মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিটি নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ নতুন ওয়ার্ড

জয়শ্রী ভাদুড়ী

সিটি নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ নতুন ওয়ার্ড

তিন বছর আগে সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া দক্ষিণ সিটির দনিয়া আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় সড়কটি দেড় বছর ধরে বেহাল। মুঠোফোনে ছবি তুলেছেন আরাফাত মুন্না

রাজধানীর উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) যুক্ত হওয়া নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডে এখনো মেলেনি নাগরিক সুবিধা। অনেক ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণেও রয়ে গেছে জটিলতা। সম্পত্তি, ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত কাজে এখনো বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে সমস্যা। তাই আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নতুন ওয়ার্ডগুলো চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ জুন রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের সীমানা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দুই সিটি করপোরেশনের আশপাশের ৮টি করে ১৬টি ইউনিয়ন যোগ করা হয়। পরবর্তীতে এই ইউনিয়নগুলোকে নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে ১৮টি ডিএনসিসি এবং ১৮টি ডিএসসিসিতে যোগ হয়। এই ওয়ার্ডগুলোর কিছু জায়গায় উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও অধিকাংশ এলাকা রয়েছে নাগরিক সুবিধার বাইরে। রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ, পয়ঃনিষ্কাশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খেলার মাঠ, পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, জলাধার সংরক্ষণ, সড়কবাতি, ওয়ার্ড কার্যালয় গড়ে ওঠেনি নতুন ওয়ার্ডগুলোতে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। মশক নিধনেও নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে সিটি করপোরেশনে সংযুক্ত হলেও উন্নয়ন ঘটেনি নাগরিক সুবিধায়।

এর মধ্যে ডিএসসিসিতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। অন্যগুলোও শুরুর অপেক্ষায়। উত্তর সিটি করপোরেশও উন্নয়ন কাজের জন্য নতুন ওয়ার্ডে বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু না হওয়ায় নাগরিক ভোগান্তি কমেনি। বেশ কিছু এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় কাদাপানিতে মাখামাখি অবস্থা রাস্তায়। সড়কগুলোতে যুক্ত হয়নি সড়কবাতি। বেশ কিছু ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণে এখনো রয়েছে অস্পষ্টতা। দুই সিটির কর্মকর্তারা জানান, অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ইউনিয়নগুলোকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ। তবে মহাপরিকল্পনার আওতায় সড়কের আয়তন নির্ধারণ, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ, পয়ঃনিষ্কাশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খেলার মাঠ, পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, জলাধার সংরক্ষণ, সড়কবাতি, ওয়ার্ড কার্যালয়, হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ শুরু করা হবে। এ জন্য প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। দক্ষিণগাঁও এলাকার বাসিন্দা আক্কাস আলী বলেন, আগে ইউনিয়নে যুক্ত থাকায় তাও কিছু সুবিধা পেতাম। এখন কিছুই পাই না। একটা কাজের জন্য বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াতে হয়। রাস্তাঘাট ভাঙা, ড্রেন নেই।

এ রকম অধিকাংশ নাগরিকদের মনেই সেবা না পাওয়ার ক্ষোভ। সিটি করপোরেশন বলছে, নতুন ওয়ার্ডগুলোতে সব সেবা নিশ্চিত করা হবে কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার সময়টুকু দিতে হবে। এই নতুন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এবার প্রথম ভোট দেবেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এই ওয়ার্ডগুলোর ভোটারদের ভোটভাবনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেই মেয়র কিংবা অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীরও। তাই আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই ওয়ার্ডগুলো চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

সর্বশেষ খবর