মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুই ফ্লাইওভারে বদলে যাবে নগর

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

দুই ফ্লাইওভারে বদলে যাবে নগর

রাজশাহীতে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ হলে বদলে যাবে নগরবাসীর নিত্য দুর্ভোগের চিত্র। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার পাশ থেকে তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

উত্তরাঞ্চলে প্রথমবারের মতো ফ্লাইওভার হচ্ছে রাজশাহীতে। রাজশাহী মহানগরীতে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে সিটি করপোরেশন (রাসিক) ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)। সিটি করপোরেশনের ফ্লাইওভারটি এ বছরের ডিসেম্বরে খুলে দেওয়া হবে। আর আগামী বছর শেষ হচ্ছে আরডিএ’র ফ্লাইওভারটির। এ দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শেষ হলে নগরীর যানবাহন চলাচল ও নাগরিক যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী-নওগাঁ এবং রাজশাহী-নাটোর সড়কের সংযোগ হিসেবে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করছে রাসিক। এই ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে চলাচল করবে দ্রুতগামী যানবাহন। আর নিচ দিয়ে যাতায়াত করবে ট্রেনসহ অন্যান্য গাড়ি। এরইমধ্যে সংযোগ সড়ক ও ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। ঢাকার দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। এ বছরের ডিসেম্বরে ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলছে নির্মাণ কাজ।

নাগরিকরা বলছেন, ফ্লাইওভার নির্মাণের ফলে যানজট যেমন কমবে, তেমনি কম সময়ে মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে পারবে। এ ছাড়া যে নকশায় ফ্লাইওভারটি নির্মিত হচ্ছে, তাতে নগরীর সৌন্দর্যও বাড়বে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, রাজশাহী-নওগাঁ-নাটোর চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এই ফ্লাইওভারটিও নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হবে ২৯ কোটি ২৮ লাখ ৭৭ হাজার ৫৩২ টাকা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, রাজশাহী নগরীর যানজট নিরসন ও নগরবাসীর চলাচলের পথ সহজ করতে তার প্রথম মেয়াদে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এখন কাজটি শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এমবিআইএল-আরই (জেভি)। এ ছাড়া প্রকল্পের অংশ হিসেবে ফ্লাইওভার নির্মাণ করবে ডিয়েনকো লিমিটেড।

মেয়র আরও বলেন, রাসিকের জন্য এটি অনেক বড় কাজ। ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ শুরুর মাধ্যমে নাটোর-নওগাঁ সড়কের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি হতে যাচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। ২০৫০ সালে রাজশাহীর চিত্র মাথায় রেখেই ফ্লাইওভারটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে নকশায় ফ্লাইওভারটি নির্মাণ হচ্ছে তাতে নগরীর সৌন্দর্য অনেক বাড়বে।

২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর কাটাখালীর হরিয়ানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরডিএ’র বাস্তবায়নাধীন ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ১৫৯ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার টাকার এই প্রকল্পটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)-এর মাঝের সড়কে নির্মিত হচ্ছে। সড়কটি তালাইমারী অক্ট্রয়’র মোড় থেকে খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় গিয়ে শেষ হবে।

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল তারিক জানান, ওভারপাস সড়ক ও ফ্লাইওভারের কাজ চলছে। ফ্লাইওভারটি প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার হবে। আর সড়ক পাঁচ কিলোমিটার। ৭০০ মিটার ওভারপাশ। এ ছাড়া ফ্লাইওভারের নিচে থাকবে রাস্তা। পুরো রাস্তা চার লেনের হবে। সড়কের খড়খড়ি এলাকার দিক থেকে কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে নির্মাণ কাজে গতি আনা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর