মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

‘পর্যটক বর্জ্যে’ হালদা দূষণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

‘পর্যটক বর্জ্যে’ হালদা দূষণ

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। এ নদী শিল্প প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গৃহস্থালি, কল-কারখানা এবং কীটনাশক বর্জ্যে বিপর্যস্ত। এর সঙ্গে আছে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় শিকার হওয়া অয়েল ট্যাংকার। কিন্তু এবার যোগ হয়েছে পর্যটক বর্জ্য। প্লাস্টিক জাতীয় অপচনশীল নানা পর্যটক বর্জ্যে দূষিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।         

তবে হালদা নদীতে পর্যটক বর্জ্য ঠেকাতে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন নদীর পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকান ও টং দোকানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলো নিয়ন্ত্রণে চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া হালদা নদী সংলগ্ন ইউনিয়নগুলোকে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। তবে দোকানগুলো এখনো উচ্ছেদ করা হয়নি বলে জানা যায়।   

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হালদা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ও নদীর পাড় রক্ষায় হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মাদার্সা, উত্তর মাদার্সা ও বুড়িশ্চর ইউনিয়ন অংশে বাঁধ নির্মাণ ও ব্লক বসানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১২ কিলোমিটার এলাকায় কাজ শেষ হয়েছে। ফলে নদীর পাড়টি রূপ পেয়েছে একটি প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন স্থান হিসেবে। হালদা পাড়ের প্রাকৃতিক ও নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি শুক্র-শনিবার প্রায় এক হাজার এবং প্রতিদিন প্রায় ৫০০ পর্যটক আসে। প্রাকৃতিক পরিবেশে হচ্ছে পিকনিকও। কিন্তু পর্যটক ও পিকনিকের নানা খাবার, খাবারের উচ্ছিষ্ট, প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের প্যাকেট, গ্লাস, প্লেট, পলিথিন ও চিপসের প্যাকেটগুলোর শেষ গন্তব্যস্থল হচ্ছে হালদা নদী। তাছাড়া এখানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে অন্তত ২০টি দোকান। ফলে দূষিত হচ্ছে হালদা, নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র।  

মাদার্সার স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘পর্যটকদের অপচনশীল প্লাস্টিক পণ্যের কারণে হালদা নদী দূষণ হচ্ছে। এটি বন্ধ করা উচিত।’

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘হালদা নদী পাড়ের বড় একটি অংশ এখন নান্দনিক অবয়ব রূপ ধারণ করেছে। এখানে পর্যটকরা আসছে। কিন্তু পর্যটক বর্জ্যে হালদার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা দোকানগুলো নিয়ন্ত্রণে চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া হালদা নদী সংলগ্ন ইউনিয়নগুলোকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি ছাড়া হালদা পাড়ে কোনো ভ্রাম্যমাণ দোকান বা টং দোকান স্থাপন না করা, প্রয়োজনে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশনা, ছাড়পত্র ও খাজনার মাধ্যমে দোকান বসানো হলেও সেখান থেকে আয়কৃত অর্থ হালদা নদীর পাড় পরিষ্কার, নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ কাজে ব্যবহার করতে হবে।’ 

সর্বশেষ খবর