শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

যানজটমুক্ত নগরে স্বস্তিতে নগরবাসী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

যানজটমুক্ত নগরে স্বস্তিতে নগরবাসী

সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার পয়েন্ট। ব্যস্ততম এই চৌরাস্তার মোড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। মোড়ের চারপাশের রাস্তায় আটকে আছে শত শত যানবাহন। গাড়ি বা রিকশা ছেড়ে পায়ে হাঁটারও উপায় নেই। রাস্তার উভয় পাশ ও ফুটপাথ দখলে নিয়ে পসরা সাজিয়ে আছেন হকাররা।

জিন্দাবাজার ছাড়াও নগরীর ব্যস্ততম কোর্টপয়েন্ট ও আম্বরখানা এলাকায়ও এমন দৃশ্য ছিল নিত্যদিনের। কিন্তু হঠাৎ করে বদলে যেতে শুরু করেছে নগরীর চিরচেনা এই দৃশ্য। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও মহানগর পুলিশের সময়োপযোগী কিছু সিদ্ধান্তে বদলাতে শুরু করেছে নগরীর দুর্ভোগের চিত্র। কমছে যানজট, দখলমুক্ত হয়েছে রাস্তা ও ফুটপাথ। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমায় নগরবাসীর মাঝেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

সিলেট নগরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়ক বন্দরবাজার (কোর্টপয়েন্ট)-জিন্দাবাজার- চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়ক। প্রতিদিন দুপুর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত এই সড়কে যানজট লেগেই থাকত। সিটি করপোরেশন ও পুলিশ যানজটমুক্ত নগরী গড়তে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়। প্রথম দফায় তারা বন্দরবাজার- চৌহাট্টা সড়কটিকে রিকশা ও হকারমুক্ত করে। এর অংশ হিসেবে প্রতিদিন ওই সড়কের পাশে ও ফুটপাথে বসা প্রায় এক হাজার হকারকে সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন লালদীঘিরপাড় মাঠে পুনর্বাসিত করা হয়। গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে লটারির মাধ্যমে হকারদের বসার জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে হকারদেরও দীর্ঘদিনের পুনর্বাসনের দাবি বাস্তবায়ন হয়। এরপরই  কোর্টপয়েন্ট-চৌহাট্টা সড়কে লেগুনা এবং রিকশাসহ সব ধরনের অযান্ত্রিক পরিবহন চলাচল বন্ধ করা হয়। ৩ জানুয়ারি থেকে বারুতখানা-জিন্দাবাজার-জল্লারপাড় সড়কেও বন্ধ করে দেওয়া হয় রিকশাসহ সব ধরনের অযান্ত্রিক যান চলাচল। এর সুফলও পান নগরবাসী। ব্যস্ততম এই সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করায় শুরুতে নগরবাসী কিছুটা ভোগান্তিতে পড়লেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা মানিয়ে নেন তারা। রিকশা চলাচল বন্ধ ও হকার উচ্ছেদ করায় এখন কোর্টপয়েন্ট-জিন্দাবাজার- চৌহাট্টা সড়ক যানজটমুক্ত।

এছাড়া যানজট নিরসনে আম্বরখানা-চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার-কোর্টপয়েন্ট সড়কটি প্রশস্ত করার কাজ চলছে। চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার-কোর্টপয়েন্ট সড়কের উভয় পাশের প্রশস্তকরণের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। আম্বরখানা- চৌহাট্টা সড়কের কিছু অংশে এখনো কাজ চলছে। এই সুযোগ নিয়ে যাতে সড়কের কোথাও অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা ও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড গড়ে ওঠতে না পারে সে ব্যাপারেও নিয়মিত নজরদারি রেখেছে সিসিক ও মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।  চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার- কোর্টপয়েন্ট সড়কের উভয়পাশের মার্কেটগুলোর সামনে যাতে কেউ অবৈধ পার্কিং করতে না পারে, সে জন্য নিয়মিত অভিযানও চলছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার ফয়সল মাহমুদ বলেন, ‘হকারদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ফুটপাথ ও রাস্তা থেকে নির্ধারিত স্থানে পুনর্বাসনের। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লালদীঘিরপাড়ে তাদের পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এখন কেউ ফুটপাথে বসলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তার পাশে যারাই পার্কিং করবেন তাদের বিরুদ্ধেও ট্রাফিক সদস্যরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

সর্বশেষ খবর