মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

শালবন ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

শালবন ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা

কুমিল্লার প্রাকৃতিক শালবনগুলো ঘিরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্র। বিশেষ করে কুমিল্লা সীমান্ত এলাকায় তিনটি এবং কোটবাড়িতে একটি প্রাকৃতিক শালবন রয়েছে। বেঞ্চ, ওয়াচ টাওয়ার, শৌচাগার আর নিরাপত্তা বাড়ানো গেলে এসব পর্যটনকেন্দ্র দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এদিকে প্রাকৃতিক শালবন ঘিরে জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র মতে, কুমিল্লা সদর উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া জামবাড়িতে ১৩৮ একর বনভূমি রয়েছে। তার মধ্যে প্রাকৃতিক শালবন ২৭ একর। সদর দক্ষিণ উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া রাজেশপুর এলাকায় মোট বনভূমি রয়েছে ৫৮৭ একর, তার মধ্যে ৩০৬ একর প্রাকৃতিক শালবন রয়েছে। একই উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া যশপুর এলাকায় রয়েছে ৪৫৫ একর বনভূমি, তার মধ্যে প্রাকৃতিক শালবন ২৫০ একর। কোটবাড়ী এলাকায় মোট বনভূমি ৫০০ একর, তার মধ্যে প্রাকৃতিক শালবন রয়েছে ১৫ একর।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাজেশপুর ফরেস্ট বিটে টিকিটের মাধ্যমে দশনার্থীদের দেখার সুযোগ রয়েছে। এর সবুজ প্রকৃতি ও পাখির কলতানে মুখর পরিবেশ দর্শনার্থীকে বিমোহিত করবে। তবে আবাসিক স্থাপনাগুলো উন্নত করলে দর্শনার্থীদের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। জামবাড়ি বনভূমির সীমান্ত এলাকা নাম না জানা পাখির কলতানে মুখর থাকে। এখানে কিছু দর্শনার্থী নিজ উদ্যোগে ঘুরতে আসে। বনভূমির অফিস ও স্টাফ কোয়ার্টার ভেঙে পড়ে আছে। জামবাড়ি এলাকার স্থানীয়রা এটাকে গরু-ছাগলের খোয়াড় বানিয়ে রেখেছে। কর্মকর্তারা অফিসে অবস্থান নিয়ে প্রত্যক্ষ তদারকি করতে না পারায় বনভূমি ও সম্পদ হুমকির মুখে রয়েছে।

কুমিল্লা বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার স. ম. সফিকুর রহমান জানান, পৃথিবীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রাকৃতিক শালবনের গুরুত্ব রয়েছে। প্রাকৃতিক শালবন রক্ষা নিয়ে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের একটি সংগঠন রয়েছে। কারণ প্রাকৃতিক শালবনের প্রতিটি গাছ অন্য সাতটি গাছের সমান অক্সিজেন সরবরাহ করে।

জীববৈচিত্র্য বিষয়ক সংগঠন কুমিল্লার ওয়াইল্ড ওয়াচ ইনফোর সাধারণ সম্পাদক জামিল খান বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কিছু বন্য ফল গাছ সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রাণীদের প্রজননের জন্য ঝোপের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে রাজেশপুর এলাকায় বেতজাতীয় কিছু উদ্ভিদ রয়েছে। এগুলো অন্য এলাকায়ও ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এসব বিষয়ে বন বিভাগের সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা প্রয়োজন।

কুমিল্লা সামজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, আমাদের জনবলের সংকট রয়েছে। তবুও বনভূমি তদারকি করার জন্য বিট অফিসাররা তৎপর রয়েছেন। এদিকে কুমিল্লার বনভূমি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে পর্যটন বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সরকারের রাজস্ব  আয় বাড়বে।

 

সর্বশেষ খবর