মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সড়কে প্রতিযোগিতা থামছেই না

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

সড়কে প্রতিযোগিতা থামছেই না

চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম মোড় আন্দরকিল্লা। এ মোড়ে একই সময়ে এক নম্বর রোডের তিনটি বাস আঁড়াআঁড়িভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তিনটি বাসই আগে যাওয়ার জন্য অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এ সময় ঝুঁকি নিয়েই চলতে হয় পথচারী, সড়ক পারাপারকারী এবং ছোট যানবাহনগুলোকে। এমন প্রতিযোগিতায় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।      

এমন চিত্র কেবল আন্দরকিল্লা মোড় নয়, নগরের নিউমার্কেট মোড়, কোতোয়ালি, কাজির দেউড়ি, ওয়াসা, জিইসি, ২ নম্বর গেটসহ অনেক সড়ক ও মোড়ে এমন দৃশ্য প্রতিনিয়তই দেখা যায়। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে মৃত্যু। পথচারীদের জন্য সড়ক হয়ে উঠছে অনিরাপদ।            

জানা যায়, নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নে সড়কে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ডকুমেন্ট হালনাগাদ না থাকা, ফিটনেসহীন গাড়ি, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক, হেলমেট না পড়া ও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছিল বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম কার্যালয়। এ সময় সড়কে লক্কড় ঝক্কড় যানবাহনের সংখ্যা এবং অসম প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম ছিল। কিন্তু এখন সড়ক আইন বাস্তবায়ন শিথিল হওয়ায় সড়কে যানবাহনগুলো ফের বেপরোয়া হয়ে ওঠে। চলছে লক্কড় ঝক্কড় গাড়ি, চলছে অসম প্রতিযোগিতা।

বিআরটিএ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) মোহাম্মদ তৌহিদুল হোসেন বলেন, সড়ক শৃঙ্খলায় রাখতে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে জরিমানাও করা হয়। তারপরও কিছু চালক আইন ভঙ্গ করে অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এটি চরম অন্যায়। তিনি বলেন, নতুন সড়ক আইন সম্পর্কে সবাইকে অবগত করা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নবায়ন করা এবং আইন মানার প্রবণতা তৈরির জন্য সরকার আগামী জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছে। আশা করছি, সরকারের এ সুযোগের কেউ কোনো অপব্যবহার করবে না।  

বিআরটিএ চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরে ১৯৯০ থেকে নিবন্ধিত যানবাহন আছে প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার। তবে ফিটনেশবিহীন যানবাহনের কোনো পরিসংখ্যান সংস্থাটির কাছে নেই। কিন্তু সড়কে প্রতিনিয়তই চলছে ফিটনেসহীন ও লক্কড় ঝক্কড় গাড়ি, আছে লাইসেন্সবিহীন চালক। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে অনেক যানবাহনের লাইফ টাইম (মেয়াদকাল)।

ফলে চরম ঝুঁকি নিয়েই চলানো হয় গাড়িগুলো। অন্যদিকে প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার যানবাহন থাকলেও নিবন্ধিত চালকের লাইসেন্স আছে এক লাখ ১৫ হাজার ৪০৯টি। ফলে লাইসেন্সবিহীন চালকের  সংখ্যাও এক লাখের বেশি। প্রতিনিয়ত এ সব চালকদের দখলেই থাকে গণপরিবহনের স্টিয়ারিং। ফলে ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।

বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল।    

জানা যায়, সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটানো যানবাহনগুলোর অধিকাংশরই চালক অনভিজ্ঞ এবং লাইসেন্সবিহীন। তারা যানবাহন চলাচলের নিয়ম যেমন জানে না, তেমনি ইচ্ছামতো বেপরোয়া গাড়ি চালান। সঙ্গে প্রতিনিয়তই কানে থাকে মোবাইল। তদুপরি কম বয়সী হওয়ায় এসব চালকদের মধ্যে সব সময় প্রতিযোগিতার মনোভাব থাকে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছেই।

সর্বশেষ খবর