মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব খুলনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার আবারও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ শপিং মল, মাছ-মাংস, কাঁচা বাজার, বইয়ের দোকান, হোটেল রেস্টুরেন্ট সর্বত্র নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের আধিপত্য। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শহরের পরিবেশ। পাশাপাশি ব্যবহূত পলিথিনের স্তূপ জমে দুর্গন্ধ ও পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা খুলনা শহর ও গ্রামগঞ্জে পলিথিন উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে তৎপর রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে মাঝে-মধ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আটক করে জরিমানা করা হলেও মূল হোতারা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে নির্মূল হয়নি পলিথিনের ব্যবহার। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, খুলনায় বিভিন্ন পাইকারি দোকানের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন। দোকানদারদের সঙ্গে যোগসাজশে হকাররা এই পলিথিন পৌঁছে দেয়। নগরীর বড়বাজার, রূপসা, দৌলতপুর ও খালিশপুর এলাকায় পলিথিনের কয়েকটি বড় মোকাম রয়েছে। বেসরকারি কলেজ শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, ‘বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে আমরা পলিথিন ব্যবহার কেন করব। দোকানদার আমাদের যে ব্যাগ দেয় আমরা সেই ব্যাগ নিয়ে আসতে বাধ্য। সরকার যেখানে আইন করেছে সেই আইনের প্রয়োগকারী সংস্থা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’ গৃহিণী সালমা বেগম বলেন, বিভিন্ন ডিজাইনের পাট ও কাগজের ব্যাগগুলো ব্যবহারের সুবিধা অনেক। কিন্তু দোকানে মালামাল কিনলে তা আমাদের পলিথিন ব্যাগে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে নীল ও সাদা রঙের পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা)-এর খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, প্রচারের অভাব ও পরিবেশ অধিদফতরের গাফিলতির কারণে পলিথিনের ব্যবহার বেড়েছে। নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন বন্ধ না হওয়ায় তা আবারও ছড়িয়ে পড়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। ব্যবহূত পলিথিনের স্তূপের কারণে ড্রেনগুলোতে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়। এতে বর্ষার সময় শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পলিথিন মাটিতে মেশে না বলে শস্য ও ফসল জন্মানোর অনুপযোগী করে ফেলে।  পুরনো পলিথিন পুড়িয়ে মণ্ড তৈরি করে এর দ্বারা জর্দার কৌটা ও অন্যান্য প্যাকেজ উপজাত তৈরি করা হয়। এর বিষাক্ত ধোঁয়া পরিবেশ বিপন্ন করে তোলে। খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতর পরিচালক মো. হাবিবুল হক খান বলেন, নিয়মিত অভিযানে পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহারে জরিমানা আদায় করা হয়।

 

সর্বশেষ খবর