপাশি নির্মিত হয়েছে বিদেশি ইংরেজ বেনিয়া ও স্বদেশি জমিদার-মুৎসুদ্দী চক্রবিরোধী-স্বাধীনতা রক্ষাকারী ঐতিহাসিক চরিত্র ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৯৬৭) খান আতার পরিচালনায়। ফ্যান্টাসি নির্মাতা ইবনে মিজানও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতাকে নিয়ে ‘শহীদ তিতুমীর’ (১৯৬৮) বানান। সামরিক শাসনের কঠোরতার মধ্যেও ছাত্র ও গণআন্দোলন নিয়ে জহির রায়হান পারিবারিক ঘটনার আড়ালে নির্মাণ করেন রাজনৈতিক চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’ (১৯৭০) এবং শুরু করেন আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদী-বিরোধী চিত্র ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ (১৯৭০-৭১) এর কাজ। পাকিস্তানি আমলে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সময়ের অন্যান্য উল্লেখ্যযোগ চিত্রের মধ্যে রয়েছে সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ (১৯৬৭), ‘বিনিময়’ (১৯৭০), জহির রায়হানের ‘আনোয়ারা’ (১৯৬৯), কাজী জহিরের ‘নয়নতারা’ (১৯৬৭) ও ‘ময়নামতি’ (১৯৬৯), মিতার ‘নীল আকাশের নীচে’ (১৯৬৮) ও ‘এতটুকু আশা’ (১৯৬৯), ‘রেবেকার ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ (১৯৭০) প্রভৃতি।

১৯৭০ সালের নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সরকার গঠন, মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালির আশা-প্রত্যাশা ইত্যাদি প্রেরণার উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ওই সময় স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম চারটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয় পাক-বাহিনীর নৃশংসতা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ, শরণার্থী শিবিরে নারী ও শিশুদের দুঃখকষ্ট নিয়ে। এসব চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জহির রায়হানের ‘স্টপ জেনোসাইড’, ‘এ স্টেট ইজ বর্ন’, আলমগীর কবিরের ‘লিবারেশন ফাইটার্স’ ও বাবুল চৌধুরীর ‘ইনোসেন্ট মিলিয়নস’।

১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সরকারের আমলে কাহিনিচিত্রে মুক্তিযুদ্ধ পেয়েছে নতুন মাত্রা। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি হয় চাষী নজরুল ইসলামের ‘ওরা ১১ জন’ (১৯৭২), ‘সংগ্রাম’ (১৯৭৪), সুভাষ দত্তের ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ (১৯৭২), আলমগীর কবিরের ‘ধীরে বহে মেঘনা’ (১৯৭৩), মিতার ‘আলোর মিছিল’ (১৯৭৪), মমতাজ আলীর ‘রক্তাক্ত বাংলা’ (১৯৭২), আনন্দের ‘বাঘা বাঙালি’ (১৯৭২), খান আতার ‘আবার তোরা মানুষ হ’ (১৯৭৩), আলমগীর কুমকুমের ‘আমার জন্মভূমি’ (১৯৭৩), হারুনর রশীদের ‘মেঘের অনেক রঙ’।

সৃজনশীল অন্যান্য বিষয়নির্ভর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রও নির্মিত হয় এ সময়। যেমন আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ (১৯৭৬), আলমগীর কবিরের ‘সূর্যকন্যা’ (১৯৭৬), ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ (১৯৭৩), রাজেন তরফদারের ‘পালংক’ (১৯৭৬), কবীর আনোয়ারের ‘সুপ্রভাত’ (১৯৭৬), সৈয়দ হাসান ইমামের ‘লালন ফকির’ (১৯৭৬), মিতার ‘লাঠিয়াল’ (১৯৭৫), প্রমোদকারের ‘সুজন সখী’ (১৯৭৫),  আবদুস সামাদের ‘সূর্যগ্রহণ’ (১৯৭৬) প্রভৃতি।

সদ্য স্বাধীন দেশের এ সময় নতুন করে সেন্সর বিধি ও বোর্ড চালু হয়, চলচ্চিত্র তৈরিতে নতুন মাত্রা পায়, ছবির সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনুদান ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার চালু হয়। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের কার্যক্রম সুবিস্তৃত হয়। বিদেশে চলচ্চিত্রশিল্পী দল প্রেরিত হয়। বেসরকারি পর্যায়ে চালু হয় ঢাকা ফিল্ম ইনস্টিটিউট (১৯৭৩)।

তবে এই সময়ের সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা হচ্ছে ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার নৃশংস হত্যাকা-। সেই সঙ্গে চলচ্চিত্রের পর্দা থেকে সাময়িকভাবে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শনও মুছে ফেলা হয়।

কালো সময় বিচ্ছুরিত আলো (১৯৭৭-১৯৮৬)

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সামরিক শাসনের কারণে বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের পর্দায় কৃষ্ণ মেঘ নেমে আসে। মুক্তিযুদ্ধসহ সব মৌলিক অধিকার নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটিমাত্র চলচ্চিত্র শহীদুল হক খানের ‘কলমীলতা’ (১৯৮১) মুক্তি পায়। তবে কতিপয় সাহসী তরুণ এই অবরুদ্ধ পরিবেশেই চলচ্চিত্রের পর্দায় বিদ্রোহের পতাকা উড়ায় স্বল্পদৈর্ঘ্য ও বিকল্পধারার চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে। তাঁদের অঙ্গীকার ছিল মুক্তিযুদ্ধ ও দেশীয় জীবন-সমাজ-সংস্কৃতির ওপর। এ ধারায় নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে মোরশেদুল ইসলামের ‘আগামী’ (১৯৮৪), তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’ (১৯৮৫), মোস্তফা কামালের ‘প্রত্যাবর্তন’ (১৯৮৬), এনায়েত করিম বাবুলের ‘চাক্কি’ (১৯৮৬), আবু সায়ীদের ‘আবর্তন’ (১৯৮৬), তারেক মাসুদের ‘আদম সুরত’ প্রভৃতি।

এ সময় তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মাধ্যমে বীরশ্রেষ্ঠদের নিয়ে ৭টি প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়।

আলোচিত সময়ে উল্লেখযোগ্য পূর্ণদৈর্ঘ্য চিত্রের মধ্যে রয়েছে আলমগীর কবিরের ‘সীমানা পেরিয়ে’ (১৯৭৭), ‘রূপালি সৈকতে’ (১৯৭৯), ‘মোহনা’ (১৯৮২); সুভাষ দত্তের ‘বসুন্ধরা’ (১৯৭৭), ‘ডুমুরের ফুল’ (১৯৭৮), আবদুল লতিফ বাচ্চুর ‘যাদুর বাঁশী’ (১৯৭৭), আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বউ’ (১৯৭৮), আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮) ও ‘সুন্দরী’ (১৯৭৯); আজিজুর রহমানের ‘অশিক্ষিত’ (১৯৭৮) ও ‘ছুটির ঘণ্টা’ (১৯৮০); শিবলী সাদিকের ‘নোলক’ (১৯৭৮), দারাশিকোর ‘ফকির মজনু শাহ’ (১৯৭৮), কাজী হায়াৎ-এর ‘দি ফাদার’ (১৯৭৯); বেলাল আহমদের ‘নাগরদোলা’ (১৯৭৮), আবদুস সামাদের ‘সূর্য সংগ্রাম’ (১৯৭৮); বাদল রহমানের ‘এমিলের গোয়েন্দা কাহিনী’ (১৯৮০); সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর ‘ঘুড্ডি’ (১৯৮০), সৈয়দ হাসান ইমামের ‘লাল সবুজের পালা’ (১৯৮১), আমজাদ হোসেনের ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ (১৯৮০), ‘দুই পয়সার আলতা’ (১৯৮২), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪); চাষী নজরুল ইসলামের ‘দেবদাস’ (১৯৮২), শেখ নিয়ামত আলীর ‘দহন’ (১৯৮৫), আখতারুজ্জামানের ‘প্রিন্সেস টিনা খান’ (১৯৮৪), শহীদুল আমিনের ‘রামের সুমতি’ (১৯৮৫), কাজী হায়াতের ‘রাজবাড়ী’ (১৯৮৪), মহীউদ্দিনের ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ (১৯৮২), রাজ্জাকের ‘চাঁপাডাঙ্গার বউ’ (১৯৮৬) প্রভৃতি।

এই সময়ের আলোচিত চলচ্চিত্র ছিল শেখ নিয়ামত আলী ও মসিহউদ্দীন শাকের পরিচালিত ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’। এটি নব্যবাস্তবতা ধারার চিত্র। স্বাধীন বাংলাদেশের এই চিত্রটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পুরস্কার-সম্মাননা পেয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। চলচ্চিত্র সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি একটি মাইলফলক।

স্বল্পদৈর্ঘ্যরে আন্তর্জাতিকায়ন এবং ... ‘জোছনা’ (১৯৮৭-১৯৯৬)

চলচ্চিত্রের দুর্ভিক্ষের এই সময়ের বড় সাফল্য হচ্ছে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের আন্তর্জাতিকায়ন। তরুণ নির্মাতাদের উদ্যোগে ১৯৮৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব। নেপথ্যে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা-চলচ্চিত্রকার-শিক্ষক আলমগীর কবির। এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও বিজয়-অশ্লীলতা, নকল, ভাঁড়ামো, অসৃজনশীল, অনিরীক্ষামূলক অতিবাণিজ্যমুখী ছবির বিরুদ্ধে। এই সময়ে নতুন করে উত্থান ঘটে লোকগাঁথাধর্মী চলচ্চিত্রের তোজাম্মেল হক বকুলের ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ (১৯৮৯) এর মাধ্যমে। এই ছবি ব্যবসায়িক দিক দিয়ে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে।

মুক্তিযুদ্ধ ও ভিন্নধারার কয়েকটি চলচ্চিত্রও তৈরি হয় এই সময়ে। আলোচিত চিত্রের মধ্যে রয়েছে-রফিকুল বারী চৌধুরীর ‘চ-ীদাস ও রজকিনী’ (১৯৮৭), কাজী হায়াৎ-এর ‘যন্ত্রণা’ (১৯৮৮), মহিউদ্দীন ফারুকের ‘বিরাজ বৌ’ (১৯৮৮), গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ (১৯৯৩), হুমায়ূন আহমেদের ‘আগুনের পরশমণি’ (১৯৯৪), নাসির উদ্দীন ইউসুফের ‘একাত্তরের যীশু’ (১৯৯৩), শেখ নিয়ামত আলীর ‘অন্যজীবন’ (১৯৯৪), মোরশেদুল ইসলামের ‘দীপু নাম্বার টু’ (১৯৯৬), আবদুল খালেকের ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ (১৯৯৫), আখতারুজ্জামানের ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ (১৯৯৬), তানভীর মোকাম্মেলেল ‘নদীর নাম মধুমতী’ (১৯৯৬) ইত্যাদি।

এই সময়ের আলোচিত প্রামাণ্যচিত্র তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদের ‘মুক্তির গান’ (১৯৯৫) মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন করে জাগ্রত করে দর্শকচিত্তে।

নতুন প্রযুক্তি : নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন প্রত্যাশা (১৯৯৭-২০০৬)

সময়টা বিশ্ব চলচ্চিত্রের শতবর্ষপূর্তির শুরুর এবং বিশ শতকের শেষ। অন্যদিকে একুশ শতকের শুরু। সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ এমনকি গার্মেন্ট কর্মীদের জীবনকথাও এ সময়ের চলচ্চিত্রে দৃশ্যমান হয়েছে। পাশাপাশি অনেক তরুণ ও নবীন নির্মাতা সহজলভ্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধারা নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করে আলোচ্য সময়ে। ছবি দেখার বিভিন্ন সুযোগও সৃষ্টি হয়। যেমন ডিভিডি, কম্পিউটার, ইউটিউব, ইন্টারনেট, টুইটার, টিভি চ্যানেল। ফলে সিনেমা হল বন্ধ হতে থাকে ক্রমশ দর্শকের অভাবে। এমন সংকট ও সম্ভাবনার সময়ে আলোচিত ছবির মধ্যে রয়েছে খান আতার ‘এখনো অনেক রাত’ (১৯৯৭), রাজ্জাকের ‘উত্তর ফাল্গুনী’ (১৯৯৭), বাসু চ্যাটার্জির ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ (১৯৯৮), কাজী হায়াৎ-এর ‘আম্মাজান’ (১৯৯৯),  হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ (২০০০), ‘চন্দ্রকথা’ (২০০৩), ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৫), তানভীর মোকাম্মেলের ‘চিত্রা নদীর পাড়ে’ (২০০০), ও ‘লাল সালু’ (২০০১); তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ (২০০১), নার্গিস আখতারের ‘চার সতীনের ঘর’ (২০০৬), সাইদুল আনাম টুটুলের ‘আধিয়ার’ (২০০৩); মৌসুমীর ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, আবু সায়ীদের ‘শঙ্খনদ’ (২০০৭), শাহজাহান চৌধুরীর ‘উত্তরের ক্ষেপ’, ‘একখ- জমি’ ও শামীম আখতারের ‘ইতিহাস কন্যা’ (২০০১)।

২০০৪ সাল থেকে চলচ্চিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে পঠন-পাঠনের তালিকাভুক্ত হয়েছে, অধ্যয়ন ও চর্চার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

সংকট থেকে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

নানা কারণেই এ সময়ে চলচ্চিত্র সংকটের আবর্তে পড়েছে প্রযোজনা, নির্মাণ, পরিবেশনা ও প্রদর্শন ক্ষেত্রে। সিনেমা হলের সংখ্যা কমে গেছে। কাহিনিচিত্রের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। তবে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে অসংখ্য স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ছবি নির্মিত হয়েছে, বিদেশে পুরস্কারও পেয়েছে। এই সংকট উত্তরণের সরকারি পর্যায়ে নেওয়া হয়েছে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ। সরকার ৩ এপ্রিলকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে ২০১২ সালে এবং ২০১৩ সালে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট স্থাপন করেছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে চলচ্চিত্র নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালু করেছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ।

এ সময়ের মধ্যে চলচ্চিত্রে অনুদানের পরিমাণ, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্থের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি চলচ্চিত্র নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, জেলা পর্যায়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে। চলচ্চিত্র নিয়ে উৎসব-সেমিনার-আলোচনা-ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে।

আলোচ্য সময়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে গোলাম রব্বানী বিপুলের ‘স্বপ্ন ডানায়’ (২০০৭); আবু সায়ীদের ‘বাঁশী’ (২০০৭) ও ‘রূপান্তর’ (২০০৯); তৌকীর আহমেদের ‘দারুচিনি দ্বীপ’ (২০০৭); এনামুল করিম নির্ঝরের ‘আহা’ (২০০৭); কাজী মোরশেদের ‘ঘানি’ (২০০৭); খিজির হায়াত খানের ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’ (২০০৭); গিয়াসউদ্দীন সেলিমের ‘মনপুরা’ (২০০৯); সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের ‘গঙ্গাযাত্রা’ (২০০৯); খালেদ মাহমুদ মিঠুর ‘গহীন শব্দে’ (২০১০) ও ‘জোনাকির আলো’; নার্গিস আখতারের ‘অবুঝ বউ’ (২০১০); নাসির উদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’ (২০১১); মোরশেদুল ইসলামের ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ (২০১১); তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’ (২০১০); আবু সায়ীদের ‘অপেক্ষা’ (২০১০); শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘উত্তরের সুর’ (২০১২); হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ (২০১২), রেদওয়ান রনির ‘চোরাবালি’; গাজী রাকায়েতের ‘মৃত্তিকা মায়া’ (২০১৩); কামার আহমদ চৌধুরীর ‘শুনতে কি পাও’ (২০১২); মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ ও ‘টেলিভিশন’; সালাউদ্দিন লাভলুর ‘মোল্লাবাড়ীর বউ’; আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ (২০০৫); চাষী নজরুল ইসলামের ‘শিল্পী’ (১৯৯৭), ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’ (১৯৯৭), ‘মেঘের পর মেঘ’ (২০১৪), ‘শাস্তি’ (২০০৫), ‘সুভা’ (২০০৫), ‘ধ্রুবতারা’ (২০০৬); মোরশেদুল ইসলামের ‘দুঃখাই’ (১৯৯৭), ‘দূরত্ব’ (২০০৫), ‘খেলাঘর’ (২০০৬); মতিন রহমানের ‘রং নাম্বার’ (২০০৫), ‘রাক্ষুসী’ (২০০৬); সুচন্দার ‘হাজার বছর ধরে’ (২০০৫); বেলাল আহমেদের ‘নন্দিত নরকে’ (২০০৬); শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘বাংলা’ (২০০৬); বাদল খন্দকারের ‘বিদ্রোহী পদ্মা’ (২০০৬); কবরীর ‘আয়না’ (২০০৬); মৌসুমী ও গুলজারের ‘মেহের নিগার’ (২০০৬); কাজী হায়াৎ-এর ‘কাবুলীওয়ালা’ (২০০৬)।

মাসুদ পথিকের ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ (২০১৪); আশরাফ শিশিরের ‘গাড়িওয়ালা’ (২০১৪); জাহিদুর রহিম অঞ্জনের ‘মেঘমল্লার’ (২০১৪); শাহ আলম কিরণের ‘৭১ এর মা জননী’ (২০১৪); অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রি’ (২০১৫); শিহাব শাহীনের ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ (২০১৫); আবু সায়ীদ ইমনের ‘জালালের গল্প’ (২০১৫); অনীল বাগচীর ‘একদিন’ (২০১৫); আকরাম খানের ‘ঘাসফুল’ (২০১৫); প্রসূন রহমানের ‘সুতপার ঠিকানা’ (২০১৫); তৌকীর আহমেদের ‘অজ্ঞাতনামা’ (২০১৬); অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘আয়নাবাজি’ (২০১৬); রেদওয়ান রনির ‘আইসক্রিম’ (২০১৬); শামীম আখতােেরর ‘রীনা ব্রাউন’ (২০১৬); মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘লাল সবুজের সুর’ (২০১৬) প্রভৃতি। এসবের মধ্যে কাহিনি ও নির্মাণ শৈলীতে ‘জালালের গল্প’, ‘আয়নাবাজি’ ও ‘অজ্ঞাতনামা’ সুধীদর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এই প্রবন্ধ শেষ করতে চাই ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে চিত্র প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎকারের বিবরণী দিয়ে। সাক্ষাৎকারের বর্ণনা পাওয়া যায় ক্যামেরাম্যান মাসুদ উর রহমান এর লেখায়। তিনি লিখেছেন-

“ আনোয়ার হোসেনকে জড়িয়ে ধরলেন বঙ্গবন্ধু!

তারপর স্মিত কণ্ঠে বললেন তিনি-নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছবিটি আমি কয়েকবার দেখেছি! তোর অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে রে!

এখন তো সময় পাই না! তবে, মাঝে মধ্যে মনে পড়ে সেই সংলাপগুলো!

‘বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার মহান অধিপতি নবাব আলিবর্দী খান-তোমার সে উপদেশ আজো আমি ভুলিনি!

তুমি বলেছিলে-ইংরেজকে বিশ^াস কর না! ওরা সুযোগ পেলে এদেশ কেড়ে নেবে!’

সংলাপগুলো বলতে বলতে বঙ্গবন্ধু হলের মধ্যখানে রাখা সোফাতে গিয়ে বসলেন! কিছুক্ষণ উদাস হয়ে রইলেন!

এমন সময়ে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী মহিউদ্দিন সাহেব এগিয়ে এলেন ওয়্যারলেস টেলিফোন হাতে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর হাতে দিলেন সেটটি।

বঙ্গবন্ধু সেটে মুখ রেখে উচ্চস্বরে বললেন-ঠাকুর! তুই কোথায়! যেখানে থাকিস না কেন-এখনই চলে আয়! আমার ছেলেরা আমাকে ঘিরে আছে! তুই জলদি আয়-কথাগুলো বলে সেটটি আবার মহিউদ্দিন সাহেবের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে বসতে ইশারা করলেন। আমাদের সবার পানে চেয়ে চেয়ে দেখলেন তিনি!

আমি তো মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে আছি বঙ্গবন্ধুর দিকে! আমাদের প্রতিনিধিবৃন্দের অনেকেই কথা বলছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। সাক্ষাতের উদ্দেশ্য বর্ণনা করছেন। বঙ্গবন্ধু নীরবে শুনছেন এবং মাঝে মাঝে তিনি কথাও বলছেন।

এক সময়ে তিনি অতি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন।

উদাস দৃষ্টি মেলে-চলচ্চিত্রকারদের উদ্দেশ করে তিনি তাঁর অন্তঃরস্থ কিছু কথা বললেন-আমি হয়তো আর বেশি দিন বাঁচব না-রে!

এই বাংলাদেশকে আমি বড়ই ভালোবাসি!

তোদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ! আমার সোনার বাংলা! তোরা যদি পারিস-এই সোনার বাংলাদেশকে নিয়ে সোনার বাংলা ছবি তৈরি করিস! ‘আমার সোনার বাংলাদেশ!’

পরিশেষে

১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এফডিসির যাত্রাপথের ধারায় চলচ্চিত্রশিল্প ও কলা এগিয়ে চলেছে এবং ভবিষ্যতেও চলচ্চিত্র এগিয়ে যাবে দেশের জীবন-সমাজ-সংস্কৃতিকে ধারণ করে, ছড়াবে বিচ্ছুরিত আলোর মন্তাজ।

সর্বশেষ খবর