মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফ্লাইওভারে বদলে যাচ্ছে রাজশাহী

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

ফ্লাইওভারে বদলে যাচ্ছে রাজশাহী

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। নগরীর পূর্ব বুধপাড়ার পাশে মোহনপুর এলাকায় ২৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারে ৫টি গার্ডার বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ মাসের শেষ দিকে ফ্লাইওভারটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

প্রায় ৪ বছর ধরে পড়েছিল বাটারমোড় থেকে বটতলা সড়কটি। এখন সেই সড়কটি মসৃণ। প্রশস্ত সড়কের পাশে আছে আলো। রাস্তার মাঝে মাঝে ডিভাইডার। সেখানে লাগানো হয়েছে নানা জাতের ফুল ও গাছ। সেগুলো রাস্তার শোভা বাড়াচ্ছে। সড়ক, ড্রেন, সৌন্দর্য বর্ধন কাজে গতি এসেছে গত এক বছরে। আর এতেই বদলে যাচ্ছে পুরো নগরী।

রাসিক সূত্র জানায়, ২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মহানগরীর বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত বাইসাইকেল লেনসহ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর ১৭৩ কোটি টাকার রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত বাইসাইকেল লেনসহ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন করেন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। বর্তমানে রাস্তার দুই পাশে ড্রেন নির্মাণ এবং বর্ধিত রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছে। ৩০ ফুট প্রশস্ত রাস্তাটি ৮০ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে।

১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘রাজশাহী মহানগরীর উপশহর মোড় থেকে সোনাদীঘি মোড় ও মালোপাড়া মোড় থেকে সাগরপাড়া মোড় পর্যস্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন কাজ চলছে। রাজশাহী-নওগাঁ সড়ক থেকে রাজশাহী-নাটোর সড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ, রাজশাহীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে নর্দমা নির্মাণ প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়), কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প এবং রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, নগরীর যানজট নিরসনে ১৩২ কিলোমিটারের বেশি নতুন সড়ক নির্মাণ ও বিদ্যমান সড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের আওতায় ৪৯ কিলোমিটারের বেশি পাকা ড্রেনেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। পথচারীদের চলাচলের জন্য সাড়ে ১৯ কিলোমিটার ফুটপাথ এবং নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে সড়কের পাশে দেয়াল নির্মাণ হচ্ছে।

রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে তার সময় নেওয়া ১০ প্রকল্প অর্থাভাবে আলোর মুখ দেখছিল না। ৯৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর উৎসব সিনেমা হল থেকে তালাইমারী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্প, ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবস্থিত ২ একর আয়তনের ১৭টি প্রাকৃতিক জলাধার ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ, ৬৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় সুইপার কলোনি নির্মাণ করতে বাইপাস এলাকায় ৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প, নগরীর ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনার অবকাঠামোগত উন্নয়নে (২য় পর্যায়) ৬৩টি সড়ক সংযোগস্থল প্রশস্তকরণ, ৩০ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ, সড়ক বিভক্তিকরণ এবং ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প, ৪৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক আলোকায়ন, ৮০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদ জিয়া শিশু পার্ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন এবং ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর গ্রেটার রোড থেকে নওদাপাড়া পর্যন্ত সড়কটির পাশে ১০ একর এলাকা নিয়ে ওয়াটার পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা তার সময়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো পরবর্তীতে থমকে যায়। এবার সেই প্রকল্পগুলো আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। সিটি মেয়র বলেন, আগামী চার বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হয়ে যাবে। এখনই নগরী অনেকটা বদলে গেছে। তখন আরও বেশি বদলে যাবে।

সর্বশেষ খবর