মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

অশেষ ভোগান্তি পাসপোর্ট অফিসে

আফজাল, টঙ্গী

অশেষ ভোগান্তি পাসপোর্ট অফিসে

সকাল ১০টা। পাসপোর্ট করার জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে লাইনে দাঁড়ান টঙ্গী বাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী আবদুল জলিল। মেয়াদোত্তীর্ণ আগের পাসপোর্ট ও নতুন কাগজপত্র নিয়ে জমা দিলেন কর্মরত এক কর্মকর্তার হাতে। তিনি কাগজপত্র দেখে বললেন, কাগজপত্র ঠিক নেই। এ নিয়ে গ্রাহক আবদুল জলিল ও অফিস কর্মকর্তার সঙ্গে কিছুটা বাগ্বিতন্ডা দেখা দেয়। একপর্যায়ে কাগজপত্র জমা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন অফিস কর্মকর্তা। এমন সময় দালাল চক্রের এক সদস্য আবুল খায়ের দৌড়ে এসে বলল, ‘কী হইছে ভাই’? গ্রাহক বললেন, ‘ভাই আমি আগে পাসপোর্ট করেছি কোনো ঝামেলা হয়নি। এখন বলছে আমার কাগজপত্র ঠিক নেই।’ পরে দালাল আবুল খায়ের নিজে কাগজপত্র দেখে বলল, ট্রেড লাইসেন্সের কাগজটা নেই, এটা তো দেওয়া দরকার, আচ্ছা দেখি কী করা যায়। পরে ওই দালাল বলল, ১৫০০ টাকা দেন, আমি সব ঠিক করে দিচ্ছি। গ্রাহক আবদুল জলিল হয়রানির হাত থেকে রেহাই পেতে খায়েরকে ১২০০ টাকা আর কাগজপত্র দিলে সে কাগজপত্রগুলো জমা দিয়ে দেয়। এ চিত্র প্রতিদিনের। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অফিসের প্রতিটি টেবিলে টাকা দিলে সব ঠিক, না দিলে নানা সমস্যা। বর্তমানে গাজীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন শত শত গ্রাহক। সেবার নামে চলছে প্রতারণা, অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৌশলে কামিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এ ছাড়া অফিসের পাশে কম্পিউটার দোকান যেমনÑ সানিম কম্পিউটার, ফাহিম কম্পিউটার, প্রধান কম্পিউটারসহ বেশ কয়েকটি কম্পিউটার দোকানের লোকজন বিভিন্ন চিকিৎসকের নামে জাল সিল বানিয়ে পাসপোর্টের আবেদনপত্র প্রকাশ্যে সত্যায়িত করে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। এক আবেদনকারী আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, এই তো পাশের কম্পিউটার দোকানের ওরাই টাকার বিনিময়ে আবেদনের ফরম পূরণ করে সত্যায়িত করে দিয়েছে। এ বিষয়ে দালাল চক্রের সদস্য আবুল খায়েরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে গাজীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, জাল সিল দিয়ে আবেদনপত্র সত্যায়িত করছে এ বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলব। তবে কেউ আবেদনকারীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। ভুক্তভোগীকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সর্বশেষ খবর