মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

শয্যা ও জনবল সংকটে রোগীরা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

শয্যা ও জনবল সংকটে রোগীরা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয় পটিয়ার মেহেরআটি গ্রামের নুর উদ্দিনকে। ভর্তির পর দুই দিন পার হলেও ভাগে জোটেনি একটি শয্যা। ওয়ার্ডের বাইরের বারান্দাতেই চলছে চিকিৎসা। প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় রোগীর অবস্থা ভালো হলেও শয্যা না পাওয়ায় কষ্ট ভোগ করে সেবা নিতে হয়েছে তাকে। এভাবে অতিগুরুত্বপূর্ণ নিউরো মেডিসিন বিভাগে চলছে শয্যা সংকট। সংকটের মধ্যেই চলছে সেবা। স্ট্রোক, প্যারালাইসিসসহ নানা রোগ বাড়লেও ওয়ার্ডে বাড়েনি শয্যা। ফলে চরম ভোগান্তি মাড়িয়েই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয় ভর্তি হওয়া রোগীদের। থাকতে হয় ফ্লোর-বারান্দায়। নিউরো মেডিসিন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ ওয়ার্ডে অনুমোদিত শয্যা সংখ্যা ৩০টি। তবে ওয়ার্ডের উদ্যোগে বাড়ানো হয়েছে ৬০টি। বর্তমানে ৯০টি শয্যা থাকলেও প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ১২০ থেকে ১৩০ জন। প্রতিদিন নতুন রোগী ভর্তি হয় ৩০ থেকে ৪০ জন। ওয়ার্ডে শয্যার সঙ্গে আছে জনবল সংকটও। অধ্যাপকের কোনো পদ নেই, সহকারী অধ্যাপকের চারটি পদ থাকলেও একটি শূন্য। নেই সহকারি রেজিস্ট্রার পদ। প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে দুপুর ২টার পর আর কোনো রোগী ভর্তি করা যায় না এ ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডের চিকিৎসায় ভরসা ছয়জন এমডি কোর্সের শিক্ষার্থী এবং দুজন ইন্টারনাল মেডিকেল অফিসার (আইএমও)। সবচেয়ে বড় সংকট আয়া, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর। দুজন (একজন স্থায়ী, একজন আউটসোর্সিং) আয়াকেই তিন শিফটের কাজ করতে হয়। আউটসোর্সিংয়ের তিনজন ওয়ার্ড বয় থাকলেও তা অপ্রতুল। দুজন নিরাপত্তা প্রহরীকে কাজ করতে হয় তিন শিফটে। নিউরো মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. জামান আহমদ বলেন, ‘শয্যার অভাবে স্পর্শকাতর অনেক রোগীকে বারান্দায় চিকিৎসা দিতে হয়। এক্ষেত্রে রোগীরা কিছুটা কষ্ট সহ্য করতে হয়। আমাদের উদ্যোগে ৬০টি শয্যা বাড়ানো হলেও আরও শয্যা দরকার। তবে বেশি সমস্যা হয় পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবে। বিকাল হতেই সবদিকে ময়লা জমে যায়। আমরা চাই, ওয়ার্ডে সেবা বৃদ্ধি পাক। কিন্তু সেবার জন্য দরকার জনবল।’  

চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘এ হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই শয্যা সংকট আছে। তবুও রোগীদের হাসপাতালের বারান্দা, ওয়ার্ডের ফ্লোর ও করিডরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে নতুন করে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ হলে এ সংকট আর থাকবে না।’ গত বুধবার দুপুরে সরেজমিন এ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডের সব শয্যায় রোগী ভর্তি। বাইরের বারান্দায়ও আছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন। প্রচন্ড গরমে রোগীদের ত্রাহি অবস্থা। অনেক রোগীকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে হচ্ছে। ফ্লোরে হওয়ায় চিকিৎসকদেরও অনেক ধকল মাড়িয়ে রোগীদের সেবা দিতে হয়।

সর্বশেষ খবর