মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

সন্ধ্যা নামলেই ‘রিজার্ভ পরিবহন’

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

সন্ধ্যা নামলেই ‘রিজার্ভ পরিবহন’

চট্টগ্রাম মহানগরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা মতে ১৪টি রুটে গণপরিবহন চলাচল করার কথা। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই অতিরিক্ত ভাড়ার লোভে লেন বদলে গণপরিবহনগুলো হয়ে যায় ‘রিজার্ভ পরিবহন’। ফলে চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পড়তে হয় অফিস ফেরত মানুষদের। নিয়ম না থাকলেও এটি এখন নিয়মেই পরিণত হয়েছে। তা ছাড়া নগরের এই প্রধান সড়কে সিটি করপোরেশন পরিচালিত নিরাপদ যাত্রী পরিবহন বন্ধ এবং সরকারি পরিবহন বিআরটিসির গাড়িগুলোও অপ্রতুল।

যাত্রীদের অভিযোগ, পুলিশকে ম্যানেজ করে বাড়তি আয়ের লোভে গার্মেন্টসের রিজার্ভ ভাড়া মারেন গণপরিবহনগুলো। প্রায় সব রুটেই লাইন বদলে অন্য রুটে রিজার্ভ ভাড়ায় চলে যাচ্ছে গণপরিবহন। ফলে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গী হয় চরম দুর্ভোগ ও হয়রানি।

জানা যায়, রিজার্ভে ইপিজেডের শ্রমিক পরিবহনে বেশি টাকা পাওয়া যায়। ফ্রি পোর্ট থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত লোকাল যাত্রী পরিবহনে পাওয়া যায় ৭০০-৮০০ টাকা। কিন্তু একই দূরত্বে ইপিজেড থেকে যাত্রী পরিবহনে পাওয়া যায় এক হাজার ১০০ টাকা। ফলে চালক-মালিকরা রিজার্ভের দিকেই ঝুঁকছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (যানবাহন) মাসুদ উল হাসান বলেন, গণপরিবহনের রুট পরিবর্তনের খবর আমাদের কাছে আছে। রুটে শৃঙ্খলা আনতে আমরা নিয়মিতভাবে মামলা ও অভিযান পরিচালনা করছি। তারপরও অতিরিক্ত ভাড়ার আশায় তারা রিজার্ভ ভাড়ায় চলছে। তবে  ইপিজেড কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি নিজেদের যানবাহনের ব্যবস্থা করত, তাহলে চালকরা নিজ নিজ রুটেই চলত। চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের অতিরিক্ত মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল বলেন, এমনিতে চট্টগ্রামে গণপরিবহনের সংখ্যা কম। তার ওপর সন্ধ্যায় গাড়ি রিজার্ভ হয়ে গেলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ে। বিষয়টি আমরা জানি। এ ব্যাপারে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানকে যেমন গাড়ির ব্যবস্থা করা দরকার, তেমনি বিআরটিসিকেও নতুন বাস নামানো দরকার। জানা যায়, চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (সিইপিজেড) প্রায় দেড় লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ করেন। কিন্তু তাদের নিজস্ব কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই। ফলে তারা পরিবহন মালিকদের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে দৈনিক প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করে।

বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরে চলাচলকারী মোটরযানের সংখ্যা এক লাখ ১৮ হাজার ২৪৬টি। এর মধ্যে গণপরিবহন ১৬ হাজার ১৯৪টি। নগরীর ১২টি রুটে চলাচল করে ৯৮৪টি বাস ও ৬০৫টি হিউম্যান হলার। তা ছাড়া ১৭টি রুটে এক হাজার ৬০৫টি টেম্পো এবং ১৫ হাজার ১৮৩টি অটোরিকশা চলাচল করছে। তবে গণপরিবহন মালিক সমিতিগুলোর তথ্য মতে, নগরে গণপরিবহনের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এর মধ্যে মামলা ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অধিকাংশ যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর