মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

জুলাইয়ে নামবে লাল-সবুজ অটোরিকশা

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘নগরীতে অটোরিকশাগুলো চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় নতুন করে আর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না।

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

জুলাইয়ে নামবে লাল-সবুজ অটোরিকশা

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে সোনাদীঘি মোড়ের দূরত্ব মাত্র ২০০ মিটার। এই ২০০ মিটার দূরত্বে রিকশা অথবা মোটরসাইকেলে যেতে সময় লাগে কমপক্ষে ২০ মিনিট। স্কুল ছুটি হলে সময় আরও বেড়ে যায়। কারণ নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে চলাচল করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।

নগরবাসীর এই দুর্ভোগ কমাতে এবার নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীতে চলাচল করা অটোরিকশাকে দুই ভাগে ভাগ করে লাল ও সবুজ রঙে বিভক্ত করা হবে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন পরিষদের চতুর্থ সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। নগরভবন সিটি হলরুমে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় পয়লা জুলাই থেকে দুই শিফটে লাল-সবুজ রঙের ইজিবাইক/ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল চালু করা হবে। সরু চাকার রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা, পথচারী সড়ক চালু করা, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সড়কে একমুখী যান চলাচলকরণের ব্যাপারে আলোচনা হয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে বাড়াচ্ছে দুঃসহ যানজট। কোনো নিয়ম-কানুন ছাড়াই নগরীর রাস্তায় চলছে ২০ হাজারের বেশি অটোরিকশা। সিটি করপোরেশন (রাসিক) এগুলো চলাচলের লাইসেন্স দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক বিভাগের বক্তব্য, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যানবাহনের ক্যাটাগরিতে না পড়ায় এগুলোর বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। নগর ট্রাফিক বিভাগের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নগরীতে সিএনজিচালিত হিউম্যান হলার আছে প্রায় এক হাজার। এগুলো দাঁড় করানোর জন্য নগরীতে নির্ধারিত কোনো স্ট্যান্ড নেই। ফলে যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা এবং পার্কিং করার কারণে যানজট বাড়ছে। একই অবস্থা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বেলায়। সকাল থেকে নগরীর সাহেববাজারসহ প্রধান প্রধান বিপণিবিতানগুলোর সামনে এ অবস্থা আরও প্রকট। আলুপট্টি থেকে মনিচত্বর ও জিরোপয়েন্ট থেকে রেলগেট পর্যন্ত রাস্তায় চলাচলকারীরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছেন। জিরোপয়েন্টের রাস্তায় ওয়ানওয়ে করেও লাভ হচ্ছে না। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে যানজট বেড়ে যাওয়ায় সড়কের মাঝে ব্যারিকেড দিয়ে ওয়ানওয়ে চালু করে ট্রাফিক পুলিশ। জিরোপয়েন্ট হয়ে আর ইউটার্ন নেওয়ার সুযোগ না থাকায় কলেজিয়েট স্কুলের কাছে গিয়ে অটোরিকশাসহ অন্য বাহনগুলোকে ইউটার্ন নিতে হয়। কলেজিয়েট স্কুলের সামনে রাস্তা সরু হওয়ায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ সড়কের যানজট আর ছাড়ে না। স্কুল ছুটি হওয়ার সময় এ যানজট আরও তিব্র হয়। নগরীর সাহেববাজার ছাড়াও নিউমার্কেট, কামারুজ্জামান চত্বর, লক্ষ্মীপুর মোড়, বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেও সব সময় থাকে যানজট। নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী সোহেল রানা জানান, শুধুমাত্র ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো নিয়ম-কানুন না মেনে চলাচল করায় রাস্তার যানজট কমছে না। পুলিশও তাদের কিছু বলে না। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘নগরীতে অটোরিকশাগুলো চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় নতুন করে আর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না। তবে তাদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। জুলাই থেকে নগরীতে লাল-সবুজ রঙে চলাচল করবে। ফলে যানজট কমবে।’

সর্বশেষ খবর