শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

চমেক হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ব্লক

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চমেক হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ব্লক

মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের কচুয়ামরা ইউনিয়নের হাজী অহিদুল মাওলা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে। তাকে সেবা দেওয়া হয় হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাস্থ্যসেবায় চালু হওয়া মুক্তিযোদ্ধা ব্লকে। অহিদুল মাওলা বলেন, ‘এ ব্লকে বিশেষ ব্যবস্থায় সেবা পেয়েছি। উদ্যোগটি প্রতিটি নাগরিক সেবা কেন্দ্রে নেওয়া দরকার। তাহলে দেশের সূর্যসন্তানদের আরও বেশি সম্মান দেখানো হতো।’            

দেশে প্রথমবারের মতো চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চালু করা হলো মুক্তিযোদ্ধা ব্লক। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার হৃদরোগ বিভাগে তিনটি শয্যা নিয়ে গত বছরের ৮ আগস্ট ব্লকটি যাত্রা করে। এখানে হৃদরোগে আক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধারা সর্বোচ্চ চিকিৎসা পাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বীর নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা এ ব্লক থেকে সেবা নিয়েছেন। হাসপাতালের এ বিশেষ উদ্যোগের কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন-পরিবারগুলোও খুশি। তারা হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় সব সেবা পাচ্ছেন বলে জানা যায়।       

চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. প্রবীর কুমার দাশ বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান দিতে আমরা তাদের জন্য পৃথক সেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কারণ হাসপাতালে শয্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী থাকে। এমন অবস্থায় ইচ্ছা থাকলেও মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। অনেক সময় শয্যা না পেয়ে মেঝে বা বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা পৃথক ব্লক স্থাপন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘এই ব্লকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাই সেবা দিচ্ছেন। তাছাড়া প্রতিটি শয্যায় কার্ডিয়াক মনিটরসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে থাকছেন সার্বক্ষণিক নার্স।’   

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে চমেক হাসপাতালে মাত্র ৬টি শয্যা নিয়ে যাত্রা করে হৃদরোগ বিভাগ। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ডটিকে ৬০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে হৃদরোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ায় প্রতিনিয়তই এ ওয়ার্ডে শয্যার তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকে। ৬০ শয্যার হৃদরোগ বিভাগে সর্বোচ্চ ৩০০ পর্যন্ত রোগী ভর্তি থাকে। রোগী রাখতে হয় মেঝে, বারান্দা এবং সিঁড়িতে। এমন অবস্থায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরও সঠিকভাবে সম্মান দেওয়া যায় না। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার্থে এবং তাদের সঠিক চিকিৎসার স্বার্থে ওয়ার্ড কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। হৃদরোগ বিভাগের এই ব্লকে চট্টগ্রামের স্বনামধন্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলে জানা যায়।

সর্বশেষ খবর