মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে বিশৃঙ্খল গণপরিবহন

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বিশৃঙ্খল গণপরিবহন

চট্টগ্রাম মহানগরে গণপরিবহন সংকট এমনিতেই চরমে। কিন্তু যা আছে তাতেও চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা। প্রতিনিয়ত সঙ্গী চালক হেলপারদের দুর্ব্যবহার। নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়িয়ে চালকদের ইচ্ছামাফিক জায়গায় দাঁড় করা হয় গাড়ি। প্রতিবাদের কোনো সুযোগ নেই যাত্রীদের।

সরেজমিন দেখা যায়, ১০ নম্বর রোডের বাস কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা সি বিচ যাওয়ার কথা থাকলেও কাটগড় পর্যন্ত গিয়ে যাত্রী নামিয়ে দেয়। এক নম্বর রোডের বাস কালুরঘাট থেকে নিউ মার্কেট যাওয়ার কথা থাকলেও অনেক সময় তা বহদ্দারহাট এসেই যাত্রী নামিয়ে দেয়। একইভাবে অটোরিকশায় মিটার বাধ্যতামূলক করা হলেও অধিকাংশ গাড়িতেই মিটার নেই। চুক্তিতেই যেতে বাধ্য হন যাত্রীরা। তাছাড়া এক রোডের গাড়ি চলছে অন্য রোডে। এনিয়ে চালক-মালিকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকে। নগরীর ২৬টি রোডেই চলছে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা।  

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (যানবাহন) মাসুদ উল হাসান বলেন, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু পরিবহন সেক্টরের অভ্যন্তরীণ সমস্যাসহ নানা কারণে তা বাস্তবায়ন হয় না। তাছাড়া এটি একটি সময় সাপেক্ষ বিষয়। দীর্ঘদিনের এ সমস্যা নিরসনে কিছু প্রক্রিয়া চলমান।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, নগরীর গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলার বিষয়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা।  তবে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে চসিকের সঙ্গে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবং গণপরিবহন মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে নানা পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।   

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও তা আলোর মুখ দেখে না। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিটারে যাত্রী পরিবহন, লক্কর-ঝক্কর বাসের পরিবর্তে আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু ও ভাড়া নৈরাজ্য দূরীকরণে সড়ক পরিবহন সংগঠন, পুলিশ, বিআরটিএ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। ২২ সেপ্টেম্বর সিটি মেয়রের নেতৃত্বে দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অটোরিকশা মালিক-চালক, বাস মালিক ও শ্রমিকরা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য ও সমিতির নামে চাঁদা আদায়ের কারণে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।

কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগে হয়রানি বন্ধ, ভোগান্তি এবং অনিয়ম রোধে তাত্ক্ষণিক প্রতিকারে ডিজিটাল গ্রাহক সেবা কেন্দ্র স্থাপন, বিআরটিএ’র অভ্যন্তরে লাইসেন্স ও ফিটনেস প্রদানে অনিয়ম, জটিলতা বন্ধে কার্যকর নজরদারি, লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া সহজলভ্য করা, গ্রাহক সেবার অনিয়ম রোধে তাত্ক্ষণিক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র চালু, হয়রানি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্সবিহীন চালক, ট্রাফিকের অব্যবস্থাপনা, মালিক-শ্রমিকদের চাঁদাবাজি, ট্রাফিক ও বিআরটিএ’র গাফিলতি, অনিয়ম, হয়রানি। 

সর্বশেষ খবর