মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পোল ঢেকেছে তারের কুন্ডলী

নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, আলুপট্টি মোড়, রানীবাজার, লক্ষ্মীপুর মোড়, কোর্ট চত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মোড়গুলো ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি পোলেই বিদ্যুতের তারের চাইতে অন্যান্য তারের জটলা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

পোল ঢেকেছে তারের কুন্ডলী

রাজশাহী নগরীর বিদ্যুতের পোলগুলো এখন অনেকটাই খেয়ে ফেলেছে তারে তারে। তারের কু-লীতে ঢাকা পড়েছে পোলগুলো। নিয়ম অমান্য করে বিদ্যুতের পোলজুড়ে অন্যান্য তারের জটলায় বাড়ছে ঝুঁকি। শুধু তাই নয়, মাঝে মধ্যেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অপরিকল্পিতভাবে পোলের সঙ্গে জড়িয়ে রাখা তারগুলোর কারণে শর্টসার্কিটের সৃষ্টিও হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকছে। এ বিষয়ে নীতিমালা না থাকায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছাড়াও পাড়া-মহল্লার ভিতর দিয়ে স্থাপন করা বিদ্যুতের পোলগুলোর সব এমনই দশা। নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, আলুপট্টি মোড়, রানীবাজার, লক্ষ্মীপুর মোড়, কোর্ট চত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মোড়গুলো ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি পোলেই বিদ্যুতের তারের চাইতে অন্যান্য তারের জটলা। এই তারগুলোর বড় অংশ ক্যাবল ও ইন্টারনেট লাইনের। এ ছাড়া টেলিফোনের তারও আছে। কোন তার কীভাবে প্যাঁচানো আছে তা বোঝারও উপায় নেই। এভাবে এলোমেলো করে এক পোল থেকে অন্য পোলে তার জড়িয়ে শহরজুড়ে বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। কোনো কোনো পোলে তারগুলোর বর্ধিত অংশ গোল করে  পেঁচিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কোনো কোনো পোলে লাগান হয়েছে টিনের বাক্স। সেগুলোতে অবৈধভাবে পোল থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে দেওয়া হয়েছে সংযোগ।
এদিকে এই তারগুলো থেকে মাঝে মধ্যেই শর্টসার্কিট হচ্ছে। অনেক সময় ট্রান্সফরমারের সঙ্গে লেগে ট্রান্সফরমারে আগুন ধরছে। নষ্ট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র। আবার অনেক ক্ষেত্রে এই আগুন আশপাশের বাড়ি বা দোকানে ছড়িয়ে পড়ছে। এমন দুর্ঘটনা অন্যান্য সময়ের পাশাপাশি বর্ষা ও গ্রীষ্মকালে বেশি ঘটছে। এতে করে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রাংশ তেমনি দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতায় আছে গ্রাহক ও পথচারী।
রাজশাহীর নেসকোর সার্কেল-১ এর পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণ বিভাগের প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন বলেন, ‘এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের তারের সঙ্গে অন্যান্য সার্ভিস প্রোভাইডারদের কেবলের কারণে একদিকে যেমন আমাদের গ্রাহকরা নিরবচ্ছিন্ন সেবা পাচ্ছে না। তেমনি এসবের কারণে পথচারীদের ঝুঁকি বাড়ছে ও রাষ্ট্রায়ত্ত যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে।’ তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এই তারগুলোর কারণে একদিকে যেমন ঝুঁকি বাড়ছে, ঘটছে দুর্ঘটনা, তেমনি নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। তবে এই তারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নাগরীকদের বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। তাই সব দিক বিবেচনায় খুব শিগগিরই তারগুলো মাটির নিচে অর্থাৎ আন্ডার গ্রাউন্ড করার ব্যবস্থা করা হবে। এনিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা চলছে।

 

সর্বশেষ খবর