মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

তবু চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

তবু চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে গত ৫ অক্টোবর থেকে। দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস সম্প্রতি এসব যান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। তবে শিথিল অভিযানের ফলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ইজিবাইকও চলছে অবাধে। অবৈধ যান দাবড়ে বেড়াচ্ছে পুরো শহর। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, নগরীর বিভিন্ন স্থানে যান্ত্রিক রিকশা ও যানবাহনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। অবৈধ যানবাহন ধরে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হচ্ছে।

এই অভিযানের মধ্যেও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ইজিবাইক চলছে অবাধে। অধিকাংশ ব্যাটারিচালিত যানের মালিকরা প্রভাবশালী। কয়েক দিন ধরেই ঢাকায় অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যানের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এমনকি কোনো কোনো এলাকায় এসব অবৈধ যান আটকের ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও থেমে নেই এই অবৈধ বাহনটির চলাচল। কোনো কোনো এলাকায় এখন আর পায়ে চালিত রিকশা বা ভ্যান দেখাই যায় না। শুধুই অটোরিকশা। ফকিরেরপুল কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, মানুষ আগে রাতে রাস্তায় ট্রাক দেখলে ভয় পেত, এখন রাতে ব্যাটারিচালিত ভ্যান দেখলে ভয় পায়। রাতে শত শত ভ্যান মালামাল নেওয়ার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে। বেশির ভাগই ব্যাটারিচালিত। এগুলো এতটাই বেপরোয়া যে, প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাজধানীর খিলগাঁও, মান্ডা, নন্দিপাড়া, রামপুরা, ইসলামবাগ, ধানমন্ডি, কামরাঙ্গীরচর, সোয়ারিঘাট, বাবুবাজার, দিয়াবাড়ি, তুরাগ, দক্ষিণখান, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, হাজারীবাগ, রায়েরবাগ, মানিকনগর, বাসাবো, মুগদা, উত্তরখান, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুরসহ প্রায় সব এলাকায়ই অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক। এসব বাইকে চার্জ দেওয়ার জন্য রাজধানীতে অন্তত ২০ হাজার গ্যারেজ রয়েছে। মানিকনগরের এক গ্যারেজ মালিক বলেন, তার গ্যারেজে মোট ৬০টি রিকশা-ভ্যান থাকে। এর মধ্যে ২৮টি হচ্ছে ব্যাটারিচালিত। এই ২৮টি মধ্যে বেশির ভাগেরই মালিক স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পুলিশের কয়েকজন সদস্য। কয়েকটি গাড়ি আছে যার মালিক রিকশাওয়ালা। ওই প্রভাবশালী ও পুলিশ সদস্যদের গাড়িগুলো এখনো রাস্তায় বের হয়। রিকশাওয়ালাদের গাড়ি গত অভিযান শুরুর পর থেকে আর মূল রাস্তায় বের না হয়ে অলিগলিতেই চলে।

জানা যায়, অভিযান পরিচালনা করার জন্য ইতিমধ্যেই দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে যান্ত্রিক রিকশা ও যানবাহনের বিরুদ্ধে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর হতে ডিএসসিসি রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, টালিগাড়ি ও ঘোড়ার গাড়ির নিবন্ধন-নবায়ন আবেদনের কার্যক্রম শুরু করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ডিএসসিসি এলাকার সড়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি সেদিন ব্যাটারিচালিত রিকশা বা যানবাহন সড়কে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।

সর্বশেষ খবর