চট্টগ্রাম নগরে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নগরবাসী। রাতে তো বটেই, দিনের বেলায়ও মশার উপদ্রব চলছে। নালা-নর্দমা, ড্রেনে আবর্জনা পড়ে থাকায় মশার বংশ বাড়ছে। এখন যোগ হয়েছে উন্নয়ন কাজের জন্য খোঁড়া গর্তে জমে থাকা পানি। এসব পানিতে জন্ম হচ্ছে এডিস মশা। ফলে শঙ্কা আছে ডেঙ্গুরও। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের পরিচ্ছন্নতা এবং মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে।
নগরবাসীর অভিযোগ, চসিকের মশক নিধন কার্যক্রম থমকে আছে। দিন-রাত মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। চসিক মশক নিধন কাজ করার কথা বললেও বাস্তবে কাউকে দেখা যায় না। বর্তমান শুষ্ক মৌসুমে নালা-নর্দমায় জমাট হয়ে আছে পানি। সেখানে ডিম ছাড়ে ‘ফাইলেরিয়া’সহ নানা রোগের জীবণুবাহী মশা। বর্ষায় অতিবৃষ্টির ফলে এসব ডিম বা লার্ভা ধ্বংস হয়ে যায়। তবে শুষ্ক মৌসুমে পানি জমাটবদ্ধ হয়ে থাকায় ডিম ও লার্ভা ধ্বংস হয় না। এই সময়টাতে মশার লার্ভা ধ্বংসকারী ওষুধ ছিটানো জরুরি।
রক্ত রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জামাল তানিন বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। এজন্য এখন থেকেই মশার বিস্তার রোধে সিটি করপোরেশনকে কার্যকরভাবে এগিয়ে আসতে হবে।চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ মশক নিধনে ‘এডালটিসাইড’ (পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী) এবং ‘লার্ভিসাইড’ (ডিম ধ্বংসকারী) নামে দুই ধরনের ওষুধ ছিটায়। দুটোরই মজুদ কমে আসছে। বর্তমানে ‘এডালটিসাইড’ মজুদ আছে মাত্র ৩ হাজার ৭০০ লিটার। ‘লার্ভিসাইড’ মজুদ আছে ১০০ লিটার। বিদ্যমান ওষুধ আরও এক মাস ছিটানো যাবে। তবে নতুন করে আরও পাঁচ হাজার লিটার ‘লার্ভিসাইড’ এবং ২৫ হাজার লিটার ‘এডালটিসাইড’ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। মশক নিধনে চলতি অর্থবছরে ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ চসিকের। এর মধ্যে ওষুধ সংগ্রহে তিন কোটি টাকা, ফগার ও ¯েপ্র মেশিন সংগ্রহে দুই কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে এক কোটি টাকা বরাদ্দ। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত চার বছরে চসিক মশক নিধনে ব্যয় করে ছয় কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান ছিদ্দিকী বলেন, প্রতিদিন মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো হয়। তবে কেবল ওষুধ নয়, সাধারণ মানুষেরও সচেতনতা প্রয়োজন। সবার বাসা-বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখা এবং বাড়ির আঙিনায় অহেতুক পানি জমিয়ে না রাখার বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।