মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম্য থামছে না

ষআকতারুজ্জামান

সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম্য থামছে না

সিএনজি অটোরিকশার নতুন বর্ধিত ভাড়ার তালিকা কার্যকর করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিয়েছেন, ১ নভেম্বর থেকেই মহানগরীতে নতুন ভাড়ায় মিটারে চলবে অটোরিকশা। নতুন ভাড়া কার্যকর হলেও সিএনজি রিকশার ভাড়ার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। অনেক অটোরিকশা মিটারে যাচ্ছেই না। এ ছাড়া অধিকাংশ সিএনজি মিটারে গেলেও আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া। মিটারের বাইরে বাড়তি ভাড়া চুকিয়েই যাত্রী তুলছে তারা। সিএনজি চালকদের ভাষ্য, ভাড়া বাড়লেও গ্যাসের বর্ধিত মূল্যের তুলনায় সেটি অপ্রতুল। তাই মিটারে গেলেও ২০ থেকে ৫০ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে তারা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন আশিকুর রহমান শান্ত। মহাখালীতে বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি। এ প্রতিবেদকের কাছে তিনি অভিযোগ করেন মহাখালী যেতে মিটারে ৮০ থেকে ১২০ টাকা বিল উঠলেও কমপক্ষে ৪০ টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয় তাকে। যাত্রী তোলার আগেই তারা মিটারের নির্ধারিত দামের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাবি করে বসেন। কোনো সিএনজিই নির্ধারিত মিটারে যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তার। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কেন বেশি ভাড়া দিতে হবে বাড্ডা এলাকার সিএনজিচালক আবু সাঈদের কাছে এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিন জমা দিতে হয় ৯০০ টাকা। এ ছাড়া গ্যাসের মূল্য বেশি। তাই মিটারে গেলে পুষিয়ে নেওয়া যায় না।

এভাবে সিএনজি চালকদের বর্ধিত ভাড়ার ফাঁদে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীদের। মিটারের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে সিএনজি অটোরিকশার লাইসেন্স বাতিল, রুট পারমিট বাতিল ইত্যাদির ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন নেই বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

জানা গেছে, সিএনজি অটোরিকশা মিটারে চলছে কিনা তা দেখতে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মনিটরিং টিম প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তারা জানান, মনিটরিং টিমের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশদের সম্পৃক্ত করার বিকল্প নেই। কারণ এক্ষেত্রে হাত বাড়ালেই ট্রাফিক পুলিশের নাগাল পাওয়া সম্ভব। কিন্তু মনিটরিং টিম খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। আরেক ভুক্তভোগী জানান, সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া নৈরাজ্য সম্পর্কে জানাতে দেওয়া টেলিফোন নম্বরগুলোতে (৯১১৩১৩৩, ৫৮১৫৪৭০১, ৯১১৫৫৪৪, ৯০০৭৫৭৪) ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেন না। গত রবিবার উল্লিখিত তিনটি নম্বরে ফোন করলেও কেউ টেলিফোন ধরেননি বলে যোগ করেন তিনি। যাত্রীদের এমন নানা অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গত কয়েকদিনে মাঠে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, বিআরটিএর স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে যথাযথভাবে মনিটরিং সম্ভব নয়। এ ছাড়া প্রক্রিয়াটিতে সমন্বয়ের একটি বড় ঘাটতি রয়েছে। বিআরটিএ সীমিত জনবল নিয়ে যাত্রীদের যথাযথ সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তার মতে, মনিটরিং ব্যবস্থায় ট্রাফিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। রাজধানীতে অল্প দূরত্বের ব্যবধানে ট্রাফিক রয়েছে। তারা এ ব্যবস্থা মনিটরিং করতে পারবেন। বর্ধিত ভাড়া নির্ধারণের পরও যাত্রীরা গন্তব্যস্থলে মিটারে যেতে পারছেন না এটা খুবই দুঃখজনক।

সর্বশেষ খবর