মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিসিকের বিষে বিষাক্ত তুরাগ

আফজাল, টঙ্গী

বিসিকের বিষে বিষাক্ত তুরাগ

গাজীপুরে শিল্পজোন বিসিকের বিষে বিষাক্ত তুরাগ নদ ও কারখানার নির্গত বর্জ্যে দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। অনেক ডায়িং ও ওয়াশিং কারখানায় ইটিপি থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার হচ্ছে না। রাতের আঁধারে বাইপাস লাইনে তুরাগ নদে নির্গত হচ্ছে বর্জ্য। আবার অনেক কারখানা মালিক ইটিপি স্থাপনের নামে বছরের পর বছর পার করছেন। পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃক অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও সিলগালা করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। তাই এসব দূষণরোধে প্রয়োজন সেন্ট্রাল ইিটপি স্থাপন। সেন্ট্রাল ইকুইপমেন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণে কারখানা মালিকদের পাশাপাশি সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। পরিবেশ দূষণরোধে ও নদী বাঁচাতে সরকারের শতভাগ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং প্রতিটি শিল্পজোনে সেন্ট্রাল ইটিপি স্থাপন করার দাবি জানান মালিকপক্ষ। সরেজমিন জানা যায়, নগরীর শিল্পজোন টঙ্গী বিসিক ও কোনাবাড়ি বিসিকে শত শত কলকারখানা রয়েছে। এসব কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য তুরাগ নদে প্রবাহিত হয়ে বিষাক্ত হচ্ছে পানি, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বিভিন্ন কারখানায় পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃক অভিযান চালিয়েও কোনো সুরাহা মিলছে না। আবার অনেকেই বলছে পরিবেশ অধিদফতরের কিছুটা গাফিলতি রয়েছে, যে কারণে অসাধু কারখানা মালিকরা ইটিপি স্থাপন করছেন না এবং অনেকেই ইটিপি স্থাপনের নামে বছরের পর বছর পার করছেন। বিসিক এজিএস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কারখানার মালিক ফরিদুল হক বলেন, নদী বাঁচাতে কিংবা দূষণরোধে বিসিক শিল্পজোনে সেন্ট্রাল ইটিপি প্রয়োজন। অনেক কারখানায় ইটিপি আছে কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে না। সেন্ট্রাল ইটিপি থাকলে এ সুযোগ থাকত না। সেন্ট্রাল ইটিপি নির্মাণে অনেক জায়গা দরকার, তাই স্থানীয় মেয়র ও সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা মালিকরা সবাই সরকারকে সহযোগিতা করব। এ বিষয়ে গাজীপুর পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আ.সালাম সরকার বলেন, যেসব কারখানায় ইটিপি নেই সেসব কারখানায় আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি কারখানাকে জরিমানা ও সিলগালা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে টঙ্গী বিসিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা মালিকরা সেন্ট্রাল ইটিপি স্থাপনে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছি, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বিসিকে এসে সেন্ট্রাল ইটিপি করার আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে আর খোঁজ নেননি। তবে  সেন্ট্রাল ইটিপি করতে বিশাল জায়গা ও টাকার প্রয়োজন, তাই সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ না নিলে এটা নির্মাণ করা সম্ভব নয়। সরকার এগিয়ে এলে আমরা মালিকরা অবশ্যই সহযোগিতা করব। নদী বাঁচাতে ও দূষণরোধে সেন্ট্রাল ইটিপি স্থাপন করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সর্বশেষ খবর