মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

৪৪ বছরেও বিমান নামেনি ঢুলিপাড়ায়

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

৪৪ বছরেও বিমান নামেনি ঢুলিপাড়ায়

দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে, সে লক্ষ্যেই কুমিল্লা নগরীতে বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ৪৪ বছরেও কুমিল্লা বিমানবন্দরে নামেনি কোনো বিমান। বিমানবন্দরের রানওয়ে রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। মাত্র ৩০ কোটি টাকার সংস্কারে বিমানবন্দরটি সচল হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি চালু হলে বিমানবন্দর সংলগ্ন কুমিল্লা ইপিজেডে আরও অনেক বিদেশি বিনিয়োগে আসত, কর্মসংস্থান হতো বিপুলসংখ্যক মানুষের। 

সূত্র জানায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নগরীর দক্ষিণ পাশে নেউরা-ঢুলিপাড়ার পাশে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বিমানবন্দর। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানবন্দরটি সচল ছিল। পরে অজ্ঞাত কারণে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সব সরঞ্জাম থাকার পরও কুমিল্লা বিমানবন্দরটিতে ৪৪ বছর ধরে বিমান চলাচল বন্ধ। ৭৭ একর ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত বিমানবন্দরটিতে এখন আন্তর্জাতিক রুটের সিগনালিংয়ের কাজ করা হয়। প্রতিদিনই ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান এখানকার সিগন্যাল ব্যবহার করে। বেশি চলাচল করে ভারতের অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান। আগরতলা বিমানবন্দরে যাওয়া বিমান এই রুটে চলে। এ ছাড়া রয়েছে ব্যাংকক, সিঙ্গাপুরের বিমান। এ বিমানবন্দর প্রতি মাসে এখন সিগনালিং বাবদ আয় করছে ৩০-৪০ লাখ টাকা।

সূত্র আরও জানায়, বিমানবন্দরটি চালু করতে বেশি অর্থের প্রয়োজন নেই। বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে। জমি কেনা বা অধিগ্রহণের ঝামেলা নেই। প্রয়োজন রানওয়ে কার্পেটিং, ফায়ার সার্ভিস ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের জনবল।

কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, বিমানবন্দর সংলগ্ন ইপিজেডে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে বিমান চলাচল এখন সময়ের দাবি। এ ছাড়া বাংলাদেশের মধ্যে কুমিল্লার সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রবাসে অবস্থান করছে। তাদের অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচলে চাহিদা রয়েছে। সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে কুমিল্লার বিমানবন্দর চালু করা প্রয়োজন। এটি চালু হলে মুমূর্ষু রোগীরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে জরুরি সেবা পেত। কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল বলেন, ঢাকারও আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হয়। মাঝে বিমানবন্দরটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক পিছিয়ে গেছে কুমিল্লাবাসী। কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আবদুল গণি বলেন, বিমানবন্দরের সব যন্ত্রপাতি রয়েছে। শুধু প্রয়োজন রানওয়ের সংস্কার। রানওয়ে সংস্কারে সাত থেকে আট কোটি টাকা লাগতে পারে। ৩০-৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করা যেতে পারে।

 

সর্বশেষ খবর