মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সেবা সংস্থার সমন্বয়হীনতায় জনভোগান্তি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

সেবা সংস্থার সমন্বয়হীনতায় জনভোগান্তি

চট্টগ্রাম নগরের গনি বেকারির মোড় থেকে জামাল খান পর্যন্ত সড়কটি কেটে পাইপলাইন স্থাপন করে ওয়াসা। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সড়ক বন্ধ করে পাইপ স্থাপন করা হয়। পরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সড়কটি মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই একই সড়ক আবারও কাটা হয়েছে। গত সপ্তাহে সড়কটি আবারও কেটে ওয়াসার পাইপ মেরামত করছে। ফলে তৈরি হয়েছে যানজট, দুর্ভোগে পড়ছে পথচারীরা। 

নগরবাসীর অভিযোগ, নগর উন্নয়নে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে সেবা সংস্থাগুলোর চরম সমন্বয়হীনতার কারণে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। এর সরাসরি খেসারত দিতে হয় নগরবাসীকে। কোন সংস্থা কখন কোন সড়ক কাটে তার কোনো পরিকল্পনা থাকে না। ফলে সারা বছরই চলে সড়ক কাটাকাটি, সড়ক মেরামত-সংস্কার। বছরজুড়েই নগরবাসীকে পোহাতে হয় কষ্ট-দুর্ভোগে। ফলে উন্নয়ন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলে না নাগরিকদের। কর্তৃপক্ষের ‘অপরিকল্পিত’ আচরণ এবং প্রকৃতির রোদ-বৃষ্টি দুটোতেই অন্তহীন ভোগান্তি। এ কারণে বিরামহীন দুর্ভোগে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের। আসকারদীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘একটি প্রকল্প গ্রহণ করার অন্তত ছয় থেকে ১২ মাস পর তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। অথচ এই সময়ের মধ্যে সেবা সংস্থাগুলো পরস্পরের মধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ বাস্তবায়ন করতে পারে। তেমনটি করে না বলেই হয়তো এক সংস্থা সড়ক মেরামত করে, আর এক সংস্থা তা কাটে। তাই সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই।’     

চসিকের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘সেবা সংস্থাগুলোকে সড়ক কাটার আগে চসিককে জানাতে হবে। কিন্তু মনে হয় পরিকল্পিতভাবে সড়ক কাটা হয় না। ফলে নগরবাসীকে কষ্ট পেতে হয়। এ ব্যাপারে পরিকল্পিতভাবে সড়ক কাটতে সেবা সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে। আমরাও চাই, পরিকল্পনা মতে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করতে। যাতে মানুষের কষ্ট কম হয়।’ জানা যায়, নগরের প্রধান উন্নয়ন সংস্থা চসিক। তবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক), চট্টগ্রাম ওয়াসা, বিটিসিএল, বিদ্যুৎ বিভাগ ও টিএন্ডটিসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থা সড়ক কেটে উন্নয়ন কাজ করে থাকে। কিন্তু এসব সেবা সংস্থার কাজগুলো পরিকল্পনা মতে করা হয় না। চসিক সড়ক মেরামত করার পর সেবা সংস্থা সড়ক কাটে। আর এই অপিরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির খেসারত দিতে হয় নগরবাসীকে। অন্যদিকে নগরের উন্নয়নে প্রধান সংস্থা চসিক সেবা সংস্থাগুলোকে পরিকল্পিতভাবে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করতে বার বার বলে আসছে। একাধিকবার চিঠি দেওয়া ও সভা করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসেও একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেবা সংস্থাগুলোকে চসিকের সঙ্গে সমন্বয় করে নগরের উন্নয়ন কাজ করতে বলা হয়। কিন্তু এসব সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় না বলে নগরবাসীর অভিযোগ।

সর্বশেষ খবর