মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাজে আসছে না পানি শোধনাগার

যত সমস্যার কথা বলা হয়েছে আসলে অত সমস্যা নেই। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, নগরীর পানির সমস্যা আছে ঠিকই। কিন্তু নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়া পানি শোধনাগার দিয়ে কী হবে? সম্পূর্ণ চালু অবস্থায় বুঝিয়ে দিলে আমরা শোধনাগারটি গ্রহণ করতে পারি।

রাহাত খান, বরিশাল

কাজে আসছে না পানি শোধনাগার

বরিশাল নগরীর সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নগরীর দুই প্রান্তে দুটি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হলেও গত চার বছরেও নগরবাসীর কোনো উপকারে আসেনি। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় এর অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় একটি শোধনাগারের বেশিরভাগ কীর্তনখোলা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে শোধনাগার দুটি চালু না হওয়ায় গভীর নলকূপ দিয়ে পানি তোলায় চাপ বাড়ছে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর।

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) পানি বিভাগ জানায়, নগরীর বাসিন্দাদের জন্য প্রতিদিন ৫ কোটি ৪০ লাখ লিটার পানি প্রয়োজন। করপোরেশন থেকে সরবরাহ হচ্ছে ২ কোটি ৬০ লাখ লিটার। দিনে ঘাটতি হচ্ছে ২ কোটি ৮০ লিটার। ঘাটতি মেটাতে নগরীতে দুটি পানিশোধনাগার স্থাপন করা হলেও তা নগরবাসীর কাজে আসছে না। যথাযথভাবে নির্মাণ না হওয়ায় এই দুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে মাটির নিচে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। নগরের অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, বরিশাল নগরীর পানির চাহিদা পূরণের জন্য নগরীর পলাশপুর এবং রূপাতলী এলাকায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে দুটি পানিশোধনাগার নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর নগর ভবনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিদ্যুৎ সমস্যাসহ নানা কারণে হস্তান্তরে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হয়। গত বছর ২৫ এপ্রিল একটি এবং ৭ আগস্ট দ্বিতীয় প্লান্টের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু এখনো শোধনাগার দুটি চালু হয়নি।

বিসিসির পানি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির জানান, পানি শোধনাগার নির্মাণের পর সেটি করপোরেশনের কাছে বুঝিয়ে দিতে ৮ থেকে ১০ বার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যথাসময় তারা সেটি বুঝিয়ে দিতে পারেনি। গত এক বছর আগে যখন সাবেক মেয়রকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তখন সেখানে নানা সমস্যা দেখা দেয়। পলাশপুরের প্লান্টের মোটর নষ্ট। সংস্কার করেও তারা ১২-১৩ দিনের বেশি চালাতে পারেনি। অন্যদিকে রূপাতলী প্লান্টে নদীর মধ্যের পন্টুনের ৪টির ৩টা নষ্ট। ইউনিটের দ্বিতীয় ফ্লোর দিয়ে পানি লিক করে। পন্টুনে যাওয়ার সিঁড়ি নেই। মাপার মিটার নষ্ট। স্কেল নষ্ট, ড্রেনের পাইপের ডেলিভারি পাইপের মোটর নষ্ট। সুইচ বালবে পানি লিক করে। এত সমস্যা নিয়ে প্লান্ট দুটি বুঝে নিলে সিটি করপোরেশন এই দুটো চালাতে পারবে না। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল হাসান বলেন, একটি প্লান্ট ২০১৫ সালে এবং অন্যটি ২০১৬ সালের জুনে নির্মাণ শেষ হলেও দুটি বুঝে নেয়নি করপোরেশন।

যত সমস্যার কথা বলা হয়েছে আসলে অত সমস্যা নেই। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, নগরীর পানির সমস্যা আছে ঠিকই। কিন্তু নদীর ভাঙনে বিলিন হওয়া পানি শোধনারগার দিয়ে কি হবে? সম্পূর্ণ চালু অবস্থায় বুঝিয়ে দিলে আমরা শোধনাগারটি গ্রহণ করতে পারি।

সর্বশেষ খবর