যে রাজধানী এতদিন দুই কোটি মানুষের থাকা-খাওয়ার জোগান দিয়েছে, প্রতিদিন যেখানে লাখো মানুষ গ্রাম থেকে ছুটে এসেছে, কাজের অভাবে এখন সেই রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছে হাজারো পরিবার। ঘরভাড়া দিতে না পেরে রাতের আঁধারে মালপত্র রেখে পালাচ্ছেন ভাড়াটিয়ারা। কেউ ঘরে তালা দিয়ে উধাও। রাস্তার মোড়ে এখন শুধু ভিক্ষুক, ভবনে ভবনে ঝুলছে ‘টু-লেট’ সাইনবোর্ড। তিন মাস আগে চার বাসায় কাজ করে মাসে নয় হাজার টাকা রোজগার করা গৃহকর্মী হামিদা এখন ভিক্ষার ঝুলি হাতে সুপারশপের সামনে।
করোনার প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব খাত স্থবির হয়ে পড়ায় কয়েক মাসে কর্মহীন ঢাকার লাখ লাখ মানুষ। কাজ হারিয়েছে দোকান কর্মচারী থেকে শুরু করে সব খাতের শ্রমজীবী। চাকরি হারিয়ে পরিবার নিয়ে বিপাকে মধ্যবিত্ত। কেউ কেউ পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে ফ্ল্যাট বাসা ছেড়ে উঠেছেন মেসে। কম মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন আসবাবপত্র। কেউ ভাড়া না দিতে পেরে মালামাল রেখে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় জমানো টাকা খরচ করে টিকে থাকার সংগ্রামে মধ্যবিত্তের একটা অংশ।
ভাটারার আজিজ সড়কে জুয়েল শেখের ওয়ার্কশপে ১৬ জন কর্মী ছিল। কাজ না থাকায় ১২ জনকে ছুটি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমারও ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলে ওয়ার্কশপের কাজ নেই। একটা বিল্ডিং তৈরির সঙ্গে ওয়ার্কশপ ছাড়াও টাইলস, রড-সিমেন্ট, হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রিক, রাজমিস্ত্রিসহ ৩০-৩৫ খাতের মানুষের রিজিক জড়িত। সব বন্ধ। এখন ব্যবসার পুঁজি ভেঙে খাচ্ছি। কতদিন চলতে পারব জানি না।