মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জেব্রা ক্রসিং কেউ মানে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

জেব্রা ক্রসিং কেউ মানে না

রাজধানীর জেব্রা ক্রসিংগুলোকে যথাযথ ব্যবহার করা গেলে সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ড্রাইভার বা পথচারী কেউই জেব্রা ক্রসিংয়ের নিয়মনীতি মানে না। গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থী আন্দোলনের পর জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারে কিছুটা নজর দেওয়া হয়। বিদ্যমান জেব্রা ক্রসিংগুলো রং করা হয়। নতুন করে বিভিন্ন জায়গায় জেব্রা ক্রসিং চিহ্নিত করা হয়। প্রত্যাশা ছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও যাত্রীদের সচেতনতায় জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারের সুফল মিলবে। রাস্তা পারাপারে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কিন্তু সেই জেব্রা ক্রসিংয়ের নিরাপদ সাদা-কালো পিচের ওপরই লাল তাজা রক্তের ছাপ রাঙিয়ে গত মার্চে খুন করা হলো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীকে। এরপর সুপ্রভাত স্পেশাল সার্ভিসের বাসগুলো নিজ নামে রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়েছে। এখন চলছে ভিক্টর ক্লাসিক নামে। এই হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে অন্তত জেব্রা ক্রসিংয়ে রাস্তা পারাপার নিরাপদ হবে- এমন প্রত্যাশা করেছিল নগরবাসী। কিন্তু জেব্রা ক্রসিংয়ের অরাজকতা বন্ধ হয়নি। 

বাস্তবতা হলো, ড্রাইভাররাই সড়ক শৃঙ্খলার মূল ব্যক্তি। সেই ড্রাইভারদের মধ্যে সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ সৃষ্টি না হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো খুবই কঠিন। 

দেড় কোটি মানুষের রাজধানীতে অফিস এবং স্কুল শুরু ও শেষের সময় রাস্তায় গিজ গিজ করে মানুষ। একসঙ্গে অনেক মানুষ যখন ফুটপাথ-ফুটওভারব্রিজ রেখে রাস্তা দিয়ে এলোমেলোভাবে হাঁটে তখন সড়ক নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকে। দীর্ঘ অনভ্যস্ততায় পথচারীরা ভুলেই গেছেন জেব্রা ক্রসিংয়ের সঠিক ব্যবহার। যানবাহনের ফাঁকে ফাঁকে ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পার হন তারা। অন্যদিকে ড্রাইভাররাও জেব্রা ক্রসিংয়ে গাড়ি থামাতে চান না। পথচারী পার হচ্ছেন দেখেও দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে যেতে চান তারা। ড্রাইভারদের এই প্রবণতারই নির্মম বলি হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। নগরীতে বেশিরভাগ জায়গায় সিগন্যালের জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপর গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বাস্তবতা হলো, ড্রাইভাররাই সড়ক শৃঙ্খলার মূল ব্যক্তি। সেই ড্রাইভারদের মধ্যে সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ সৃষ্টি না হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো খুবই কঠিন। 

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পথচারীদের রাস্তা পারাপারে কোন জায়গাগুলোতে ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সেখানকার ফুটপাথগুলো ঢালু করতে হবে। শুধু জেব্রা ক্রসিং তৈরি করলে হবে না, তার আগে সীমারেখা টেনে গাড়ি

থামানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পথচারী কতক্ষণ ধরে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে পার হতে পারবেন সেই সময় নির্ধারণ করতে হবে। এর পাশাপাশি কতক্ষণ পর পর মানুষের পারাপারের জন্য জেব্রা ক্রসিংয়ে গাড়ি দাঁড়াবে সেটাও সিগন্যালের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দিতে হবে। গাড়ি সীমারেখা লঙ্ঘন করলে কঠোর জরিমানার ব্যবস্থা রাখতে হবে। জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে এই উদ্যোগগুলো নিলে মানুষের আগ্রহ বাড়বে, কমবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

 

সর্বশেষ খবর