মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

পিছু ছাড়ছে না জলাবদ্ধতা

মানিক মুনতাসির

পিছু ছাড়ছে না জলাবদ্ধতা

রাজধানী ঢাকার পিছু ছাড়ছে না জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে অনেক এলাকার রাস্তাঘাট। কোথাও কোথাও প্রধান সড়কেও সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। করোনাভাইরাস সতর্কতার কারণে অনেক এলাকাতেই বন্ধ রয়েছে রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম। ফলে যেসব এলাকার রাস্তাঘাট বা ফুটপাথ কাটা হয়েছিল কিছুদিন আগে সেসব এলাকার মানুষকে এবার ভোগান্তি পেতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। কেননা অনেক এলাকাতেই এবার খোঁড়াখুঁড়ির পর মাটি ভরাট করা হয়নি। আবার কোথাও কোথাও ছয় মাস আগে কাটা হয়েছে। মাটিও ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু ঢালাই দেওয়া হয়নি। ফলে এসব এলাকার মাটি বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। এতে রাস্তার মাঝে বা এখানে সেখানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। আর গর্তে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকছে। এ ছাড়া মালিবাগ, মৌচাক, খিলগাঁও, গোড়ান, রামপুরাসহ ঢাকার অনেক এলাকার মহল্লার ভিতরের অনেক রাস্তাতে বছরের সব সময়ই পানি জমে থাকে। এ রকম একটি সড়ক হচ্ছে রামপুরা বউবাজারের প্রধান সড়ক। যেটি রামপুরা থেকে বউবাজার হয়ে খিলগাঁও তালতলা ও গোড়ানের দিকে গেছে। এই রাস্তাটিতে সারা বছরই পানি জমে থাকছে। এখানকার বেশিরভাগ ম্যানহোলের ঢাকনা নেই। এ ছাড়া স্যুয়ারেজ লাইনেও ঢাকনা নেই। ফলে একদিনে ড্রেনের পানি আর বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে যায় রাস্তাটি। দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি ছড়াচ্ছে নানা রোগ জীবাণু। রবিবার এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে এ রাস্তাটি হাঁটু পরিমাণ পানিতে তলিয়ে যায়। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এবার বর্ষার শুরুতেই ঢাকার অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনেক এলাকার রাস্তাঘাট কেটে রাখা হয়েছে। যেগুলো ঢালাই দেওয়া হয়নি। কোথাও কোথাও সংস্কারের কাজ করে অব্যবহৃত মালামালও ফেলে রাখা হয়েছে যত্রতত্র। এতে যেমন যান ও মানুষ চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সৃষ্টিও হচ্ছে জলাবদ্ধতার।

সদ্য শুরু হওয়া বর্ষা মৌসুমে ঢাকায় জলাবদ্ধতা সহনীয় মাত্রায় রাখতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে  সেগুনবাগিচা বক্স কালভার্ট ও গভীর নর্দমা পরিষ্কারের কাজ শুরু করে ঢাকা ওয়াসা। এখন ফকিরাপুল এলাকায় রাতেরও কাজ চলছে। আরও অনেক এলাকায় ড্রেন উন্নয়নসহ পয়ঃনিষ্কাশনের কাজ চলছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে অনেক অঞ্চলেই কাজ বন্দ রয়েছে। ফলে এসব এলাকাতে জলাবদ্ধা হবে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া মিরপুর, আগারগাঁও, প্রেস ক্লাব, মতিঝিল, ফকিরাপুল, শাহবাগ ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের কাজ চলছিল। যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এসব এলাকার রাস্তা একদিকে সরু হয়ে গেছে। অন্যদিকে নিষ্কাশন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ফলে এসব এলাকাতেও এবার তীব্র জলাবদ্ধতা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দুই সিটি করপোরেশনও জলাবদ্ধতা রোধে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মতে, এবারও ঢাকার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা থাকবে। কারণ ভারি বৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে পানি ধারণ করার জন্য শহরে উপযুক্ত জলাধার  নেই। আর ভারি বৃষ্টির পানি টেনে নেওয়ার পাম্পগুলোর ক্ষমতাও সীমিত। জলাবদ্ধতা ঢাকার পিছু ছাড়ছে না সহসাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর