মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

এক্সেস রোডে ‘জান যায়’

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

এক্সেস রোডে ‘জান যায়’

সরেজমিন দেখা যায়, বড় আকারের বাস চলছে হেলিয়ে দুলিয়ে, কখনো বা একপাশে কাত হয়ে। পণ্যবাহী ট্রাক ও লরিও চলছে হেলিয়ে-দুলিয়ে। ধুলোবালির অবস্থা এমন যে, একটি বাস যাওয়ার পর পেছনে মনে হয় কেউ ধোঁয়া ছেড়েছে। রিকশা বা অটোরিকশা চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। যানবাহনের যাত্রীরা দুর্ঘটনার শঙ্কা এবং গাড়ি উল্টে যাওয়ার আতঙ্ক নিয়েই চলাচল করেন।

চট্টগ্রাম নগরের এক্সেস রোডে যানবাহন চলে হেলিয়ে-দুলিয়ে। রিকশা-অটোরিকশা তো দূরের কথা বাস-ট্রাকও চলাচল করা দায়। ছোট যানবাহনে চলাচল করলে ‘জান যায় যায়’ অবস্থা। গত প্রায় চার বছর ধরে এমন চরম দুরাবস্থা চলে এলেও এর প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী জনগণ। বৃষ্টি হলেই বাড়ে অতি মাত্রায় দুর্ভোগ। সড়কের অধিকাংশ এলাকা এখনো ভাঙাচোরা। ছোট-বড় গর্তে জমে থাকে পানি। রোদ উঠলেই থাকে ধুলোবালির যন্ত্রণা।     

এক্সেস রোডের আশপাশের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত  প্রায় চার বছর ধরেই আমরা এ সড়কটি নিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছি। প্রায় দুই বছর আগে থেকে সড়কটির উন্নয়নকাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। কারণ কাজ চলছে ঢিমেতালে, চরম ধীর গতিতে।’

এক্সেস রোডের ব্যবসায়ী মঈনুদ্দিন চৌধুরী হালিম বলেন, পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলের মতো বড় প্রকল্পও চলছে দ্রæত গতিতে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এক্সেস রোডের কাজ শেষ হচ্ছে না। এটি বড় দুর্ভাগ্যের।’ 

জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ২ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এক্সেস রোডের উন্নয়নে ৪৮ কোটি ৯৬ লাখ  ৬৬ হাজার ৮৪৮ টাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও মেসার্স রয়েল অ্যাসোসিয়েটকে (জেভি) নিয়োগ দেয়। তখন কার্যাদেশের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৯ সালের জুন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদার কাজ শেষ করেনি। গত ১৩ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করেনি। গত জুন মাসের অগ্রগতি প্রতিবেদন মতে ৬২ শতাংশ কাজ শেষ হয় বলে জানা যায়। সিটি গভর্নেন্স প্রজেক্টের (ব্যাচ-২) আওতায় জাইকার অর্থায়নে চসিকের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর চসিক মেয়র সড়কটির উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেছিলেন। 

চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ বলেন, ‘এক্সেস রোড উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ড্রেনের কাজ শেষ হয়েছে এবং মিডআইল্যান্ডের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। তাছাড়া সড়কের একপাশে এক হাজার ৭০০ ফুট কারপেটিং কাজ শেষ হয়েছে। বৃষ্টির জন্য কারপেটিং কাজ শেষ করা যায়নি। সবমিলিয়ে এক্সেস রোডের কাজ ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে ঠিকাদার আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।’

সরেজমিন দেখা যায়, বড় আকারের বাস চলছে হেলিয়ে-দুলিয়ে, কখনো বা একপাশে কাত হয়ে। পণ্যবাহী ট্রাক ও লরিও চলছে হেলিয়ে-দুলিয়ে। ধুলোবালির অবস্থা এমন যে, একটি বাস যাওয়ার পর পেছনে মনে হয় কেউ ধোঁয়া ছেড়েছে। রিকশা বা অটোরিকশা চলাচলের  কোনো সুযোগ নেই। যানবাহনের যাত্রীরা দুর্ঘটনার শঙ্কা এবং গাড়ি উল্টে যাওয়ার আতঙ্ক নিয়েই চলাচল করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর