মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মিলনায়তনের জন্য শতবর্ষের অপেক্ষা

রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

মিলনায়তনের জন্য শতবর্ষের অপেক্ষা

রংপুর নগরীর লালবাগে অবস্থিত উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারমাইকেল কলেজে শত বছরেও নির্মিত হয়নি মিলনায়তন। চারতলা ভিতের ওপর একটি ভবনের একতলার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভবনটির দোতলায় মিলনায়তন হওয়ার কথা। মিলনায়তন না থাকায় প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর এ প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কলেজে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। শহর থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণে কারমাইকেল কলেজের অবস্থান। ১৯১৬ সালে কলেজ  ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। বর্তমানে কলেজের প্রধান ভবনের একটি কক্ষ মিলনায়তন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এ কক্ষে এখন পাঠদান ও পরীক্ষা নেওয়া হয়।

এত বড় একটি কলেজে নানা অনুষ্ঠানের জন্য নেই কোনো মিলনায়তন। কলেজের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিমে একটি মুক্তমঞ্চ রয়েছে। সেখানে সব ধরনের বড় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কিন্তু বৃষ্টি ও শীতের কারণে সব সময় মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কলেজের প্রধান ভবনের বাংলা বিভাগের পাশে পুরনো একটি ছোট্ট জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানেও আবার ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ কারণে যে কোনো অনুষ্ঠান করতে বিভিন্ন বিভাগ ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ সম্পর্কে কারমাইকেল স্পন্দন নাট্যগোষ্ঠীর  সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, মিলনায়তন না থাকায় ভালো মঞ্চনাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয় না। মিলনায়তনের অভাবে কলেজের নাটক শহরের টাউন হল মঞ্চে করতে হয়। এটা কষ্টের ব্যাপার।

রংপুর শিক্ষা ও প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৪ ও ২০০৬ সালে দুই দফায় দরপত্রের মাধ্যমে কারমাইকেল কলেজে চারতলা ভবনের কাজ শুরু হয়। ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনের ভিত দেওয়া হয়। পরে একতলা পর্যন্ত নির্মাণ হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভবনের নিচতলায় কলেজ গ্রন্থগার হয়েছে। দোতলায় এক হাজার আসনবিশিষ্ট মিলনায়তন এবং তিন ও চারতলায় শ্রেণিকক্ষ হওয়ার কথা। কিন্তু একতলার কাজ শেষ হওয়ার পর আর ভবন নির্মাণের কাজ এগোয়নি। তবে ভবনের কাজ আবার শুরু করার জন্য গত বছর মে মাসে এবং চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দফায় রংপুর শিক্ষা ও প্রকৌশল বিভাগ উদ্যোগ নেয়। প্রায় ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে তা ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দফতর বরাবর পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতির খবর নেই।

কলেজের অধ্যক্ষ শেখ আনোয়ার হোসেন বলেন, মিলনায়তন না থাকায় নানা ধরনের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না, ভবনের একতলা হওয়ার পর আর কোনো কাজ হচ্ছে না, এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে তিনি শিক্ষা ও প্রকৌশল বিভাগে যোগাযোগ করতে বলেন। রংপুর শিক্ষা ও প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, দুই দফায় ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা ভিতের ভবন নির্মাণ হয়েছে। একতলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দোতলায় মিলনায়তন এবং তিন ও চারতলায় শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প ঢাকায় প্রধান প্রকৌশলী বরাবর পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর