মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মশা প্রজনন কেন্দ্র শ্যামাসুন্দরী খাল

রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

মশা প্রজনন কেন্দ্র শ্যামাসুন্দরী খাল

রংপুর নগরীর ভিতর দিয়ে বয়ে চলা শ্যামাসুন্দরী খালটি মৃতপ্রায়। নগরীর ঐতিহ্যবাহী এ খালটি সংস্কারে কয়েকবারে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও এতে নেই কোনো পানি প্রবাহ। খাল খননের নামে চলছে শুধু লুটপাটের মহোৎসব। খালটি প্রায় ভরাট হয়ে ময়লা-আবর্জনা, ঝোপ-জঙ্গলে ভরপুর হয়ে সেখানে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। আর এখান থেকেই ছড়াচ্ছে নগরজুড়ে মশা ও মাছি। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নদী বিশেষঞ্জ তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন , শ্যামাসুন্দরী খালটি ঐতিহ্য হারিয়ে এডিস মশা প্রজননের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। এজন্য সিটি করপোরেশনই দায়ী বলে মনে করেন তিনি। শ্যামাসুন্দরী খালের দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার। এটি নগরের উত্তর-পূর্ব দিকে সিও বাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মাহিগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, খালটি খনন, সংস্কার, পাড় নির্মাণ ও এটির ওপর তিনটি সেতু নির্মাণ বাবদ ২০১২ সালে ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। এরও আগে ২০০৮-০৯ সালে খালটি সংস্কারে আরও ১২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু মানুষের বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলতে ফেলতে খালটি আর খাল নেই। ঝোপ-জঙ্গলে ভরে মশা-মাছির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। আর এখান থেকে জন্ম হচ্ছে প্রতিনিয়তই মশার।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, এই খাল সংস্কার করা নিয়ে ইতিপূর্বে অনেক মানববন্ধন-সমাবেশ হয়েছে। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খালের পেছনে অনেক টাকাও ব্যয় হয়েছে। খালকে ঘিরে হয়েছে বড় ধরনের লুটপাট। কিন্তু খালটি ভরাট হয়ে একেবারে মরতে বসেছে। এটি রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর সদর হাসপাতালের পিছনে ইঞ্জিনিয়ারপাড়া সেতুর কাছ থেকে কামারপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ বেশি বেহাল। এ অংশে কাদা আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সেই সঙ্গে ঝোপ-জঙ্গলে ভরপুর। ময়লা পানিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কেরানীপাড়া এলাকায় খালজুড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। কিছু কিছু জায়গায় কাদাপানি। পানিতে মশা গিজ গিজ করছে। ডিসির মোড়ের পাশে খাল সংস্কার হলেও তা ভেস্তে গিয়ে খালের পানি জমাট বেঁধে আছে। কেরানীপাড়া এলাকার আরমান হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন খাল সংস্কার করলেও পর্যায়ক্রমে সেই খালেই লোকজন ময়লা ফেলছে। প্রতিবছর এই খাল পরিষ্কার করা দরকার। কিন্তু সিটি করপোরেশন তা করছে না। জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এই খাল সংস্কার করে ঐতিহ্য ফিরে আনতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এতে  সময় লাগবে। তিনি নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়ে খালের মধ্যে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

 

সর্বশেষ খবর