মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

খাতুনগঞ্জে জোয়ারের পানি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

খাতুনগঞ্জে জোয়ারের পানি

আকাশে তেজোদীপ্ত সূর্য। সূর্যের প্রখর তাপে ঘর্মাক্ত শ্রমিকের শরীর। কিন্তু এমন ঝলমলে রোদে জোয়ারের পানিতে টলমল, থইথই করে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ। এখন প্রতিদিনই জোয়ারের পানিতে ডুবছে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খ্যাত চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের নিম্নাঞ্চল। জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের পর এখন শুরু হয়েছে জোয়ারের পানির ভোগান্তি। ফলে জোয়ারের পানির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। নষ্ট হচ্ছে মালামাল। মুখোমুখি হতে হয় আর্থিক ক্ষতির। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ তৈরি হয় দোকান-গোডাইনে পণ্য ভিজে যাওয়ার পর তা আবার শুকানো নিয়ে। ব্যবসায়ীরা জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানি থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন সময় দোকান-গুদামের প্রবেশমুখ উঁচু করেন। কিন্তু প্রতি বছরই বাড়ছে জোয়ারের পানির উচ্চতা। ফলে প্রবেশপথ উঁচু করেও সুফল মিলছে না। জোয়ার হলেই তলিয়ে যাচ্ছে খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ, মকবুল আহমদ সওদাগর রোড, চাক্তাইয়ে চালপট্টি ও শুঁটকিপট্টিসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল। জোয়ারের সময় প্রতিদিন গড়ে পানি ওঠে ৪.৬৬ মিটার থেকে ৪.৪৮ মিটার উচ্চতায়। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চলের দোকান আড়তগুলো ডুবে যায়। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় বিড়ম্বনা। এ সমস্যা নিরসনে আমরা সরকারি দফতরগুলোকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। আমরা এর সমাধান চাই।’ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘মহানগরে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে চউক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযোগকারী ৩৬টি খাল পরিকল্পিতভাবে পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজ চলছে। তাছাড়া চসিক নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করছে। তবে মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।’   

জানা যায়, ২০১৮ সালে এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে ‘চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকার প্রকল্প চলমান। প্রকল্পের অধীনে চাক্তাই ও রাজখালী খালে জোয়ারের পানি প্রতিরোধে স্লুইচ গেট নির্মাণ কাজ শুরু করে। তবে এখনো কাজ শেষ না হওয়ায় জোয়ারের পানির বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরে বর্তমানে মোট ৫৭টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব খালের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২২টি খাল কর্ণফুলী নদীতে ও ২টি খাল হালদা নদীতে, ১৪টি খাল বঙ্গোপসাগরে পড়েছে এবং অবশিষ্ট ১৯টি আন্তসংযোগ খালের সঙ্গে মিশছে।

সর্বশেষ খবর