মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

নগরে অপরিকল্পিত ৯০ ভাগ ভবন

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

নগরে অপরিকল্পিত  ৯০  ভাগ ভবন

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) ও অবৈধ ভবন মালিকদের মধ্যে লুকোচুরি খেলা চলছে। গত ৪ এপ্রিল নকশাবহির্ভূত কুমিল্লা নগরীর নয়টি ভবনের কাজ বন্ধ করে দেয় কুসিক। পরে ওই নয়টিসহ ১৯টি ভবনে লাল নোটিস লাগানো হয়। নোটিসে লেখা হয়- ‘ভবনটি নকশাবহির্ভূত। এটি থেকে সাবধান থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

নোটিস লাগানোর পর কাজ বন্ধ করতে বলা হয়। তবে নোটিস লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের ওপর পর্দা দিয়ে ঢেকে দেয় ভবন মালিকরা। পরে পর্দার ভিতরে থাকা নোটিসও সরিয়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে নাগরিকদের মন্তব্য, কুসিক লোক দেখানো নোটিস লাগিয়েছে। কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে এমআরসির নির্মাণাধীন ভবনের নোটিস ও কুসিক কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে গোল্ড সিলভার হোমসের নির্মাণাধীন একটি ভবনে লাগানো নোটিস সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সূত্রমতে, সিটি করপোরেশন এলাকায় ভবনগুলোর ৯০ ভাগই নকশাবহির্ভূত। কোনোটি পাঁচতলার অনুমোদন নিয়ে সাততলা করা হয়েছে। কোনোটির গাড়ির পার্কিংয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রথম তলা নিজের ভূমির ওপরে করলেও দ্বিতীয় তলা থেকে ড্রেন ও রাস্তার দিকে বাড়িয়ে করা হয়েছে। ৪ এপ্রিল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে সিটি মেয়র বিভিন্ন অবৈধ ভবনের কাজ বন্ধ করে ভবন মালিককে ভর্ৎসনা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ট্রমা হাসপাতালের মালিক ডা. আবদুল হককে পার্কিং স্থানে ডাক্তারের চেম্বার বসানোর জন্য তিরস্কার করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে সেটি সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশও দেন। তবে সেটি এখনো সরেনি। সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, সিটি করপোরেশনের কাজগুলো দায়সারাগোছের।

তারা নিজেরাই ড্রেন ও সড়ক দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে। বিশেষ করে টাউন হলের লাগোয়া নিউ মার্কেট এলাকার মার্কেটটি ও সিংহ প্রেসের বিপরীতের মার্কেটটি। এদিকে ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, এসবি প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে একসময় খুব তোড়জোড় শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। করপোরেশনের কর্মকর্তারা মাঠে তদারকি করলে এসব অবৈধ ভবন নির্মিত হতো না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম বড়–য়া বলেন, আমরা ১৯টি ভবনে নোটিস লাগিয়েছি। তাদের বলা হয়েছে, বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেললে কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। এরকম ১২৯টি ভবনে নোটিস টানানো হবে। সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমরা কোনো নকশাবহির্ভূত ভবনকে আর ছাড় দেব না। যারা বাড়তি কাজ করেছেন তাদের ১৪ জনকে বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। না হলে আমরা ভেঙে ফেলব ও জরিমানা করা হবে। তিনি বলেন, নগরীর ৯০ ভাগ ভবন অপরিকল্পিত।

 

সর্বশেষ খবর