চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার মুহাম্মদ আলী শাহ লেনটি গত ১৭ জুন বর্ষা মৌসুমের শুরুর দিকে অল্পবৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। এর দুই দিন পর ১৯ জুনের বৃষ্টিতে ফের ডুবে যায় এলাকাটি। এভাবে বৃহত্তর বাকলিয়া ও চকবাজারের আশপাশের এলাকাগুলো গত অন্তত ৩০ বছর ধরে ডুবে আসছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) বার বার অভিযোগ করলেও তার কোনো প্রতিকার মিলে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছরই চসিক খাল, নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কার-সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এলাকার পানি চলাচলের স্থানগুলোও পরিষ্কার করে। কিন্তু তা হয় অনেকটা লোক দেখানো। ফলে অর্থ ব্যয় করে খাল নালা পরিষ্কারের সুফল মিলে না। বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায়, সড়ক, বাসা-বাড়ি, বাসার বাথরুম, মসজিদ, কবরস্থান, ঈদগাহ মাঠ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় মুহাম্মদ আলী শাহ লেইনের বাসিন্দা আবদুল হালিম বলেন, ‘চকবাজার-শুলকবহর ওয়ার্ডকে ঘিরে আছে হিজড়া খাল ও চাকতাই খাল। এ দুটি খাল নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে বৃহত্তর বাকলিয়ার মানুষ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেত। খাল দুটি পরিষ্কার করা হলেও বলা যায়- তা নামমাত্র। ফলে আমাদের কপাল থেকে জলাবদ্ধতার দুঃখ যায় না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বাস করে প্রায় ৫০০ পরিবার। গত ৩০ বছর ধরেই আমরা এমন অবস্থায় বসবাস করছি। বড় সমস্যা হয় পানি ঢুকে ডুবে যায় মসজিদ, কবরস্থান ও বাসার টয়লেট, ঘরে পানি জমে থাকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত।’চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, ‘হিজড়া খাল ও চাক্তাই খাল চসিক নিয়মিত সংস্কার করে থাকে। কিন্তু এ বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের আওতায় খাল সংস্কারও করছে। তবুও চসিক জনস্বার্থে জলাবদ্ধতা নিরসনে কিছু রুটিন ওয়ার্ক চলমান রেখেছে।’
জানা গেছে, চকবাজার ও শুলকবহর ওয়ার্ডের কাপাসগোলা, বাদুড়তলা, কেবি আমান আলী রোড, ডি সি রোড, হাসমত উল্লাহ মুন্সেফ লেইন, কাপাসগোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়, খালপাড়, রসুল বাগ, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বিএড কলেজ, সুফি মৌলানা আলী শাহ্ মাজার, মুহাম্মদ আলী শাহ লেনসহ আশপাশের এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জমে যায় পানি। এ সময় সমস্যায় পড়েন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগামী সবাই। তবে বড় সমস্যা তৈরি হয় কেউ মারা গেলে লাশ দাফনে। কবল খুঁড়লেই ওঠে পানি।