শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

হাসপাতালে এসে ভোগান্তিতে শিশুরা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

হাসপাতালে এসে ভোগান্তিতে শিশুরা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। নবজাতক, শিশু ও বয়স্কসহ বিভিন্ন শ্রেণির নারী-পুরুষ রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন কুমেক হাসপাতালে। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের সংকটে কুমেক হাসপাতালে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। নবজাতক ওয়ার্ডে ওয়ার্মার ও ফটোথেরাপি মেশিনের সংকট এবং নেই ইনকিউবেটর, এনআইসিইউ ও স্ক্যানো ইউনিট। মুমূর্ষু রোগীদের জন্য নেই সংকটাবস্থা চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র (আইসিইউ), সংকট রয়েছে অক্সিজেনের। তাছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের কোনোটি নষ্ট। এছাড়াও চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীর তুলনায় আসন সংকট, প্রয়োজনের তুলনায় ক্লিনারের অভাবে বাথরুম ও শৌচাগার থাকে অপরিচ্ছন্ন, ট্যাপের পানি লাল রঙের ময়লা ও দূষিত।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রচ- শীত ও  শৈত্যপ্রবাহে গত ৪-৫ দিনে কুমেকে নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের অভাবে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে ১২-১৫টি শিশু ও নবজাতক মারা যাচ্ছে। নবজাতক ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাহানাজ বেগম জানান, মায়ের গর্ভ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম নেওয়া, ওজন কম, শারীরিক গঠন তুলনায় ছোট এবং জন্মের পর শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের মেডিকেল কলেজের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এদিকে শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। এই ওয়ার্ডে চিকিৎসায় ব্যবহার করা তিনটি ওয়ার্মার ও তিনটি ফটোথেরাপি মেশিনের মধ্যে মাত্র দুইটি যন্ত্রাংশ কাজ করছে। চারটি ইনকিউবেটর থাকলেও এখন একটিও নেই। নবজাতক রোগীর তুলনায় যন্ত্রাংশ ও লোকবল সংকট থাকায় সঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রোকসানা আক্তার নামে এক নবজাতকের স্বজন জানান, কুমিল্লার একটি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে সাত মাস ২২ দিনের মাথায় নবজাতকটি জন্ম নেয়। জন্মের পর তার ওজন কম এবং শ্বাসকষ্ট অতিরিক্ত হওয়ায় চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন ওয়ার্মার বা এনআইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখার জন্য। কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে শিশুটিকে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওয়ার্মারে রাখার কথা বললেও নার্সরা জানান তিনটি ওয়ার্মারের মধ্যে দুইটি নষ্ট। বাচ্চা রাখা যাবে না। বর্তমানে শিশুটিকে নিয়ে খুব বিপদে রয়েছি। শিশু ও নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. মো. আজিজুল হোসেন বলেন, প্রয়োজনীয় মেশিন ও যন্ত্রাংশের সংকট রয়েছে। যেগুলো আছে সেগুলো প্রায় সময়ই কাজ করে না। হাসপাতালের পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, আইসিইউ, স্ক্যানো ইউনিট চালুর জন্য আমরা কাজ করছি, খুব শিগগিরই মানুষ সেবা নিতে পারবে। এদিকে আমাদের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে যন্ত্রাংশের অনেক সংকট রয়েছে। এদিকে মেডিকেলে বিভিন্ন শ্রেণিতে ৭৯টি পদ খালি রয়েছে। এসব সংকটের কারণে সেবা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি আরও বলেন, কুমেক দীর্ঘদিন একটি সমস্যায় পড়ে আছে। তা হচ্ছে পানিতে আয়রন, ট্যাপের পানি ময়লা ও লাল রঙের পানি পড়ায় বাথরুম ও শৌচাগারের ফ্লোরগুলো লাল হয়ে যাচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর