মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্দর সংযোগী রাস্তায় নরকযন্ত্রণা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বন্দর সংযোগী রাস্তায় নরকযন্ত্রণা

চট্টগ্রাম নগরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পোর্ট কানেকটিং রোড। এ সড়ক দিয়েই দেশের অর্থনীতির প্রাণ চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য বহনকারী যানবাহন যাতায়াত করে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিরই এখন বেহাল অবস্থা। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নিয়েই গত দুই বছর পার করেছে এই সড়ক ব্যবহারকারী পথচারী, যানবাহন, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সড়কটি সংস্কার ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা হয়নি। এখনো চলছে সড়ক সংস্কারের কাজ। সড়কটির নাম ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সড়ক’ নামকরণ করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে বলে জানা যায়। সরেজমিন দেখা যায়, এ সড়কের সরাইপাড়ার এলাকার কোথাও একপাশ বন্ধ, কোথাও সংস্কার কাজ চলছে, কোথাও চরম বেহাল অবস্থায়, কোথাও দীর্ঘদিন ধরে অচল পড়ে থাকা যানবাহনের ভাগাড়। যানবাহন চলাচলের অংশটিতেও ছোট-বড় গর্তে ভরপুর। একপাশ বন্ধ রাখার কারণে লেগে থাকে যানজট। চরম ঝুঁকি নিয়েই চলছে যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ি। বন্দরগামী ভারী ট্রাক, ট্রেইলার, কাভার্ডভ্যানগুলো চলছে ঢেউয়ের তালে। সাগরিকা মোড় থেকে নয়াবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে ভারী যানবাহন ও যন্ত্রপাতি রেখে সড়কের দুপাশের বেশিরভাগ দখল করে রাখা হয়েছে। বর্ষায় থাকে কাদা মাটি ও পানি এবং শুষ্ক মৌসুমে থাকে ধুলোবালির যন্ত্রণা। সরাইপাড়া এলাকার ট্রাক গ্যারেজের মেকানিক আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি নিয়ে কষ্টে আছি। বর্ষায় রাস্তায় খানাখন্দকগুলোতে পানি জমে থাকায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে, শুষ্ক মৌসুমে থাকে ধুলোবালি।’ চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, ‘বর্ষার কারণে কার্পেটিং কাজ করতে সমস্যা হয়। তবে নয়াবাজার থেকে পূর্ব অংশের কাজ শেষ করা হয়েছে। অবশিষ্ট কিছু কার্পেটিংয়ের কাজ কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হবে। তাছাড়া নয়াবাজার থেকে পশ্চিম অংশের একটি প্যাকেজের কাজ সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে। প্রকল্পটি জাইকার কনসালটেন্টরা মনিটরিং করছেন।’ চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু সড়ক’ সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন টেকসই করতে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। এর মধ্যে  নিমতলা থেকে আনন্দপুরী গেট পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকা, আনন্দপুরী গেট থেকে মাজার গেট পর্যন্ত ৪২ কোটি টাকা এবং মাজার থেকে অলংকার মোড় পর্যন্ত ২৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৫ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১২০ ফুট প্রস্থের পোর্ট কানেক্টিং সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর। প্রকল্পের কার্যাদেশ ছিল ৩৬৫ দিনের। কিন্তু যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়। কিন্তু কাজের ধীর গতির কারণে আগামী নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর