চট্টগ্রাম নগরের প্রধান ব্যস্ততম হাইওয়ে সড়ক বিমানবন্দর থেকে কালুরঘাট। উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি বড় অংশের মানুষ এ সড়ক দিয়েই নগরে প্রবেশ করে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বহদ্দারহাট চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার মোড় থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত এক পাশ গত প্রায় চার বছর ধরেই বন্ধ। ফলে চরম ভোগান্তি সঙ্গী হয়েছে যাত্রী ও পথচারীদের। নিত্যই থাকে যানজট। তবে বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চসিকের কাজ চলাকালেও ধুলায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ধুলা উড়িয়ে বায়ুদূষণের দায়ে চসিকের এক ঠিকাদারকে গত ১৯ ডিসেম্বর এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। সেই সঙ্গে ধুলা বন্ধে দিনে কমপক্ষে তিনবার পানি ছিটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম ওয়াসা হাটহাজারীর মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে নগরীতে পাইপলাইনে পানি আনতে ২০১৬ সালে রাস্তাটি খুঁড়ে। ওয়াসার কাজের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার সড়কের একপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। কিন্তু ওয়াসার কাজ শেষ হলে গত বছরের জুলাই থেকে সংস্কার কাজ শুরু করে চসিক। প্রায় ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়ক ১২টি অংশে ভাগ করে ১২ জন ঠিকাদারের মাধ্যমে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এখনো সড়কটির একপাশ বন্ধ।
চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির একপাশ বন্ধ। বর্ষাকালে কাদা-পানির যন্ত্রণা, শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালির যন্ত্রণা। সঙ্গে থাকে যানজট। ফলে বছরজুড়েই থাকে নাগরিক যন্ত্রণা।’চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবু সালেহ বলেন, ‘২০২০-এর ফেব্রুয়ারিতে সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছিলাম। কিন্তু এরই মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাটির তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ করছে। পিডিবির খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কের বড় একটি অংশে কাজ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে বাসটার্মিনাল-পুরনো চান্দগাঁও থানা এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। ফলে সড়কের এ অংশেও কাজ করা যাচ্ছে না। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত কাজ শেষ করতে।’ তিনি বলেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে তা আমরা বুঝছি। কিন্তু উন্নয়ন কাজগুলো তো শেষ করতে হবে।’
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের একপাশ বন্ধ থাকায় লেগে থাকে যানজট। তাছাড়া উপকরণ যন্ত্রপাতি, মাটি কাটাসহ নানা কারণে এলাকায় উড়ছে ধুলাবালি। পথচারীদের নাক চেপে ধরে হাঁটা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারী ও যাত্রীদের।