মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

অবৈধ পার্কিং ধুলা-ময়লায় বিপন্ন গাজীপুর

আফজাল হোসেন, টঙ্গী

অবৈধ পার্কিং ধুলা-ময়লায় বিপন্ন গাজীপুর

সাধারণ মানুষ নিরাপদে চলতে পারছে না। গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন,  স্টেশন রোড এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা নেই, বিআরটিএর গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশকে বলে সরানোর ব্যবস্থা করছি

রাজধানীর সন্নিকটে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ধুলাবালি আর ময়লায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরবাসী। সিটির আঞ্চলিক মহাসড়ক কিংবা শাখা সড়কে গাড়ি পার্কিং করা নিষেধ থাকলেও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করা হচ্ছে। মাঝখানে একশ্রেণির লোক গাড়ি পার্কিং থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকি যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে রাতের আঁধারে ছিনতাই ও ধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে।

নগরীর বিভিন্ন সড়ক এবং শাখা সড়কে অবৈধভাবে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ধুলাবালির বিস্তার আর যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে বিশৃঙ্খল শহরে পরিণত হচ্ছে গাজীপুর। পরিবহন কর্মীরা সড়কে এলোপাতাড়ি গাড়ি পার্কিং করার ফলে সিটি করপোরেশন ও সওজের রাস্তা সহজেই নষ্ট হচ্ছে। আবার চাঁদাবাজদের যোগসাজশে টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক স্টেশন রোড এলাকায় চম্পাকলি সিনেমা হলের পাশে সড়ক দখল করে বিআরটিসি পরিবহনের বেশকিছু গাড়ি পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করা হয়েছে। এর বিপরীত পাশে বাদশা পরিবহন, পিপিএল, উত্তরা পরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহনের শত শত গাড়ি থানার প্রবেশমুখে সড়কের জায়গা দখল করে পার্কিং করায় মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া থানার পেছনে তালতলা রোড, মেঘনা রোড, পিনাকী রোড, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে ইউনিলিভার, হকসহ বিভিন্ন কোম্পানি, টঙ্গী বাজার, আনারকলি সিনেমা হলের বিপরীত দিকে মহাসড়কের জায়গা দখল করে শত শত পিকআপ ভ্যান, ট্রাক, চেরাগআলী, কলেজ গেট, বোর্ডবাজার, চৌরাস্তা, শিববাড়ি, পূবাইল মিরেরবাজার, কোণাবাড়িসহ প্রতিটি এলাকার শাখা সড়কে ব্যক্তি মালিকানার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পরিবহনের গাড়ি সড়কের জায়গা দখল করে পার্কিং করছে। যত্রতত্র পার্কিংয়ের ফলে পরিবহন শ্রমিকদের কেউ কেউ রাতে সংঘবদ্ধ হয়ে ছিনতাইয়ে লিপ্ত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ নিরাপদে চলতে পারছে না। গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্টেশন রোড এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা নেই, বিআরটিএর গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশকে বলে সরানোর ব্যবস্থা করছি। এছাড়া মা-টাওয়ার, পিনাকীর মোড়, ন্যাশনাল টিউব রোড, হকের মোড়, ইউনিলিভার ও কোকাকোলার পাশসহ সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না, করলে রেকারিং করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে সড়ক-মহাসড়কে ধুলা আর ধুলা। ধুলাবালি উপেক্ষা করে চলাচল করছে মানুষ। সড়কে চলতে গিয়ে হঠাৎ দেখলে মনে হয় এ যেন শীতের কুয়াশা পড়ছে। এছাড়া সড়কের মাঝপথে আইল্যান্ড ঘেঁষে পড়ে থাকা বালুর স্তূপ পরিষ্কারের অভাবে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। গাড়ি চলাচলের সময় এসব বালু গাড়ির চাকায় বাতাসে উড়তে থাকে সড়কজুড়ে। এর ফলে পরিবহন যাত্রী ও সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে শিকার হচ্ছে। ধুলাবালির কারণে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ধুলাবালির জন্য সড়কে চলাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে বিআরটিএর প্রকল্প পরিচালক চন্দন কুমার বসাক বলেন, ‘সড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে যে কারণে একটু ধুলাবালি। আমরা সড়কের ধুলাবালি পরিষ্কার করছি এবং প্রতিদিন তিন বেলা পানি দিচ্ছি।’ অপরদিকে টঙ্গী-গাজীপুর সড়কের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ময়লার ভাগাড়। সিটি করপোরেশন ময়লা ফেলার জায়গা করলেও ময়লা ফেলা হচ্ছে সড়কের  ওপরে। বিসিক এলাকার বিভিন্ন কারখানা ও আশপাশের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সড়কে চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এতে নিয়মিত চলাচলকারী শ্রমিক ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিসিক মালিক সমিতির লোকজন থাকলেও পরিবেশ দূষণ রোধে তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেই। বিসিক এলাকার বিভিন্ন কারখানা সড়কে ময়লা ফেলছে নিয়মিত।

 

সর্বশেষ খবর