শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

গ্যাস-পানির সংযোগে ক্ষতবিক্ষত সড়ক

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

গ্যাস-পানির সংযোগে ক্ষতবিক্ষত সড়ক

ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে রাজশাহী মহানগরীর সড়কগুলো। এক মাইল পথ পেরোতেই ২০-৩০টি গর্ত পার হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। গ্যাস ও পানির সংযোগ নিতে নগরীর অলিগলির সড়ক কেটে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। সড়ক কাটার জন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) গ্রাহকদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করেছে ঠিকই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এসব সড়ক মেরামত করা হয়নি। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। অভিযোগ উঠেছে, গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণের টাকা হরিলুট হয়ে যাওয়ায় এখন সড়কগুলো মেরামত করতে পারছে না রাসিক। নগরীর সব সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। একটু পর পর সড়ক আড়াআড়ি করে গ্যাস-পানির সংযোগের গর্ত।

এসব গর্ত পেরিয়ে চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। কোথাও সড়ক কাটা গর্তগুলো মেরামত হলেও নিম্নমানের কাজের কারণে কিছুদিন পরই সেগুলো নিচের দিকে দেবে গিয়ে আবার আড়াআড়ি গর্ত হয়ে গেছে। ফলে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে সড়কগুলো। এর ওপর দিয়েই চলছে রিকশা-অটোরিকশা। চালকরা বলছেন, একটু অসতর্ক হলেই ঘটছে দুর্ঘটনা। নগরীর বর্ণালী মোড় থেকে হেতেম খাঁ হয়ে সাহেববাজার, লক্ষ্মীপুর থেকে ভাটাপাড়া হয়ে কোর্ট স্টেশন এবং আলুপট্টি মোড় থেকে বোসপাড়া হয়ে তালাইমারী পর্যন্ত সরু সড়কগুলোর অবস্থা একেবারেই বেহাল। এসব সড়কের এক কিলোমিটার পথ পার হতেই অন্তত ২০-৩০টি গর্ত পার হতে হচ্ছে। এসব গর্ত কমিয়ে দিয়েছে যানবাহনগুলোর চাকার গতি। তবু ঝুঁকি নিয়ে গর্ত মাড়িয়ে সড়কগুলো দিয়ে চলাচল করছে ছোট বড় নানা যানবাহন।

এদিকে নগরীর বর্ণালী মোড় থেকে হেতেমখাঁ হয়ে সাহেববাজার পর্যন্ত সড়কটিরও প্রায় ৫০/৬০ জায়গায় রয়েছে কাটা। যা থেকে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, গত দুই বছর ধরে সড়কে এসব গর্ত রয়েছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস ও পানির সংযোগ স্থাপনের পর সংস্কার না করে শুধু ইটের খোয়া ফেলে রাখায় এসব গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

নগরীর সাগরপাড়া, ছোট বটতলা, বালিয়াপুকুর ও মঠপুকুর এলাকায়ও একই চিত্র। যত্রতত্র সড়ক খোঁড়ায় প্রতি কিলোমিটারে অন্তত ২০/৩০ স্থানে রয়েছে প্রায় ৫ থেকে ১০ ইঞ্চি বরাবর গর্ত।

একই অবস্থা নগরীর কলাবাগান, ফকিরপাড়া, সরকারিপাড়া, হোসনীগঞ্জ, সিপাইপাড়া ও  রামচন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সড়কগুলো সংস্কারের জন্য তারা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তাগিদ দিলেও তারা তা আমলে নিচ্ছেন না। ফলে এসব গর্তের ওপর দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনগুলোকে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন।

পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) এমডি আজাহার আলী বলেন, গ্রাহক সড়ক কাটার জন্য রাসিককে ক্ষতিপূরণ না দিলে আমরা তাকে সংযোগই দিই না।

মূল লাইনের সঞ্চালনের সময় আমরা নিজেরাও রাসিককে ক্ষতিপূরণ দিই। সামনের মাসেই তারা আমাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের একটা অর্থ পাবে। এত টাকা পেয়েও কেন রাস্তা মেরামত হয় না তা বলতে পারব না। রাসিক সূত্র জানায়, শুধু গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সময়ই গ্রাহকদের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। পানির ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ আদায় হচ্ছে। নগরীর কিছু এলাকায় ঠিকাদারের মাধ্যমে সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ ঠিকাদারকে এখন পর্যন্ত বিল পরিশোধ করতে পারেনি রাসিক।

সর্বশেষ খবর